ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ৩০ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

শ্যামনগরে প্রবাসীদের অর্থায়নে গৃহহীনদের জন্য আধাপাকা ঘর নির্মাণ

এবিএম কাইয়ুম রাজ, সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১৭:২৫, ২৮ মে ২০২৫

শ্যামনগরে প্রবাসীদের অর্থায়নে গৃহহীনদের জন্য আধাপাকা ঘর নির্মাণ

ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ।

উপকূলীয় জনপদে গৃহহীন অসহায় মানুষের জীবনে নতুন আশার আলো হয়ে এসেছে এক মহৎ উদ্যোগ। আমেরিকায় বসবাসরত কিছু উদারপ্রাণ প্রবাসী ভাই-বোনের আর্থিক সহায়তায় সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার জয়নগর ও কাশিমাড়ী এলাকায় গৃহহীন পরিবারগুলোর জন্য নির্মিত হচ্ছে ১৩টি আধাপাকা ঘর। এ উদ্যোগ শুধু বসতঘর নির্মাণে সীমাবদ্ধ নয়, এটি হয়ে উঠেছে মানবিকতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

ইতোমধ্যে ৫টি ঘরের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং সেগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে উপকারভোগী পরিবারের কাছে। বাকি ৮টি ঘরের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। এই পুরো ব্যয় বহন করছেন আমেরিকাপ্রবাসী কিছু সমাজসচেতন ভাই-বোন, যারা দেশের মানুষের দুর্দশার কথা ভেবে এগিয়ে এসেছেন নিঃস্বার্থভাবে।

ঘর নির্মাণ প্রকল্পটি মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বীকন ফাউন্ডেশন। সংস্থাটি ঘরের নকশা, নির্মাণসামগ্রী সংগ্রহ এবং নির্মাণ তত্ত্বাবধানসহ প্রতিটি ধাপে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে। স্বেচ্ছাসেবকরা ঘর নির্মাণের পাশাপাশি উপকারভোগী পরিবারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছেন, যাতে ঘরগুলো সঠিকভাবে ও সময়মতো নির্মাণ সম্পন্ন হয়।

বীকন ফাউন্ডেশনের একজন স্বেচ্ছাসেবক জানান, “আমরা শুধু ঘর নির্মাণ করছি না, আমরা একটি পরিবারের স্বপ্ন নির্মাণ করছি। গৃহহীন মানুষের চোখে আনন্দের যে ঝিলিক আমরা দেখেছি, সেটাই আমাদের পরিশ্রমের প্রকৃত মূল্য।”

স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানায়, উপকূলীয় অঞ্চলে ঘনঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বহু মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করেন। নদীভাঙন, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে এ অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে নানা দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এমন বাস্তবতায় প্রবাসী ভাই-বোনদের এই সহায়তা যেন একটি আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। তারা বলেন, এসব ঘর শুধু চারটি দেয়াল নয়, এটি একটি নিরাপদ আশ্রয়, একটি স্বপ্ন, একটি ভবিষ্যৎ।

এই মহতী উদ্যোগের মাধ্যমে উপকারভোগী পরিবারগুলো যেমন একটি নিরাপদ ঠাঁই পাচ্ছে, তেমনি সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে সহমর্মিতা, ভালোবাসা ও মানবিকতার বার্তা। প্রবাসী ভাই-বোনদের এই উদ্যোগ সমাজে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যা ভবিষ্যতে আরও অনেকে অনুপ্রাণিত হবে-এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

মিরাজ খান

×