
ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ
কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলায় ব্রক্ষপুত্র নদের পানি কমে যাওয়ায় তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙ্গনের এত তীব্রতা যে ঘরের জিনিস পত্র আটকাতে পারছে না। ব্রক্ষপুত্র নদের তীব্র স্রোতে ঘর-বাড়ি আবাদি জমি স্কুল মসজিদ মুহূর্তে ভেঙ্গে যাচ্ছে। তারপরও কিছু জিনিস নদীতে ভেসে গেছে রক্ষা করতে পারছে না। এলাকাবাসী দাবি করে দ্রুত যেন সরকার ভাঙন রোধ করার ব্যবস্থা নেয়। আর তা না হলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে চিলমারীর কড়াই বরিশাল ও শাখাহাতি গ্রাম। এই দুটি চরে সময় যতই পার হচ্ছে ততই ভাঙ্গনের তীব্রতা বাড়ছে।
শনিবার ঈদপার হলো। কোন মানুষ কোরবানি দিতে পারেনি। ঈদের দিনও ভাঙ্গনের তীব্রতায় তারা তাদের ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিতে ব্যস্ত সময় পার করেছে। খোলা মাঠে ঈদের নামাজ পড়েছিল সবাই। সারাদিন মিলে এক বেলা খেয়েছে। কোন মাংস দুই গ্রামের কোন মানুষের মুখে উঠেনি। চরম কষ্টে এক অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছে। তাদের সাথে তাদের গবাদি পশু গুলিও খাদ্য সংকটে পড়েছে। আগামীতে কিভাবে চলবে কি খাবে জানে না। আগামীকাল কি খাবে সেটাও এখনও জানে না। আশেপাশের উঁচু স্থানে অথবা স্কুল,মাদ্রাসায় আশ্রয় নিচ্ছে । সেখানেই গ্রামের কয়েকশত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।
চিলমারী উপজেলার ব্রক্ষপুত্র নদের অববাহিকার শাখাহাতি ও কড়াইবরিশাল দ্বীপচর ব্রক্ষপুত্র নদের তীব্র ভাঙন আর মানুষের আহাজারি কান্না । দুটি চরে গত ১৫ দিনে কয়েকশত বিঘা জমি,স্কুল মাদ্রাসা,কমিউনিটি ক্লিনিক,শতশত ঘরবাড়ি,সাবমেরিন কেবলের বিদ্যুতের খুঁটি নদী ভাঙ্গনের কারণে বিলীন হয়ে গেছে। চরম কষ্টে পড়েছে দুই চর গ্রামের দুইশতাধিক মানুষ।
শাখাহাতি ও কড়াইবরিশাল গ্রামের ভাঙন কবলিত মানুষরা জানান যেভাবে এবার ব্রক্ষপুত্র নদ ভাঙ্গছে গত ২০ বছরেও এমন ভাঙ্গেনি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দফায় দফায় জানালেও তারা কোনো গুরুত্ব দেয়নি। এভাবে ভাঙ্গলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে হারিয়ে যাবে দুটি গ্রাম। নদীর ভাঙ্গনে গ্রামের সবাই নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি তাদের খাবারের কোন টাকা নেই । তারা ধার দেনা ও সুদের উপর টাকা নিয়ে চলছে। তারা আরও জানান আমাদের দুই গ্রামের মানুষ যেন জীবন্ত কঙ্কাল। খেতে না পেরে বুক পিঠ এক হয়ে গেছে। সবচেয়ে কষ্টে পড়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। চিলমারীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ৫০ জন গ্রামবাসীকে একটি প্যাকেজ ঈদ উপহার দিয়েছিল। তাও দুদিনে শেষ হয়ে গেছে। কোন কাজ নেই তাদের এলাকায়।
চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান ব্রক্ষপুত্র নদের চর কড়াই বরিশাল ও শাখাহাতি গ্রাম গত কয়েক মাস ধরে ভাঙ্গলেও এখন তীব্র আকার ধারণ করেছে। কয়েক দফা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানালেও কোন লাভ হয়নি। তিনি দাবি করেন সরকার ভাঙন রোধে যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবুজ কুমার বসাক জানান ঐ দুটি চরে ব্রক্ষপুত্র নদের ভাঙ্গনে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। ভাঙন রোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
ফারুক