ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গৌরনদী-খুলনা রুটে পরিবহন চলাচল

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল

প্রকাশিত: ১৭:২৫, ৫ জুন ২০২৫

বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গৌরনদী-খুলনা রুটে পরিবহন চলাচল

বরিশাল-গৌরনদী ভায়া পয়সারহাট থেকে খুলনা রুটের পরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে বরিশাল বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে।

এতে করে ওই রুট দিয়ে প্রতিদিন চলাচলকারী হাজার হাজার যাত্রীর চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে কোরবানি উপলক্ষে ওই রুটে প্রতিনিয়ত চলাচলরত যাত্রীদের এখন সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

চাঁদা আদায়ের ভিন্ন কৌশল হিসেবে রুটটি বন্ধ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা।

গৌরনদী-খুলনা রুটে চলাচলকারী পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সূত্রে জানা গেছে, গৌরনদী-গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক চালু হওয়ার পর থেকে রুটটি ব্যবহার করে বরিশাল, পটুয়াখালী ও ভোলার যাত্রীরা কম সময়ের মধ্যে গোপালগঞ্জ, খুলনা, বাগেরহাট, নড়াইল ও যশোরে যাতায়াত করে আসছেন।

ওই রুটে বিআরটিসি, চাকলাদার, সেভেন ডিলাক্স, সেভেন স্টারসহ ১২টি পরিবহন প্রতিনিয়ত যাত্রীসেবা দিয়ে আসছিল। এরই মধ্যে গত এক মাস ধরে সড়কটি দিয়ে কোনো পরিবহন চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না।

আজ বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুরে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক পরিবহনের সুপারভাইজার ও চালক অভিযোগ করে বলেন, গৌরনদী ভায়া গোপালগঞ্জ সড়ক দিয়ে খুলনা, বাগেরহাট, নড়াইল ও যশোরগামী যাত্রীরা স্বল্প সময়ে নিরাপদভাবে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারতেন।

গত এক মাস ধরে গৌরনদী ভায়া গোপালগঞ্জ সড়ক বন্ধ করে দিয়েছেন বরিশাল বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ। যে কারণে কোনো পরিবহন ওই রুট ব্যবহার করে আগের মতো যেতে পারছে না। ফলে তাদের টেকেরহাট হয়ে খুলনা, বাগেরহাট, নড়াইল ও যশোর যেতে হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন আগের চেয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায় করা হয়, তেমনি যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অপরদিকে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে দুই ঘণ্টারও অধিক সময় বেশি লাগছে।

একাধিক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, মালিক সমিতির খামখেয়ালিপনা ও হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হলেও বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই। মালিক সমিতির দায়িত্বজ্ঞানহীন এমন কর্মকাণ্ডে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এ রুটে চলাচলকারী অসংখ্য যাত্রী।

একাধিক পরিবহনের মালিক অভিযোগ করে বলেন, বিগত ২০০৯ সাল থেকে বরিশাল থেকে ভায়া গৌরনদী-গোপালগঞ্জ সড়ক ব্যবহার করে তারা অল্প ভাড়ায় কম সময়ে যাত্রীদের নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছেন।

তারা আরও বলেন, এতদিন কোনো সমস্যা না হলেও গত এক মাস ধরে ওই রুটে সকল পরিবহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ। এতে একদিকে যেমন যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েছে, অপরদিকে সময় ও তেলের অপচয় বেশি হচ্ছে।

এ নিয়ে একাধিকবার মালিক সমিতির সাথে দেনদরবার করেও কোনো সুরাহা হয়নি। পরিবহন চলাচলের জন্য কোনো চাঁদা চাওয়া হচ্ছে কি না জানতে চাইলে পরিবহন মালিকরা বলেন, পরিস্থিতি এমন পর্যায়েই রয়েছে।

এ বিষয়ে বরিশাল বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন বলেন, লোকাল যাত্রী পরিবহন করার দায়ে রুটটি বন্ধ করা হয়েছে। রুট বন্ধের ক্ষমতা বাস মালিক সমিতির রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি তাদের মালিক সমিতির অফিসে চায়ের দাওয়ায় দিয়েছেন।

এ বিষয়ে বরিশাল বিআরটিএ’র বিভাগীয় পরিচালক জিয়াউর রহমান বলেন, রুট বন্ধ করার ক্ষমতা বাস মালিক সমিতির নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

সার্বিক বিষয়ে বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ ব্যাপারে কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সানজানা

আরো পড়ুন  

×