ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

খাগড়াছড়িতে চাঁদাবাজির জাল ছিন্ন করল সেনাবাহিনী

পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি

প্রকাশিত: ১৮:০৫, ২৯ মে ২০২৫

খাগড়াছড়িতে চাঁদাবাজির জাল ছিন্ন করল সেনাবাহিনী

ছবি: জনকণ্ঠ

খাগড়াছড়ির বিভিন্ন সড়কে শ্রমিক সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে বেপরোয়া চাঁদাবাজির অভিযোগে গুইমারা উপজেলা শ্রমিক দলের দুই নেতাকে আটক করেছে সেনাবাহিনী।

নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রে জানা যায়, চালকদের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযানে নামে ২০ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি সিন্দুকছড়ি জোনের সেনা সদস্যরা।

বুধবার মধ্যরাতে গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া বাজার এলাকায় ক্যাপ্টেন মো. শাইয়েন কাদিরের নেতৃত্বে একটি টহল দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে নগদ টাকা ও চাঁদা আদায়ের রশিদ বইসহ দুই ব্যক্তিকে আটক করে।

আটককৃতরা হলেন গুইমারা উপজেলা শ্রমিক দলের সদস্য মো. খলিলুর রহমান (৪৭) ও মো. আবু সায়েদ (৪৫)। তারা উভয়ই গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি এলাকার বাসিন্দা। নিরাপত্তা বাহিনী সূত্র জানায়, আটককৃতদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ চাঁদা আদায়ের রশিদ বই জব্দ করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, গুইমারা উপজেলার অন্তত পাঁচটি স্থানে বিভিন্ন সমিতি ও সংগঠনের নামে নিয়মিতভাবে চাঁদা আদায় করা হতো। স্থানগুলো হলো, জালিয়াপাড়া কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে, কাসেম হোটেলের পাশে, জালিয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির সামনে, গুইমারা বাজারে কাজী টাওয়ারের সামনে এবং হাতিমোড়া পুলিশ বক্সের সামনে।

অভিযোগ রয়েছে, দিনে ও রাতে কাঠ, বাঁশ, ইট, বালু এবং মালবাহী ট্রাক থেকে বিভিন্ন সমিতির নামে চাঁদা আদায় করা হয়। চাঁদার অঙ্ক ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। কোনো চালক টাকা না দিলে তার গাড়ি আটকে দেওয়া হতো।

স্থানীয় এক ট্রাকচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “প্রতিদিন রাস্তায় চাঁদা দিতে হয়। না দিলে গাড়ি আটকে রাখে। এই নিয়ে আমরা অনেক ভুগেছি। বিষয়টি প্রশাসনকেও অবহিত করেছি।”

তিনি আরও জানান, “খাগড়াছড়ি থেকে একটি মালবাহী ছোট পিকআপ বারইয়ার হাট পৌঁছাতে প্রতিটি গাড়িকে অন্তত আট হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। জেলা সদর থেকে শুরু করে মাটিরাঙ্গা, গুইমারা, রামগড়, হেয়াকো, সর্বশেষ বারইয়ার হাটে গিয়েও চাঁদা দিতে হয়।”

অভিযানের পেট্রোল কমান্ডার ক্যাপ্টেন মো. শাইয়েন কাদির বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে দুই চাঁদাবাজকে চাঁদা উত্তোলনের সময় আটক করা হয়েছে। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর এই অভিযান চলমান থাকবে।”

আটক দুই ব্যক্তিকে গুইমারা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গুইমারা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. এনামুল হক চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান, গুইমারায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

শহীদ

×