
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে আজ সকালে আহত যোদ্ধাদের উপর সংঘটিত বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন। আহত যোদ্ধাদের উন্নত চিকিৎসা ও সুরক্ষার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে চলমান প্রতিবাদের প্রেক্ষাপটে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, ২৮ মে সকাল ১১টার দিকে হাসপাতালের কিছু স্টাফ ধর্মঘটের নামে কর্মবিরতি পালনকালে একজন আহত যোদ্ধার উপর হামলা চালায়। পরে সংঘবদ্ধভাবে তারা হাসপাতালের চতুর্থ তলায় ভর্তি আহত যোদ্ধাদের কক্ষে হামলার চেষ্টা করে। আতঙ্কে আহত যোদ্ধারা লোহার দরজা বন্ধ করেও নিরাপদ থাকতে পারেননি। হামলাকারীরা দরজা ভেঙে কক্ষে ঢুকে আক্রমণ চালায়, এতে অন্তত আটজন গুরুতর আহত হন। পরে তাদের নিটোর ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এরপর ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা পুলিশকে প্রস্থান করতে অনুরোধ করেন, এবং পুলিশ সদস্যরা চলে গেলে অবস্থা কিছুটা শান্ত হয়।
পরে দুপুর ২:৩০ থেকে ৩:০০টার মধ্যে শতাধিক সেনা সদস্য ও কোস্ট গার্ড সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং আহতদের বক্তব্য শোনেন। কিন্তু মিডিয়ার সামনে তারা আহত যোদ্ধাদেরই দোষারোপ করলে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে। উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে কয়েকজন আহত যোদ্ধা ও ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা সেনা সদস্যদের হাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং সেনাবাহিনী, আহত যোদ্ধা ও মিডিয়ার সঙ্গে আলোচনা করে উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করেন। আহত যোদ্ধারা তাদের দাবি উপস্থাপন করলে তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
ফাউন্ডেশন জানায়, কর্মবিরতির কারণে সকাল থেকে আহত যোদ্ধাসহ অন্যান্য রোগীরা চিকিৎসা ও জরুরি সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন এই বর্বর হামলার তীব্র নিন্দা জানায় এবং দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায়।
একইসাথে ফাউন্ডেশন সকল সরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানায়—আহত যোদ্ধাদের শুধুমাত্র সাধারণ রোগী হিসেবে নয়, "পোস্ট ওয়ার সাইকোলজিক্যাল স্টেট" বিবেচনায় রেখে বিশেষ যত্ন ও মানসিক পুনর্বাসনের আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ফাউন্ডেশন আরও জানায়, জুলাই যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারই জাতির প্রকৃত গর্ব। তাদের প্রতি অবহেলা করা মানেই মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা, যা বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনগণ কখনোই মেনে নেবে না।
আসিফ