ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যমুনা নদীর তীর থেকে ১১টি মর্টার শেল উদ্ধার

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভূঞাপুর, টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১০:১৯, ১২ জুন ২০২৫

যমুনা নদীর তীর থেকে ১১টি মর্টার শেল উদ্ধার

ছবি: জনকণ্ঠ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীর তীর থেকে ১১টি বিস্ফোরিত মর্টার শেল উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মর্টার শেলগুলো ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের সামরিক অস্ত্র।

বুধবার (১১ জুন) সন্ধ্যায় উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের পাটিতাপাড়ার যমুনা নদীর পাড় থেকে পরিত্যক্ত এই মর্টার শেলগুলো উদ্ধার করা হয়। 

ধারণা করা হচ্ছে— মর্টার শেলগুলো ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের সামরিক অস্ত্র। মরিচা ধরা অবস্থায় মর্টার শেলগুলো একত্রে পড়ে ছিল। কিছু শেলের গায়ে জং ধরে গেছে। আবার কিছু শেলের ভেতরের অংশ ফাঁপা হয়ে আছে।

স্থানীয়রা জানান— শাহাদত নামে এক ব্যক্তি যমুনা নদীর পাড়ে মাছ ধরতে গিয়ে প্রথমে মর্টার শেলগুলো দেখতে পান। হঠাৎ এসব বস্তু দেখতে পেয়ে তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

এরপর আশপাশের লোকজনকে বিষয়টি জানালে মর্টার শেলগুলো এক নজর দেখতে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে ভিড় জমায় এবং পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মর্টারশেল গুলো উদ্ধার করে।

এলাকাবাসীর দাবি—উদ্ধার হওয়া মর্টার শেলগুলো মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের স্মারক। তাদের মতে, ১৯৭১ সালে এই পাটিতাপাড়া ও মাটিকাটা যমুনা নদীর তীরে পাকিস্তানি বাহিনীর একটি যুদ্ধ জাহাজ ধ্বংস করা হয়েছিল। এগুলো সেই জাহাজের ধ্বংসাবশেষ মর্টার শেল।

পাটিতাপাড়া এলাকার রুবেল সরকার, মনির মণ্ডল ও রফিকুল ইসলামসহ আরও অনেকে জানান—তাদের পূর্বপুরুষদের মুখে শুনেছেন এই এলাকায় একটি পাকিস্তানি যুদ্ধ জাহাজ ধ্বংস হয়েছিল। সেই স্মৃতিই আজ যেন আবার ফিরে এসেছে এই মর্টার শেল উদ্ধারের মাধ্যমে।

নিকরাইল ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম জানান—ঘটনাস্থলে এসে আমি মর্টার শেলগুলো নিজ চোখে দেখে তাৎক্ষণিক ভূঞাপুর থানায় খবর দেই। পরে পুলিশ এসে সেগুলো উদ্ধার করেছে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক মামুন তরফদার জানান, ১৯৭১ সালে ১০ আগস্ট পাকিস্তানের প্রায় ২১ কোটি টাকা মূল্যের অস্ত্রবোঝাই দুটি জাহাজ এই এলাকায় ধ্বংস করে মুক্তিযোদ্ধারা। এসব মর্টার শেল ওইসব জাহাজের ধ্বংসাবশেষ এখন পাওয়া যাচ্ছে। 

এ ব্যাপারে ভূঞাপুর থানার অফিস ইনচার্জ (ওসি) একেএম রেজাউল করিম জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে মর্টার শেলগুলো উদ্ধার করে সেনা ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মর্টার শেলগুলো মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ের। এর ভিতরে কোনো বিস্ফোরক নেই।

আবির

×