
ছবি: সংগৃহীত
প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে হাজারো মানুষ ভিড় জমিয়েছে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর পাড়ে। ঈদ উপলক্ষে টানা চার দিন ধরে এখলাছপুর, মোহনপুর, আমিরাবাদ ও ষাটনল পর্যটন এলাকায় নদীর তীরে ছিল দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। এলাকার বাসিন্দারা ‘মিনি কক্সবাজার’ নামেই এই স্থানটিকে ডাকতে শুরু করেছেন।
মেঘনা ধনাগোদা প্রকল্পের আওতায় নদী ভাঙন রোধে নির্মিত ব্লক বসানো হার্ডপয়েন্ট ও গ্রোয়েন এলাকাগুলো এখন রূপ নিয়েছে বিনোদনের অন্যতম আকর্ষণীয় স্পটে। বিশাল জলরাশি, খোলা আকাশ ও সন্ধ্যায় পশ্চিমে সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে ছুটে আসছেন আশেপাশের উপজেলা ও জেলার মানুষ।
ঈদের দিন শনিবার বিকেলে থেকেই বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল মেঘনার পাড়। কেউ পরিবার-পরিজন নিয়ে পিকনিকে মেতেছেন, কেউবা ট্রলার ভাড়া করে নদী ভ্রমণে বেরিয়েছেন। স্থানীয় মাঝিরা অর্ধশতাধিক ইঞ্জিনচালিত ট্রলার ও নৌকা নিয়ে প্রস্তুত ছিলেন দর্শনার্থীদের ঘুরিয়ে আনতে। অনেকে মেঘনা-পদ্মা পাড়ের পার্শ্ববর্তী চরগুলোতেও ঘুরে এসেছেন।
নদীর পাড়ে অস্থায়ীভাবে বসেছে ঝালমুড়ি, চটপটি, ফুচকা ও আইসক্রিমসহ নানা খাবারের দোকান। দোকানিদের মুখেও ছিল বিক্রির খুশির ঝিলিক। কেউ কেউ ট্রলারে সাউন্ড সিস্টেম বসিয়ে গানের সঙ্গে নাচ-আড্ডায় মাতিয়েছেন পুরো পরিবেশ।
দর্শনার্থী শাহ আলম, কাইয়ুম, শান্ত বলেন, এখানে নদীর প্রাকৃতিক দৃশ্য, থইথই পানির সৌন্দর্য আর সন্ধ্যার সূর্যাস্তের দৃশ্য সত্যিই মন ছুঁয়ে যায়। পরিবারের ছোটদের নিয়ে এসেছি। খুবই ভালো লেগেছে। তবে নিরাপত্তার জন্য আরও পুলিশ মোতায়েন দরকার। জায়গাটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখলে দর্শনার্থীর সংখ্যা আরও বাড়বে।
এখানকার পরিবেশ ভালো রাখতে নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ মোতায়েন প্রয়োজন বলেও জানান তারা। আবার জায়গাটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা প্রয়োজন। তাহলে দিন দিন ভ্রমণপিপাসু দর্শনার্থীর সংখ্যা আরও বাড়বে।
অনেক দর্শনার্থী রবিন মিয়া জানিয়েছেন, সন্ধ্যার পরও মেঘনা পাড়ে বসে মুক্ত বাতাস উপভোগ করেন তারা। এসময় হার্ডপয়েন্ট ও গ্রোয়েন এলাকায় সোলার বাতি স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন তারা, যাতে রাতে আরও নিরাপদ ও সুন্দর পরিবেশ তৈরি হয়।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এলাকাটিকে আরও পরিকল্পিতভাবে বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে ‘মিনি কক্সবাজার’ হিসেবে এই এলাকা পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।
শিহাব