
রেলপথে যাতায়াতকারী যাত্রীদের নিরাপদ ও স্বচ্ছ সেবা প্রদানের দায়িত্ব রেলওয়ের। কিন্তু সাম্প্রতিক এক যাত্রায় ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা প্রশ্ন তোলে কিছু অসাধু রেলকর্মীর আচরণ ও তাদের স্বচ্ছতা নিয়ে।
সাকিব (২৬) নামের একজন যাত্রী আজ তার রেলযাত্রার সময় সম্মুখীন হন এক চরম ভোগান্তির, যা তিনি সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। তিনি যমুনা সেতু থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত যাত্রার জন্য আগেই টিকিট কেটে রেখেছিলেন। তবে তিনি যাত্রা শুরু করেন ঢাকা থেকে। সেজন্য যখন সম্মানিত টিকিট চেকার (টিটি) তার কাছে আসেন, তিনি অনুরোধ করেন যেন ঢাকা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত অংশের ভাড়া যোগ করে একটি অতিরিক্ত টিকিট কেটে দেয়া হয়।
এখানেই শুরু হয় জটিলতা। টিটি মহোদয় মৌখিকভাবে জানান, অতিরিক্ত ভাড়া ৩৭৫ টাকা। যাত্রী সেই দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে এবং অনুরোধ করেন যেন টিকিট মেশিনের মাধ্যমে ভাড়া নির্ধারণ করে টিকিট ইস্যু করা হয়—তখন টিটি রাগান্বিত হয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং শুরুতে টিকিট ইস্যু করতে অস্বীকৃতি জানান।
যাত্রীর দৃঢ়তা ও যুক্তির কাছে পরাজিত হয়ে অবশেষে টিটি মেশিন চালু করেন এবং প্রকৃত ভাড়া হিসেবে নির্ধারিত হয় ১৪০ টাকা ভাড়া ও ৫০ টাকা জরিমানা—সর্বমোট ১৯০ টাকা। যাত্রী সঠিক টিকিট পান, কিন্তু ততক্ষণে প্রশ্ন উঠে পড়ে—প্রথমে কেন তাঁকে ৩৭৫ টাকা ভাড়া বলা হয়েছিল?
এই ঘটনা একটি বড় বাস্তবতাকে তুলে ধরে। দেশের বহু ট্রেনে এখনো এমন টিকিট চেকার রয়েছেন যারা টিকিট মেশিন থাকার পরও ব্যবহার করেন না, বরং যাত্রীদের বিভ্রান্ত করে নগদ অর্থ গ্রহণ করেন। এই অর্থ সরকারের কোষাগারে না গিয়ে চলে যায় ব্যক্তি বিশেষের পকেটে। এর ফলে সরকার রাজস্ব হারায়, সাধারণ যাত্রী হয়রানির শিকার হন, রেলওয়ে ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা কমে যায়।
এই যাত্রীর মতো সচেতন নাগরিকরা যদি সঠিক পথে থাকেন ও অনৈতিক দাবি মেনে না নেন, তাহলে পরিবর্তন সম্ভব। বাংলাদেশ রেলওয়ে জাতীয় সম্পদ—এর উন্নয়নে আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব রয়েছে।
যাত্রীদের প্রতি আহ্বান থাকবে, কোনো রকম বাড়তি ভাড়া দাবি করা হলে, তা টিকিট মেশিনে যাচাই করতে অনুরোধ করুন এবং টিকিট ছাড়া কাউকে নগদ অর্থ প্রদান করবেন না। আসুন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই, দেশের রাজস্ব সুরক্ষিত রাখি। সংযোগ থাকুন, সচেতন হোন।
রাজু