টানা বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে এয়ারপোর্টগামী যাত্রীসাধারণ
টানা বৃষ্টির প্রভাবে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ডেমরা-কালীগঞ্জ সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এয়ারপোর্টগামী যাত্রীসাধারণ থেকে শুরু করে পথচারী ও স্থানীয়রা। প্রভাব পড়েছে কোররবানির পশুর হাটে। এছাড়াও পানি আটকে পূর্বাচলের হাবিবনগরের প্রায় শতাাধিক ঘরবাড়িতে কৃত্রিম বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ দিকে এক বিএনপি নেতার উদ্যোগে সড়কটি চলাচল অব্যাহত রাখতে কাজ করছেন। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার হাবিবনগর এলাকায় গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর ডেমরা থেকে গাজীপুরের কালীগঞ্জ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া, রূপগঞ্জ সদর, দাউদপুর ইউনিয়ন এলাকা দিয়ে এলজিইডির নির্মাণাধীন সড়ক রয়েছে। যাতে ৮৫ কোটি টাকার কাজ চলমান। কিন্তু সড়কটির বেশ কিছু স্থানে কাজ বাকি রেখে ঠিকাদারের নিয়োজিত লোক লাপাত্তা হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, ঈদের ছুটির নামে শ্রমিকরাও মালামাল রেখে চলে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন হাবিবনগর থেকে পূর্বাচল সংযোগ সেতু এলাকার লোকজন।
খালের উপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ করতে গিয়ে পানি আটকে দেওয়ায় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে হাবিবনগর ও ব্রাহ্মণখালী এলাকায়। এতে তলিয়ে গেছে শত শত ঘরবাড়ি। এ দিকে কৃত্রিম বন্যার পানি থেকে রেহাই পেতে স্থানীয়রা খালের বাঁধ ভেঙে দিলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে সড়কটি। এছাড়াও ফজুরবাড়ির মোড় থেকে রূপগঞ্জ থানা পর্যন্ত সড়কের বেহালদশায় পরিণত হয়েছে। বড় বড় গর্ত ও ভাঙ্গা জায়গায় পড়ে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন উল্টে যাচ্ছে। এতে আশেপাশের জেলা ও উপজেলাসহ স্থানীয় গ্রামবাসীর চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
বিদেশগামী যাত্রীরা অভিযোগ করে জানান, সিলেট, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে বিদেশগামী যাত্রীসাধারণ গাড়িযোগে এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস সড়ক ও কুড়িল বিশ^রোড হয়ে এয়ারপোর্ট যাতায়াত করে থাকেন। এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস সড়ক নির্মাণ কাজ চলায় নিত্যদিনের যানজট থাকে। আর এ যানজট থেকে বাঁচতে বিদেশগামী যাত্রীরা গাড়িযোগে ডেমরা-কালিগঞ্জ সড়কটি ব্যবহার করে থাকে। গত তিন দিন ধরে সড়কটি বিচ্ছিন্ন থাকায় বিদেশগামী যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। অন্য সড়ক ব্যবহার করে চলতে গিয়ে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা গুনতে হচ্ছে। অনেকে বিমানের ফ্লাইট মিস করছেন। এ দিকে, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাছির উদ্দিন বাচ্চুর উদ্যোগে সড়কটি চলাচল অব্যাহত রাখতে কাজ করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাছির উদ্দিন বাচ্চু বলেন, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছি আমরা। বহু ঘরবাড়িতে পানি। ঠিকাদার এবং উপজেলা প্রশাসনকে বারবার বলার পরেও এটির ব্যবস্থা করছেন না। তাই আমি নিজ উদ্যোগে সড়ক চলাচল রাখতে অস্থায়ী মেরামত করে দিচ্ছি। কুয়েত প্রবাসী হেলাল উদ্দিন বলেন, সময়মতো এয়ারপোর্ট পৌঁছুতে না পেরে তিনি বিমানের ফ্লাইট মিস করেছেন। এখন ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে ফিরতি টিকিট ক্রয় করতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তফা মিয়া বলেন, এলজিইডি প্রকৌশলী ও ঠিকাদার কারোরই যেন দায় নেই। তারা আমাদের ভোগান্তিতে রেখে চলে গেছে। ঠিকাদারের নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা মোশাররফ মিয়া বলেন, ঈদের ছুটির জন্য শ্রমিকরা চলে যাওয়াতে সমস্যা হয়েছে। ঈদের পর সমস্যা থাকবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী শফিউল আলম শ্যামল বলেন, যত দ্রুত সম্ভব, এ সড়কটির কাজ শেষ হবে। ঠিকাদারকে আমরা তাগাদা দিচ্ছি। তবে যেহেতু এখানে নতুন সেতু হবে সেহেতু সাময়িক ভোগান্তি হবেই।
