
ছবি: জনকণ্ঠ
ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে ফটিকছড়ি উপজেলার হালদা নদীর পুরনো বেড়িবাঁধের অন্তত ১৭টি স্থানে ফাটল ধরেছে। এর মধ্যে চারটি স্থানে ভাঙনের শঙ্কায় দৌলতপুর, সুন্দরপুর, সমিতিরহাট, হারুয়ালছড়ি ও সুয়াবিল ইউনিয়নের ছয়টি গ্রামের বসতঘর, মাছের ঘের ও ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে এসব ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের অন্তত ৫০ হাজার মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বেশ কিছু বাঁধ রক্ষা প্রকল্প হাতে নিলেও কাজ এখনো শেষ হয়নি। ফলে হালদা তীরের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ কাটছে না। পাউবো সূত্রে জানা গেছে, বন্যানিয়ন্ত্রণ, সেচ ও পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে ২.৯৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সংস্কার, ধুরুং খালের ৫ কিলোমিটার খনন ও স্লুইস গেট নির্মাণের কাজ আগেই শেষ হয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে নতুন একটি প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দৌলতপুর, মন্দাকিনী, পূর্ব সুয়াবিল, ছাদেকনগর, পূর্ব ধলই, সমিতিরহাট, আরবানিয়া, হারুয়ালছড়ি, সুন্দরপুর ও আজিমপুরসহ হালদা তীরবর্তী ১০টি গ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষ চরম ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পুরনো বেড়িবাঁধে ভাঙনের ফলে দৌলতপুর, সুয়াবিল, হারুয়ালছড়ি ও সুন্দরপুরের অনেক বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়েছে। কারও বাড়ির কাঁচা দেয়াল দেবে গেছে। বেড়িবাঁধের ওপর গ্রামীণ মেঠোপথ অনেক স্থানে ভেঙে গেছে। সড়কের পাশে লাগানো গাছপালা গোড়াসহ উপড়ে পড়েছে।
সমিতিরহাট গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রহমান বলেন, “বিভিন্ন অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে একটি ঘর করেছি। চোখের সামনেই বেড়িবাঁধ ভেঙে প্রবল পানির স্রোতে ঘরটি ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিন ছেলেমেয়ে নিয়ে কোথায় গিয়ে দাঁড়াব জানি না।”
পাউবো ফটিকছড়ি শাখার কর্মকর্তারা বলেন, “বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে হালদার দুই তীরে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ জরুরি।”
এদিকে ২/১ বছর আগে ভাঙনরোধে ২২ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও বাস্তবায়ন হয়নি বললেই চলে। ইতিমধ্যে বিএনপির উত্তর জেলা আহ্বায়ক সরোয়ার আলমগীর হালদা ভাঙন এলাকা পরিদর্শন শেষে হতবাক হয়ে বলেন, “এই খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ নয়-ছয় করে লোপাট করা হয়েছে।”
মুমু ২