ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩১ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিয়ে গোপন রেখে প্রবাসীর সাথে পরকীয়া, যার জেরে খু-ন হয় স্বামী-স্ত্রী

প্রকাশিত: ১৩:৩৫, ২৯ মে ২০২৫; আপডেট: ১৩:৩৮, ২৯ মে ২০২৫

বিয়ে গোপন রেখে প্রবাসীর সাথে পরকীয়া, যার জেরে খু-ন হয় স্বামী-স্ত্রী

ছবি:সংগৃহীত

ঢাকার মিরপুরে প্রেমঘটিত বিরোধের জেরে এক হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। বিয়ের তথ্য গোপন রেখে প্রেম করার অভিযোগে এক সৌদি ফেরত প্রবাসী তার প্রেমিকা ও তার স্বামীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। বুধবার (২৮ মে) দুপুর ২টার দিকে মিরপুর ১১ নম্বরের বি ব্লকের ১ নম্বর রোডের একটি বাসায় ঘটে এই নৃশংস ঘটনা।

 

ঘটনার পরপরই হত্যাকারী গাউস মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।পুলিশ জানায়, নিহত দোলা আক্তার দোলা (একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী) ও তার স্বামী নাজমুল হোসেন পাপ্পু (একটি মেডিসিন কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভ) মিরপুরের ওই বাসায় সাবলেট হিসেবে ভাড়া থাকতেন। দোলার সঙ্গে গাউস মিয়ার পরিচয় হয়েছিল ফেসবুকে, প্রায় নয় মাস আগে, যখন গাউস সৌদি আরবে কর্মরত ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে গাউস সৌদি থেকে ফিরে মিরপুরেই দোলার বাসার কাছাকাছি একটি বাসা ভাড়া নেন এবং ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। দোলার বাসায় নিয়মিত যাতায়াতও ছিল তার।

 

 

ঘটনার দিন সকালে গাউসের সঙ্গে দোলার একসঙ্গে নাশতার কথা ছিল। কিন্তু সকাল ৯টার দিকে গাউস দেখতে পান, দোলা একজন পুরুষের সঙ্গে রিকশায় কোথাও যাচ্ছেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, সেই ব্যক্তি দোলার স্বামী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুপুর দেড়টার দিকে গাউস ছুরি নিয়ে দোলার বাসায় যান।

 

 

গাউস বাসার কলিং বেল চাপলে এক নারী দরজা খোলেন। গাউসের হাতে ছুরি দেখে ভয় পেয়ে তিনি বাইরে চলে যান এবং দরজা বন্ধ করে ৯৯৯-এ ফোন করেন। এরই মধ্যে গাউস বাসায় ঢুকে দোলার স্বামী নাজমুলকে ঘুমন্ত অবস্থায় ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন। এরপর দোলাকেও ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন।

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। অভিযুক্ত গাউস মিয়াকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, দোলার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল গাউসের, কিন্তু তিনি জানতেন না দোলা বিবাহিত। এ সত্য জানার পরই ক্ষোভে এই হত্যাকাণ্ড ঘটান তিনি।

পল্লবী জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সালেহ মুহম্মদ জাকারিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “প্রেমঘটিত সম্পর্কের জেরে এই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে। গ্রেপ্তার গাউস প্রাথমিকভাবে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।”

 

 

এই জোড়া হত্যাকাণ্ডে হতবাক ও আতঙ্কিত মিরপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা। নিহত দোলার বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলায় এবং নাজমুলের বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়। হত্যাকারী গাউস মিয়ার বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায়।

নিহতদের পরিবার ও এলাকাবাসী দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, তদন্ত চলমান রয়েছে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে চার্জশিট দেওয়া হবে।

 

সূত্র:https://youtu.be/UhXAgURDZEs?si=SfJ1QyoJyp-b_dH4

আঁখি

×