
ছবি: সংগৃহীত
স্রোতের তোড়ে প্রায় ১৩ কিলোমিটার নদীতে ভেসে এসে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তুলশীগঙ্গা নদীর নবাবগঞ্জঘাট এলাকা থেকে জীবিত উদ্ধার হয়েছেন জয়নাল আবেদীন নামের এক প্রতিবন্ধী যুবক। সোমবার বিকেলে স্থানীয়রা তাঁকে নদীতে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি জয়পুরহাট জেলার পার্শ্ববর্তী ক্ষেতলাল পৌর এলাকার ভাসিলা ফকিরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং মৃত আশরাফ আলীর পুত্র।
জানা গেছে, ব্যাটারিচালিত অটোভ্যান নিয়ে এলাকায় ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করতেন জয়নাল আবেদীন। আগে থেকেই তাঁর কোমর ভাঙা ছিল এবং তিনি মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এই কারণে তাঁর পা সব সময়ই বাঁধা অবস্থায় রাখা হতো। সোমবার সকালে তিনি ভিক্ষা করার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। দুপুরে ক্ষেতলাল উপজেলার তুলশীগঙ্গা নদীর বিলেরঘাট এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ শুরু হয় তাঁর মৃগীর লক্ষণ। অসুস্থ অবস্থায় ব্রীজ থেকে পড়ে যান নদীতে। ভরা নদীর প্রবল স্রোতে ভেসে যেতে যেতে তিনি প্রায় ১৩ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে আক্কেলপুর উপজেলার নবাবগঞ্জঘাট এলাকায় এসে পৌঁছান। বিকেলে নদীর তীরে খেলতে থাকা কয়েকজন যুবক তাঁকে পানিতে ভাসতে দেখে উদ্ধার করেন এবং দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। খবর পেয়ে আক্কেলপুর হাসপাতালে ছুটে আসেন ক্ষেতলাল উপজেলার নির্বাহী অফিসার আসিফ আল জিনাত।
নবাবগঞ্জঘাট এলাকার ফিরোজ হোসেন বলেন, বিকালে তুলশীগঙ্গা নদীর তীরে আমরা খেলছিলাম। এসময় নদীতে একজনকে ভেসে যেতে দেখে আমরা কয়েকজন নদীতে নেমে তাঁকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে দেই। এ সময় তাঁর দুই পা দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল।
প্রতিবন্ধি জয়নাল আবেদীন বলেন, রোগের কারণে আমার পা সব সময় বাঁধা থাকে। আমি নদীতে কখন কিভাবে পড়ে গেছি তা মনে নেই। পরে জ্ঞান আসলে আমি নিজেকে হাসপাতালে দেখি।
আক্কেলপুর উপজেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক রায়হানুল ইসলাম বলেন, অচেতন অবস্থায় নদী থেকে এক প্রতিবন্ধি ব্যক্তিকে স্থানীয়রা হাসপাতালে নিতে আসে। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিলে তার জ্ঞান ফিরলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রেফার্ড করা হয়।
আক্কেলপুরে এসে ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ আল জিনাত বলেন, ক্ষেতলালের বিলের ঘাটে নদীতে পরে যাওয়ার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলে খবর দিয়েছিলাম। সেই মোতাবেক তারা নদীতে খোঁজা খুঁজির প্রস্তুতি নিয়েছিল। এমন সময় খবর পাওয়া যায় সে আক্কেলপুরে উদ্ধার হয়েছে। খবর পেয়ে আক্কেলপুরে এসেছি। সে প্রতিবন্ধি ছিল।
আসিফ