
ছবি: সংগৃহীত
মুন্সীগঞ্জে পিকনিকের লঞ্চে নারীকে প্রকাশ্যে পেটানোসহ তাণ্ডবের ঘটনায় অবশেষে মামলা হয়েছে। মামলায় শনিবার আটককৃত নেহাল আহমেদ জিহাদকে (২৪) প্রধান আসামি করা হয়েছে। এই এক আসামির নাম উল্লেখ করে আরও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী হয়েছেন মুক্তারপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মোহাম্মদ মিলন বিশ্বাস। মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি এম সাইফুল আলম জানান, শনিবার মধ্যরাতে মামলাটি রুজু হয়। নৌপথে ঘটনা ঘটায় মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মুক্তারপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক ইমরান আহমেদকে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, মামলা রুজুর পর আটক নেহাল আহমেদ জিহাদকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। বিচারক মুন্সীগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম সোমবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য রেখে তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, যৌন নিপীড়ন ও নির্যাতন, বেআইনি জনতা সৃষ্টির মাধ্যমে লঞ্চে অনধিকার প্রবেশ, মারধর, সাধারণ জখম, ক্ষয়ক্ষতি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অপরাধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারা এবং দণ্ডবিধির ১৪৩/৩২৩/৪২৭/৪৪৮/৫০৬ ধারায় মামলাটি রুজু করা হয়।
রবিবারই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ভিডিও পরীক্ষা করে অন্যান্য আসামিদের নাম শনাক্ত করা হচ্ছে। প্রকৃত আসামি চিহ্নিত করতে ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীসহ যাদের কাছে ভিডিও রয়েছে, সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
মুক্তারপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আতাউর রহমান জানান, স্পর্শকাতর এই ঘটনায় কিছু ব্যক্তির কারণে পুরো এলাকার ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। তাই বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করে প্রকৃত চিত্র আদালতের সামনে উপস্থাপন জরুরি। বিভিন্ন চাপ থাকা সত্ত্বেও পুলিশ সঠিকভাবে তদন্তের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, জিহাদ ও অজ্ঞাত ২০ থেকে ২৫ জন শুক্রবার রাত ৮টার দিকে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে এমভি ক্যাপ্টেন লঞ্চের নারী যাত্রীদের মারধর করে জখম করে। ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। গণমাধ্যমগুলোতেও ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ পায়। এরপরই পুলিশ শনিবার দুপুরে জিহাদকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে একটি লঞ্চ ভাড়া করে চাঁদপুরের মোহনপুর ঘুরতে যান কয়েকজন। ফেরার পথে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে কিছু কেনাকাটার সময় স্থানীয়দের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়।
একপর্যায়ে লঞ্চে হামলা, ভাঙচুর ও শ্লীলতাহানি করা হয়। এ সময় নেহাল আহমেদ জিহাদ দুই তরুণীকে লঞ্চের ডেকে নিয়ে প্রকাশ্যে বেল্ট দিয়ে পেটান। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, লঞ্চের দ্বিতীয় তলায় কয়েকজন যুবক এক নারীকে মারধর করছে। তবে তাদের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।
খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শহীদ