ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পিএসজির চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ে ফ্রান্সজুড়ে সহিংসতা: নিহত ২, আটক ৫ শতাধিক

প্রকাশিত: ০৭:৫১, ২ জুন ২০২৫; আপডেট: ০৭:৫৭, ২ জুন ২০২৫

পিএসজির চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ে ফ্রান্সজুড়ে সহিংসতা: নিহত ২, আটক ৫ শতাধিক

ছবিঃ সংগৃহীত

প্যারিস সেন্ট জার্মেইন (পিএসজি)-এর ঐতিহাসিক চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের পর পুরো ফ্রান্সজুড়ে উদযাপন রূপ নেয় সহিংসতায়। ফরাসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা গেছে, এই ঘটনায় ২ জন নিহত ও ৫৫৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ড্যাক্স শহরে এক ১৭ বছর বয়সী কিশোরকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। অপরদিকে প্যারিসের কেন্দ্রে একটি স্কুটার আরোহী ২৩ বছর বয়সী যুবক গাড়িচাপায় প্রাণ হারিয়েছেন।

উৎসব চলাকালে প্যারিসে আতশবাজি, গাড়িতে আগুন লাগানো, দোকান ভাঙচুর এবং বাস স্টপ ধ্বংস করা হয়। এসময় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে ২২ জন পুলিশ সদস্য ও ৭ জন ফায়ারফাইটার আহত হন। ২৬৪টি যানবাহন পোড়ানো হয়।

পিএসজি এক বিবৃতিতে এসব সহিংসতাকে “ক্লাবের মূল্যবোধের পরিপন্থী” বলে নিন্দা জানায় এবং বলে এগুলো “সংখ্যাগরিষ্ঠ ভক্তদের প্রতিনিধিত্ব করে না।”

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সহিংসতাকে “অগ্রহণযোগ্য ও অপরাধযোগ্য” বলে উল্লেখ করেন এবং দোষীদের খুঁজে শাস্তি দেয়ার আশ্বাস দেন।

রবিবার বিকেলে প্যারিসের চ্যাম্পস-এলিসি অ্যাভিনিউয়ে বিজয় মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। উন্মুক্ত বাসে করে পিএসজির খেলোয়াড়েরা আর্ক দে ত্রিয়ঁফ পর্যন্ত যাত্রা করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ১ লক্ষ মানুষের উপস্থিতি অনুমোদিত হয়।

এছাড়া ক্লাবের নিজস্ব স্টেডিয়াম পার্ক দেস প্রিন্সেস-এ আরও একটি উদযাপন অনুষ্ঠিত হয় যেখানে হাজারো ভক্ত অংশ নেন।

প্যারিস প্রসিকিউটরের অফিস জানায়, চ্যাম্পস-এলিসিতে ফুট লকার নামক দোকানসহ বেশ কিছু দোকানে লুটপাট হয়েছে, এবং ঐ এলাকায় অন্তত ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, অনেকে বাজি ও অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে পুলিশের দিকে ছুঁড়ে মারছিল, এবং দাঙ্গা পুলিশকে জল কামান ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করতে হয়। প্রায় ৫,৪০০ পুলিশ সদস্যকে প্যারিসে মোতায়েন করা হয়েছিল। আটককৃতদের মধ্যে ৩০০ জন বাজি বহনের অভিযোগে ধরা পড়ে।

প্যারিসের বাইরে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের গ্রেনোবলে এক গাড়ি পিএসজি সমর্থকদের ওপর উঠিয়ে দিলে একই পরিবারের চারজন আহত হন, যাদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গাড়িচালক পরে নিজেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তদন্ত সূত্র জানিয়েছে, এটি ইচ্ছাকৃত হামলা ছিল না।

প্যারিস পুলিশ প্রধান লরাঁ নুনেজ বলেন, “যদিও এইবার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পূর্বের তুলনায় কম, তবে সহিংসতাকে কখনোই স্বাভাবিক হিসেবে নেওয়া যায় না।” তিনি বলেন, অনেকেই খেলা দেখেননি, বরং শুধু দাঙ্গা ও লুটপাটের উদ্দেশ্যেই এসেছিল।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেতাইয়ো বলেন, “সত্যিকারের পিএসজি সমর্থকরা দলের অসাধারণ জয়ে মত্ত। কিন্তু বারবার একদল বর্বর রাস্তায় নেমে অপরাধ করছে, যা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।”

সূত্রঃ বিবিসি

নোভা

×