ছবি: সংগৃহীত
রেলের শহর হিসেবে পরিচিত রাজবাড়ী জেলায় এক সময়ের গুরুত্বপূর্ণ বেলগাছি রেলস্টেশন আজ সম্পূর্ণ অবহেলিত। ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত এই স্টেশনটির অবকাঠামো আজ ধ্বংসপ্রায়। নেই কোনো স্টেশন মাস্টার, নেই টিকিট কাটার ব্যবস্থা, এমনকি যাত্রীদের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধাও অনুপস্থিত।
স্টেশনের ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে, ছাদ ও দেয়ালে গজিয়েছে পরগাছা। বিশ্রামাগার, বাথরুম ও সুপেয় পানির ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। প্লাটফর্ম না থাকায় নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ সাধারণ যাত্রীদের ট্রেনে ওঠানামা করতে হচ্ছে চরম ঝুঁকি নিয়ে। মালামাল বহনেও হচ্ছে ভোগান্তি।
বেলগাছি স্টেশন দিয়ে প্রতিনিয়ত যাত্রী ওঠানামা করছে নকশিকাঁথা এক্সপ্রেস, ভাটিয়াপাড়া এক্সপ্রেসসহ একাধিক সটল ট্রেন। সেই সঙ্গে চলাচল করে সুন্দরবন এক্সপ্রেস, বেনাপোল এক্সপ্রেসের মতো দূরপাল্লার ট্রেনও। অথচ এসব ট্রেন থামার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই বললেই চলে।
ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে কর্তৃক দর্শনা থেকে জগতী পর্যন্ত ব্রডগেজ লাইন চালুর পর, ১৮৭১ সালের ১ জানুয়ারি কুষ্টিয়ার জগতী থেকে অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর গোয়ালন্দ ঘাট পর্যন্ত ৭৫ কিমি রেললাইন চালু হয়। এই সময়েই বেলগাছি রেলওয়ে স্টেশনটি গড়ে তোলা হয়।
ব্রিটিশ আমলের এত ঐতিহ্যবাহী রেলস্টেশনটি এভাবে ধ্বংসের মুখে পড়ায় স্থানীয় জনগণ উদ্বিগ্ন। তাঁরা অবিলম্বে স্টেশনটির সংস্কার, মাস্টার নিয়োগ, টিকিট ব্যবস্থা চালু এবং যাত্রীসেবার উন্নয়নের দাবি জানাচ্ছেন।
এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী যাত্রীরা। রেলপথের এই গুরুত্বপূর্ণ অংশের প্রতি নজর না দিলে, এক সময় পুরো স্টেশনটাই হয়তো ইতিহাসে পরিণত হবে—প্রতিবাদহীন নিঃশব্দ এক পতনের দলিল হিসেবে।
আসিফ
