ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’

ভোলার সাথে যোগাযোগ বন্ধ, ৩গাড়ি লাশ ও ৯টি অ্যাম্বুলেন্স ফেরিঘাটে আটকা

মোঃ বেল্লাল নাফিজ, ভোলা

প্রকাশিত: ২০:১০, ২৯ মে ২০২৫; আপডেট: ২০:১০, ২৯ মে ২০২৫

ভোলার সাথে যোগাযোগ বন্ধ, ৩গাড়ি লাশ ও ৯টি অ্যাম্বুলেন্স ফেরিঘাটে আটকা

ছবি:সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’র প্রভাবে ভোলার সঙ্গে সব ধরনের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ভোলা থেকে বরিশালে উন্নত চিকিৎসার জন্য যাওয়ার পথে ভেদুরিয়া ফেরিঘাটে রোগীসহ ৪টি অ্যাম্বুলেন্স আটকে পড়েছে। এছাড়াও বরিশালের লাহারহাট ফেরিঘাটে ভোলা গামী লাশবাহী ৩টি গাড়ি ও ৫টি অ্যাম্বুলেন্স পুরোদিন আটকে ছিল। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রোগী ও লাশের স্বজনরা।

অ্যাম্বুলেন্সগুলোর ভেতরে থাকা অসুস্থ রোগীরা চিকিৎসার অভাবে ছটফট করছেন। অন্যদিকে প্রিয়জনের মরদেহ নিয়ে বাড়ি ফেরার অনিশ্চয়তা ও দীর্ঘ প্রতীক্ষায় স্বজনদের আহাজারিতে নদীর দু'কূল যেন ভারি হয়ে উঠেছে। ২৯ মে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভেদুরিয়া ও লাহারহাট ফেরিঘাটে দেখা গেছে এমন হৃদয়বিদারক চিত্র।

এই দৃশ্য কোনো নাটক বা সিনেমার অংশ নয়; বাস্তবে ভোলাবাসী প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায়শই এমন সংকটময় পরিস্থিতির শিকার হয়ে থাকেন। ভোলার ৬ দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গঠিত সংগঠন "আমরা ভোলাবাসী"-র আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর বলেন, এ সংকট দেশের দায়িত্বশীলদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে—ভোলা-বরিশাল সেতু শুধু একটি উন্নয়ন প্রকল্প নয়, এটি একটি মানবিক সেতুবন্ধনও। তিনি সরকারের দায়িত্বশীল মহলের কাছে দাবি জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ভোলার এ ধরনের মানবিক সংকট লাঘব করতে এবং ভোলার ২২ লাখ মানুষকে দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে স্থায়ীভাবে যুক্ত করতে দ্রুত ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণ করতে হবে।

ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাবে গত রাত থেকেই ভোলায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। পাশাপাশি বইছে তীব্র বাতাস, যার ফলে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী উত্তাল হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার পাঁচটি নৌরুটে লঞ্চ এবং দুইটি রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালে বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি'র ভোলা নদীবন্দরের উপপরিচালক মো. রিয়াজ হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় শক্তির কারণে সমুদ্রবন্দর এলাকায় ৩ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। সকাল থেকে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করায় হাতিয়া-ঢাকা, ভোলা-লক্ষ্মীপুর, ভোলা-আলেকজান্ডার, ভোলা-তজুমদ্দিন-মনপুরা এবং চরফ্যাশন বেতুয়া-মনপুরা রুটে সব লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

এছাড়াও ইলিশা ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. কাওসার আহমেদ খান জানান, বুধবার দিবাগত রাত থেকে ভোলার ইলিশা থেকে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর ঘাট এবং ভেদুরিয়া থেকে বরিশালের লাহারহাট ঘাটে কোনো ফেরি ছেড়ে যায়নি। তবে বিকেলের দিকে আবহাওয়া কিছুটা স্বাভাবিক হলে বরিশাল লাহারহাট থেকে ফেরিতে করে লাশ ও জরুরি কাজে নিয়োজিত যানবাহন পারাপার হতে দেখা গেছে।

মারিয়া

×