
বাংলাদেশের প্রাচীনতম এবং প্রভাবশালী কওমি মাদ্রাসাগুলোর অন্যতম, আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম যা হাটহাজারী মাদ্রাসা নামে বেশি পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে ইসলামী শিক্ষা, সংস্কৃতি ও গবেষণার এক প্রাণকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটি । চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় অবস্থিত এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯০১ সালে।
দেশ-বিদেশের হাজার হাজার শিক্ষার্থী এখানে দ্বীনী শিক্ষার জন্য প্রতি বছর ভর্তি হয়। বর্তমানে, এই মাদ্রাসায় প্রায় ৮,০০০ ছাত্র অধ্যয়নরত, এবং প্রায় ১১০ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা তাদের শিক্ষা ও পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন। কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার দাওরায়ে হাদিস পর্যায় পর্যন্ত পাঠদান করা হয় এই প্রতিষ্ঠানে। এর সঙ্গে রয়েছে হিফজ, ফারসি, আরবি সাহিত্য, তাফসির, ফিকহ ও হাদিসের গভীর চর্চা।
হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রাক্তন মহাপরিচালক শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.) ছিলেন একজন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও হাদিস বিশারদ। তাঁর নেতৃত্বে মাদ্রাসাটি আরও বেশি পরিচিতি লাভ করে এবং দেশজুড়ে একটি প্রভাবশালী অবস্থানে তৈরি করে।
এই মাদ্রাসার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো এর সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব। বিভিন্ন সময় এখানে শিক্ষার পাশাপাশি জাতীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
বর্তমানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সংযোজন, পাঠ্যক্রমের উন্নয়ন এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। তবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা এবং সমন্বিত পাঠ্যক্রম যুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন অনেকে।
হাটহাজারী মাদ্রাসা শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি একটি ঐতিহ্য, একটি আন্দোলন, একটি বিশ্বাসের নাম। ইসলামী মূল্যবোধের ধারক-বাহক হিসেবে এই প্রতিষ্ঠান আজও দীপ্তভাবে অগ্রসরমান।
আলীম