
ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া হাসপাতালে প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে দালালদের দৌরাত্ম্য,দালালদের খপ্পরে পড়ে হারাচ্ছেন সর্বস্ব।এতে রোগীরা পড়ছেন চরম ভোগান্তিতে।
হাতিয়ায় প্রায় সাড়ে সাত লাখ মানুষের বসবাস। আর এই মানুষ গুলোর স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার জন্য রয়েছে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট একটি হাসপাতাল।প্রতিদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন অসংখ্য মানুষ। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এখানে দালালদের দৌরাত্ম্য অনেক বেশি লক্ষণীয়। দালালদের অত্যাচারের কারণে সেবা পেতে বিঘ্ন ঘটছে সাধারণ মানুষের। বিশেষ করে গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা সহজ সরল মানুষ গুলো। এসব মানুষ গুলো দালালদের খপ্পরে পড়ে হারাচ্ছেন সর্বস্ব।
২০শে মে সকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ মানুষদের বিভিন্ন ধরনের কথা বলে ভুলিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন দালাল চক্রের সদস্যরা। দালালেরা ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে কমিশনের বিনিময়ে কাজ করে থাকেন। অন্যদিকে একজন রোগী যখন ডাক্তারের কক্ষ থেকে বের হন, তখন থেকেই পিছু নিতে শুরু করে দালাল চক্র। রোগীর চিকিৎসাপত্র হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে অবলম্বন করেন নানা ধরনের কৌশল।
চিকিৎসাপত্র হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে পারলেই রোগীরা অনেকটাই জিম্মি হয়ে যায় দালাল চক্রের কাছে। তখন তাদের সঙ্গে ওই সব ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে যেতে বাধ্য করা হয় রোগীদের। তথ্যসূত্র বলছে অনেক সময় চিকিৎসকের সহকারীরা ও এই দালাল চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসাপত্র রোগীর হাতে না দিয়ে সরাসরি তুলে দেন দালাল চক্রের কাছে এবং বলেন দালাল চক্রের সঙ্গে গিয়ে চিকিৎসকের দেওয়া পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো করিয়ে চিকিৎসককে দেখিয়ে যেতে।
দালালের খপ্পরে পড়া এক ভোক্তভোগী সীমা (২৭) আক্তার বলেন, আমি হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়ে রুম থেকে বের হওয়ার দুইজন অপরিচিত লোক প্রেসক্রিপশন ধরে টান মারে এসময় আমার প্রেসক্রিপশন ছিঁড়ে যায়। এইভাবে চলতে থাকলে হাসপাতালে আমরা কীভাবে চিকিৎসা নিবো?
এছাড়াও গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রহিমা বেগম (৪৫) বলেন, আমাকে অপরিচিত একজন লোক বলেন, আপনার তো রক্ত পরীক্ষা লিখেছেন ডাক্তার, পরীক্ষা করতে অনেক টাকা লাগবে, আমার সাথে আসেন আমি কম খরচে করিয়ে দেবো, যাবার পর আমার কাছ থেকে রক্ত পরীক্ষার জন্য পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছে । আমার কাছে এখন ঔষধ কিনার টাকা নাই।
বাংলাদেশের বেশিরভাগ হাসপাতালে আনসার সদস্যেরা দায়িত্ব পালন করলেও হাতিয়ার এই হাসপাতালে নেই কোন আনসার সদস্য। হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই কোন আনসার সদস্যের টিম। এমতাবস্থায় সাধারণ জনগণের একটাই দাবি কর্তৃপক্ষের কাছে, সব ধরনের দালাল চক্রের সদস্যদের হাসপাতাল থেকে বিতাড়িত করে যথোপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে হাসপাতালের সুস্থ–সুন্দর পরিবেশ গড়ে তোলার।
দালালদের বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মানসী রানি বলেন, আমি হাসপাতালে রাউন্ড দেওয়ার সময় কোন দালাল দেখি না। তারপরেও যদি থাকে তাহলে অবশ্যই আমি দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
হ্যাপী