ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০১ জুন ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সেদিনের দিশাহারা মানুষ পেয়েছিল পথের দিশা, জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা

তাহমিন হক ববী, নীলফামারী

প্রকাশিত: ১৯:৪৬, ৩০ মে ২০২৫; আপডেট: ১৯:৪৯, ৩০ মে ২০২৫

সেদিনের দিশাহারা মানুষ পেয়েছিল পথের দিশা, জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা

ছবিঃ সংগৃহীত

আমাদের প্রিয় স্বদেশ স্বাধীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে যাঁদের নাম উচ্চারিত হয়, সেই নামগুলোর অন্যতম নাম জিয়াউর রহমান। সে সময় ইথারে ভেসে আসে একটি কণ্ঠ, “আমি মেজর জিয়া বলছি।” তিনি চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তিনি শত্রুর মোকাবেলায় চট্টগ্রাম থেকেই শুরু করেন সশস্ত্র যুদ্ধ। জিয়াউর রহমানের অতুলনীয় ভুমিকায় সেদিন দিশাহারা মানুষ পেয়েছিল পথের দিশা। আগামী দিনে শহীদ জিয়ার আদর্শে ও বেগম খালেদা জিয়ার যে আদর্শে আজকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারেক রহমান, তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশকে শহীদ জিয়ার মতো আবার স্বনির্ভর গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে। শুক্রবার (৩০ মে) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে নীলফামারীতে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন সভার সভাপতি, নীলফামারী জেলা বিএনপির সভাপতি আ. খ. ম. আলমগীর সরকার।

সভায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান তার জীবদ্দশায় নির্মাণ করেন একটি আধুনিক বাংলাদেশ। দেশের তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ ঘুচিয়ে দিয়েছিলেন। কৃষি বিপ্লব সূচনা করে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেন দেশকে। সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনরায় চালু করেন। একদলীয় শাসনের বদলে প্রবর্তন করেন বহুদলীয় ব্যবস্থা। অথচ চক্রান্ত করে তাকে হত্যা করা হয়। জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের প্রাণ বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, আগামী দিনে বেগম জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন এক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে।

জেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবু মো. সোয়েম তার বক্তব্যে বলেন, শহীদ জিয়ার আমলে বিভিন্ন জেলা এবং থানা সদর থেকেও অসংখ্য পত্রপত্রিকা বের হয়েছে। এসব পত্রিকার স্বার্থে তখন বিজ্ঞাপন বণ্টনও শিথিল করা হয়েছিল। সরকারি বিজ্ঞাপনের ৪০ শতাংশ মফস্বল থেকে প্রকাশিত পত্রিকার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট জিয়া দেশে-বিদেশে সফরকালে তাঁর সঙ্গে সাংবাদিকদের নিয়ে যেতেন। একান্তে তাদের সঙ্গে দেশের সমস্যা সংকট উত্তরণের উপায় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতেন। তাদের কাছ থেকে নানা সমস্যার কথা জেনে তা সমাধানের চেষ্টা করতেন। সংবাদপত্রের যেকোনো সমালোচনা তিনি ইতিবাচকভাবে নিতেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের খোলামেলা জবাব দিতেন। প্রিন্ট মাধ্যম ছাড়াও অন্যান্য মাধ্যমের উন্নয়নেও প্রেসিডেন্ট জিয়ার ভূমিকা ছিল। বাংলাদেশ টেলিভিশনকে আকর্ষণীয় করার জন্য রঙিন মাধ্যমে রূপান্তর করা হয়। সংসদ কার্যক্রম দেখানোর জন্য বিটিভির দ্বিতীয় চ্যানেল চালু করা হয়। একইভাবে বাংলাদেশ বেতারেও পরিবর্তন আনা হয়। তিনি ফিরিয়ে দেন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত স্বাধীন গণমাধ্যম — এ কথাটি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন জিয়াউর রহমান। গণমাধ্যম সম্পর্কে জন স্টুয়ার্ট কিংবা জেফারসনের মতো মনীষীরা যা ভাবতেন, জিয়াউর রহমানের ভাবনার সঙ্গে তার মিল রয়েছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে গেছে। তার পালিয়ে যাওয়ার পর প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই চলছে অস্থিরতা। ওইসব প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিকরা বেকারত্বের দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন। কেউ চাকুরি হারাচ্ছেন— এমনও মিডিয়া রয়েছে যেখানে বেতন বকেয়া পড়েছে। গণমাধ্যমের এই দুরবস্থার সময়ে বেশি বেশি মনে পড়ছে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে, যিনি ছিলেন বাংলাদেশের গণমাধ্যমবান্ধব একজন রাষ্ট্রপতি। আমরা আশা করছি আগামী নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় এলে সাংবাদিক সহ সারা দেশের উন্নয়নে বড় ধরনের আমূল পরিবর্তন হবে, যা শক্ত হাতে দেশ পরিচালনা করবেন বেগম জিয়া ও তারেক রহমান।

জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, নতুন করে বাংলাদেশ গড়তে বিএনপির বিকল্প নেই। শহীদ জিয়ার পথ ধরে এদেশকে বিশ্বের উন্নত দেশের মধ্যে গড়ে তোলা হবে। তাই বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা আশা করছি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই বাংলাদেশের নির্বাচন হবে। তিনি বলেন, শহীদ জিয়া গণতন্ত্রের জন্য বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। সেই গণতন্ত্র আগামী দিনে আবার সুপ্রতিষ্ঠিত হবে।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পৌর বিএনপির সভাপতি মাহবুব-উর-রহমান, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শেফাউল জাহাঙ্গীর আলম শেফু প্রমুখ। এ সকল বিএনপির সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে নানা আয়োজন ছিল। কুরআন খতম ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও সকালে জিয়া স্মৃতি পাঠাগার আয়োজনে সকাল থেকে বই বিক্রি করা হয়। এ সময় জিয়াউর রহমানের জীবনী নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বই কিনেন জেলা আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আসাদুজ্জামান খান রিনো সহ নেতাকর্মীরা।
 

মারিয়া

×