ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২

ক্যান্সার আক্রান্ত শিশু ইয়াফি’র বাঁচার আকুতি

রফিকুল ইসলাম রনি, চাটমোহর (পাবনা)

প্রকাশিত: ১৫:৫৭, ১৪ মে ২০২৫

ক্যান্সার আক্রান্ত শিশু ইয়াফি’র বাঁচার আকুতি

ক্যান্সার আক্রান্ত শিশু ইয়াফি ও তাঁর মা শিফা খাতুন

আল্লাহ আমাকে বাঁচাও, আমার রোগ সারিয়ে দাও, আমি কষ্ট পাচ্ছি। এভাবেই নিজের জীবন ভিক্ষা চেয়ে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানায় ছয় বছর বয়সী ইয়াফি। একমাত্র সন্তানের বাঁচার আকুতি দেখে কান্নায় জর্জরিত বাবা-মা।

পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম বালুদিয়ার গ্রামের দরিদ্র ময়ান-শিফা খাতুন দম্পতির একমাত্র সন্তান ছয় বছরের ইয়াফির চোখে এখনও অনেক স্বপ্ন। স্কুলে যাবার, খেলাধুলা করার, মায়ের হাত ধরে রাস্তা পার হওয়ার! কিন্তু সেই স্বপ্নগুলো আজ এক নির্মম বাস্তবতায় থমকে গেছে। কারণ, ক্যান্সার নামক মারণ রোগে আক্রান্ত শিশুটি। মাস ছয়েক আগে ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয় শিশুটি। টিউমার অপারেশনের পর এখন ব্রেন ক্যান্সারে আক্রান্ত ইয়াফি। যে বয়সে সমবয়সীদের সাথে খেলাধুলা করার কথা সেই বয়সেই ইয়াফিকে মৃত্যুর  প্রহর গুনতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মায়ের কোলে বসে থেকে আজান দিচ্ছে ইয়াফি। হাত তুলে আল্লাহর কাছে নিজের জীবন ভিক্ষা চেয়ে ফরিয়াদ জানাচ্ছে সে। বাঁকা হয়ে গেছে দুই চোখ। দাঁড়াতে ও বসতেও পারেনা শিশুটি। একমাত্র ছেলের এমনকষ্ট দেখে কাঁদছেন মা শিফা খাতুন। আর ছেলের এমন কষ্ট দেখে সইতে না পেরে বাড়ির বাইরে দিনের বেশির ভাগ সময় কাটান বাবা ময়ান আলী।

জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে হটাৎ করেই দুই চোখ বাঁকা হয়ে যায় ইয়াফির। অনর্গল বমি করতে থাকে সে। বাবা ময়ান আলী পাবনায় একটি ক্লিনিকে ছেলেকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যান। সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষায় ইয়াফির ব্রেন টিউমার আক্রান্ত বলে জানান চিকিৎসক। এরপর বাড়ির গরু বিক্রি, ধারদেনা ও মানুষের সহযোগিতায় ঢাকার একটি হাসপাতালে প্রায় ছয়লাখ টাকা ব্যয় করে ইয়াফিকে অপারেশন করানো হয়। এতে একেবারেই নিঃস্ব হয়ে পড়ে পরিবারটি। 

অপারেশনের পর বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয় ইয়াফিরকে। কিন্তু সপ্তাহ পার না হতেই আবারো অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুটি। আবারও চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় ঢাকায়। সেখানে ডাক্তার দেখানোর পর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ক্যান্সার ধরা পড়ে। দ্রুত অপারেশন এবং কেমোথেরাপি না দিলে ইয়াফিকে বাঁচানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। অপারেশন ও কেমোথেরাপি দিতে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকার মতো খরচ হবে। কিন্তু দরিদ্র পরিবারের কাছে টাকা না থাকায় ইয়াফিকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। বিনা চিকিৎসায় এখন মৃত্যুর প্রহর গুনছে ছোট্ট ইয়াফি। দরিদ্র এই পরিবার এখন তাকিয়ে আছে সমাজের মানুষের দিকে।

সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে ইয়াফির বাবা ও মা।

ইয়াফির ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুসা নাসের চৌধুরীকে জানানো হলে তিনি বলেন, বিষয়টি খুবই কষ্টকর। আমি খোঁজ নিয়ে সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। তবে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান ইউএনও।

ইয়াফি’র পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে এই নাম্বারে- ০১৭৭৭৪৮৫১৮২ (বিকাশ) 
 

 

রাজু

×