ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

রূপগঞ্জে শিক্ষার্থী জুবায়েরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২০:১৮, ৩১ মে ২০২৫

রূপগঞ্জে শিক্ষার্থী জুবায়েরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জুবায়ের বিন মোহাম্মদ (১৭) নামে এক স্কুলশিক্ষার্থীর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে লাশ উদ্ধারের ৪২ দিন পর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। জুবায়েরকে শীতলক্ষ্যা নদীর দক্ষিণপাড়ে নিয়ে গিয়ে মাথায় ও বুকে আঘাত করে এবং শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে আসামিরা ঘটনাটিকে পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা বলে সাজানোর চেষ্টা করে।

হত্যাকাণ্ডের ৪২ দিন পর, নিহতের মা মোসা. মিনারা বেগম রূপগঞ্জ থানায় চারজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার রাতে নিহতের বন্ধু শাহীন, রাব্বি, সিয়াম ও আক্তার হোসেনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করা হয়। শনিবার বিকেলে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াকত আলী।

এর আগে চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল, উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের গাবতলা এলাকার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে শিক্ষার্থী জুবায়েরের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত জুবায়ের উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের চারিতালুক এলাকার মো. তপন মিয়ার ছেলে।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ১৮ এপ্রিল বিকেলে একই এলাকার প্রবাসী নাঈমের ছেলে শাহীন (২০) জুবায়েরকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নেয়। পরে গাবতলার বাসিন্দা নজির ওরফে নাজিরের ছেলে রাব্বি (১৯) ও ফারুকের ছেলে সিয়াম (১৯), পরস্পর যোগসাজশে পূর্বশত্রুতার জেরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জুবায়েরকে ভোলাব গাবতলা এলাকার শীতলক্ষ্যা নদীর দক্ষিণপাড়ে নিয়ে গিয়ে মাথা ও বুকে আঘাত করে এবং শ্বাসরোধে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে।

পরবর্তীতে লাশ গোপনের জন্য নদীতে ফেলে দেওয়া হয় এবং জুবায়েরের বাড়িতে গিয়ে আসামিরা মিথ্যা তথ্য দেয় যে, সে নৌকায় চড়ে নদী পারাপারের সময় পানিতে পড়ে ডুবে গেছে।

হত্যার রহস্য আড়াল করতে চারিতালুকের বাসিন্দা হাছেন আলীর ছেলে আক্তার হোসেন (৩৫) ও অন্যান্য অজ্ঞাত আত্মীয়-স্বজন মিথ্যা প্রচার চালায়। তারা বলেন, জুবায়ের নদীতে পড়ে গিয়ে ডুবে মারা গেছে।

তবে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নাজমুল হোসেন ময়নাতদন্তে মতামত দেন—জুবায়েরের বুকে ও মাথায় আঘাত এবং শ্বাসরোধেই তার মৃত্যু হয়েছে।

বাদী মিনারা বেগম অভিযোগ করেন, ময়নাতদন্তের সময় আসামিরা বাধা সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। তিনি এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।

রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী বলেন, “নিহত জুবায়েরের মা মিনারা বেগম বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইছাপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই পরিতোষ সরকার। লাশ উদ্ধারের পর একটি ইউডি মামলা হয়েছিল। ময়নাতদন্তে হত্যার বিষয়টি উঠে আসায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”
 

সজিব

×