
নগর ভবন
বিএনপির নেতা প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি)’র মেয়র ঘোষণা করার দাবিতে নগর ভবন অবরুদ্ধ করে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় নরগবাসীরা। এতে ডিএসসিসির বিভিন্ন শ্রমিক ও কর্মচারীরা অংশ নিয়েছে। এতে এক প্রকার অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে নগর ভবনে।
এ সময় তারা ‘শপথ নিয়ে টালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘অবিলম্বে ইশরাক হোসেনের শপথ চাই, দিতে হবে’, ‘জনতার মেয়র ইশরাক ভাই, অন্য কোনো মেয়র নাই’ এমন নানা স্লোগান দেন। আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাই ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসির মেয়র করার দাবিতে নগর ভবনের প্রধান ফটকের সামনের সড়ক অবরোধ করে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিক্ষোভকারীরা।
এই কর্মসূচিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাধারণ কর্মচারীরা একাত্মতা প্রকাশ করে। তাই সকাল থেকে সব কার্যক্রম বন্ধ করে কর্মসূচিতে অংশ নেয় তারা। নগর ভবনের সব গেট বন্ধ করে দেন তারা। প্রত্যেক গেটেই তালা ঝুলিয়ে দিয়ে নগর ভবনের নিচ তলায় স্টেজ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে অচল হয়ে পরে ডিএসসিসির প্রধান কার্যালয়। এর ফলে কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারী নগর ভবনে প্রবেশ করতে পারেনি।
প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসির মেয়র করার দাবিতে গত বুধবার থেকে ঢাকাবাসীর ব্যানারে নগর ভবনে লাগাতার এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বিক্ষোভকারীরা। আগামী শনিবার প্রেস ক্লাব থেকে সচিবালয় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল ও সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
নগর ভবনের সামনে অবস্থানকারী বিক্ষোভকারীরা জানান, এখন পর্যন্ত ইশরাকের শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই তারা ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে গতকাল (বুধবার) বিক্ষোভ করেছেন। আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট অনুযায়ী ইশরাক হোসেন বৈধ মেয়র। এরপরও কেন তাকে এখনো শপথ পাঠ করানো হয়নি, তার ব্যাখ্যা দিতে হবে।
একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, মশামুক্ত এবং দুর্নীতিমুক্ত ঢাকা গড়তে ইশরাকের মতো জনবান্ধব মেয়র প্রয়োজন। আন্দোলনকারীরা জানান, যতদিন ইশরাক হোসেনকে শপথ পাঠ করানো না হবে, ততদিন তারা নগর ভবনের সামনে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেবেন।
এদিকে, ঢাকাবাসীর এই অবস্থান কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাধারণ কর্মচারীরাও। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তারা সব কার্যক্রম বন্ধ করে অবস্থান নেন সেই অবস্থান কর্মসূচিতে। সব গেট বন্ধ করে দেন তারা। প্রত্যেক গেটেই তালা ঝুলিয়ে দিয়ে নগর ভবনের নিচ তলায় স্টেজ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। গত ২৭ মার্চ ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন নির্বাচনী আদালত।
ঈদের পর ১৬ এপ্রিল পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেন আদালত। ২২ এপ্রিল ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে গেজেট প্রকাশ করা নিয়ে আইনগত কোনো জটিলতা আছে কি না সেই মতামত চেয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায় নির্বাচন কমিশন।
তবে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের অপেক্ষায় থেকে নির্ধারিত ১০ দিনের ঠিক শেষদিন ২৭ এপ্রিল রাত ৯টায় আইন মন্ত্রণালয়ের মৌখিক অনুমতি নিয়ে গেজেট প্রকাশ করে ইসি। পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য ২৮ এপ্রিল সেই গেজেট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠায় ইসি।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে আবারও আপিলের জন্য পাঠানো হয় নির্বাচন কমিশনে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন আপিল করবে না জানিয়ে দিয়েছে। তারও প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও শপথের ব্যবস্থা করছে না স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।