ছবি: সংগৃহীত
প্রতিবারের মতো এবারও ৯ জিলহজ, বৃহস্পতিবার, পবিত্র হজের মূল দিনে ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে দেওয়া হয়েছে হজের খুতবা। লাখো মুসলমান ‘উকুফে আরাফা’ পালনের জন্য সমবেত হন পবিত্র ময়দানে।
মসজিদে নামিরাহ থেকে খুতবা প্রদান করেন কাবা শরিফের খতিব ও সৌদি আরবের শীর্ষ আলেম শায়খ ড. সালেহ বিন আব্দুল্লাহ আল হুমাইদ। খুতবায় তিনি তুলে ধরেন ইসলামি জীবনবোধ, আল্লাহর আনুগত্য, পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর জন্য দিকনির্দেশনা।
✨ খুতবার মূল বার্তাসমূহ:
🔹 আল্লাহর আনুগত্য ও ক্ষমা প্রার্থনা:
শায়খ সালেহ বলেন, “আমাদের পরিপূর্ণ মুমিন হতে হলে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য করতে হবে এবং নিজ গুনাহর জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। যারা আন্তরিকভাবে তওবা করে, আল্লাহ তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন চিরস্থায়ী জান্নাত।”
তিনি নবীজির (সা.) বর্ণিত ইসলামের মূল স্তম্ভসমূহ স্মরণ করিয়ে দেন—তাওহিদের সাক্ষ্য, নামাজ, রোজা, জাকাত ও সামর্থ্য অনুযায়ী হজ পালন।
🔹 তাকওয়া ও ইবাদতের প্রতি গুরুত্ব:
“আল্লাহ চান, মানুষ যেন তাকওয়ার গুণে গুণান্বিত হয়,”—বলেন শায়খ। তিনি বলেন, “আমাদের সব ইবাদত একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই হতে হবে।”
🔹 ভ্রাতৃত্ব ও আত্মীয়তার বন্ধন:
খুতবায় মুসলিম সমাজে পারস্পরিক সম্পর্ক দৃঢ় করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, “তোমরা একে অপরের সঙ্গে ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখো, আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করো এবং আল্লাহর ইবাদত করো।”
🔹 আরাফার দিনের ফজিলত:
তিনি বলেন, “এই দিনটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ। আল্লাহ এই দিনে বহু মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। লাখো মুসলিম আজ তাঁর রহমতের প্রত্যাশায় আরাফার ময়দানে দাঁড়িয়ে।”
🔹 ফিলিস্তিনের জন্য প্রার্থনা:
বিশ্ব মুসলিমদের হৃদয়ের গভীর আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে খুতবায় তিনি দোয়া করেন, “হে আল্লাহ, ফিলিস্তিনের মুসলমানদের হেফাজত করুন, তাঁদের ওপর রহমত বর্ষণ করুন এবং তাঁদের শত্রুদের বিরুদ্ধে সাহায্য করুন।”
🌐 বিশ্বব্যাপী অনুবাদ ও সম্প্রচার:
এই গুরুত্বপূর্ণ খুতবাটি মুসলিম উম্মাহর কাছে পৌঁছে দিতে সৌদি সরকার প্রায় ৩৫টি ভাষায়, যার মধ্যে রয়েছে বাংলা, ইংরেজি, চাইনিজ, রুশ, তুর্কি, রোহিঙ্গা, ফরাসি, তামিল ও পশতুসহ নানা ভাষায় অনুবাদ করে সম্প্রচার করেছে।
এই খুতবা শুধু হাজিদের জন্য নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের মুসলিমদের জন্য এক অনন্য শিক্ষা ও মানবতার বার্তা বহন করে।
আঁখি
