ছবি: সংগৃহীত
ডিজিটাল যুগে গান শোনার এবং তৈরির পদ্ধতিতেও এসেছে বড় পরিবর্তন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) উদ্ভাবনী ক্ষমতা এখন সঙ্গীতপ্রেমী ও নির্মাতাদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। সম্প্রতি, এআই ভোকাল রিমুভার টুলের জনপ্রিয়তা বিশ্বব্যাপী উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের যেকোনো গান থেকে কণ্ঠস্বর আলাদা করতে সাহায্য করে, যা সঙ্গীত সম্পাদনা, কারাওকে ট্র্যাক তৈরি এবং রিমিক্সিংয়ের ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে।
এআই ভোকাল রিমুভার টুল মূলত অত্যাধুনিক অ্যালগরিদম এবং মেশিন লার্নিং টেকনিকের উপর ভিত্তি করে কাজ করে। এই টুলগুলো গানের অডিও ফাইল বিশ্লেষণ করে কণ্ঠ এবং বাদ্যযন্ত্রের অংশকে আলাদা করতে সক্ষম। পূর্বে এই কাজটি ছিল বেশ জটিল এবং সময়সাপেক্ষ, যেখানে অডিও এডিটিংয়ের জন্য বিশেষ দক্ষতা ও সফটওয়্যারের প্রয়োজন হতো। তবে এআই-এর আগমনের ফলে এখন সাধারণ ব্যবহারকারীরাও খুব সহজে এবং দ্রুত এই কাজটি করতে পারছেন।
এই প্রযুক্তির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। প্রথমত, কারাওকে ট্র্যাক তৈরির ক্ষেত্রে এটি একটি অসাধারণ টুল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ব্যবহারকারীরা এখন তাদের পছন্দের যেকোনো গান থেকে মূল কণ্ঠ সরিয়ে শুধু বাদ্যযন্ত্রের অংশটি ব্যবহার করে গান গাইতে পারছেন। দ্বিতীয়ত, সঙ্গীত নির্মাতারা রিমিক্সিং এবং ম্যাশআপ তৈরির জন্য এই টুল ব্যবহার করে থাকেন। গানের বিভিন্ন অংশ আলাদা করে তারা নতুন সঙ্গীত সৃষ্টি করতে পারছেন। তৃতীয়ত, সঙ্গীত শিক্ষার ক্ষেত্রেও এই টুলটি বেশ উপযোগী। শিক্ষার্থীরা বাদ্যযন্ত্রের অংশ শুনে গান তোলার অনুশীলন করতে পারে।
বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এখন অসংখ্য এআই ভোকাল রিমুভার টুল পাওয়া যাচ্ছে। কিছু বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়, আবার কিছু উন্নত ফিচারের জন্য সাবস্ক্রিপশনের প্রয়োজন হয়। এই টুলগুলোর ব্যবহারকারী ইন্টারফেস সাধারণত খুবই সহজ, যা প্রযুক্তি জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও যে কেউ ব্যবহার করতে পারে।
তবে এই প্রযুক্তির কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। জটিল সঙ্গীত ট্র্যাক থেকে নিখুঁতভাবে কণ্ঠ আলাদা করা এখনো একটি চ্যালেঞ্জ। অনেক সময় কণ্ঠের কিছু প্রতিধ্বনি বা বাদ্যযন্ত্রের কিছু অংশ কণ্ঠের সাথে মিশে যেতে পারে। তবে এআই-এর ক্রমাগত উন্নতির সাথে সাথে এই সমস্যাগুলোও ধীরে ধীরে সমাধান হবে বলে আশা করা যায়।
বাংলাদেশেও এই এআই ভোকাল রিমুভার টুলের ব্যবহার বাড়ছে। অনেক সঙ্গীতশিল্পী, ডিজে এবং সাধারণ সঙ্গীতপ্রেমীরা ব্যক্তিগত ও পেশাগত কাজে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। অদূর ভবিষ্যতে সঙ্গীত সৃষ্টি এবং উপভোগের ক্ষেত্রে এআই আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, এমনটাই আশা করা যায়।
ফারুক
