ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

যতদূর চোখ যায় সয়াবিন আর সয়াবিন, ভাগ্য বদলে দিচ্ছে কৃষকদের

নিজস্ব সংবাদদাতা, রায়পুর, লক্ষ্মীপুর 

প্রকাশিত: ১৯:০৭, ১০ মে ২০২৪

যতদূর চোখ যায় সয়াবিন আর সয়াবিন, ভাগ্য বদলে দিচ্ছে কৃষকদের

সয়াবিন। ছবি: জনকণ্ঠ

লক্ষ্মীপুর রায়পুর উপজেলা জুড়ে আধা পাকা সোনালি সয়াবিনের শিষ দুলছে। এ অঞ্চলের অন্যতম একটি অর্থকরী ফসল সয়াবিন। কিছু কিছু জমির সয়াবিন সোনালি রং ধরেছে। কেউ কেউ জমির সয়াবিন কেটে মাড়াই দিচ্ছেন, কেউবা নিজের জমির ফসল ঘুরে ঘুরে দেখছেন। 

গত শুক্রবার রায়পুর উপজেলার চর ঘাসিয়া ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় উপজেলার কৃষকদের মধ্যে সয়াবিনের চাষাবাদ দিন দিন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অনেক কৃষকের ভাগ্য বদলে দিয়েছে এ ফসল।

রায়পুর কৃষি অফিসের তথ্য মতে, রায়পুর উপজেলায় এবার প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে সয়াবিন আবাদ হয়। এখানে বছরে অন্তত ২৫০ কোটি টাকার সয়াবিন উৎপাদন হয়। সারা বছর এ অঞ্চলের মানুষ এ ফসলের উপরই নির্ভরশীল থাকে। দেশের খ্যাতনামা সয়াবিন তেল ও পোলট্রি খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখান থেকে সয়াবিন সংগ্রহ করে।

রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানান, কৃষকের হাত ধরে গ্রাম এগোচ্ছে। বদলে যাচ্ছে প্রত্যন্ত জনপদের চেহারা। এককালের টিন বা পাতার চালা-বেড়ার ঘরগুলো হয়ে উঠেছে পাকা ভবন। ভাগ্য বদলের ফসল সয়াবিনে বদলে গেছে চরের মানুষের জীবনযাপনও। সয়াবিনে ভরে গেছে রায়পুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। যতদূর চোখ যায় সোনালি সয়াবিন যেন হাতছানি দিয়ে ডাকে। এতে দারুণ উচ্ছ্বসিত কৃষক। তাদের চোখে-মুখে রঙিন স্বপ্ন। 

রায়পুরের চর ঘাসিয়ার মফিজ উদ্দিন এ বছর প্রায় তিন একর জমিতে সয়াবিন চাষ করেন। তিনি হিসাব করে জানান, ফসল ঘরে আনা পর্যন্ত তার মোট খরচ হবে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। মোটামুটি ফসল হলে ৭৫ মণ সয়াবিন হবে। মণ ২ হাজার টাকা করে প্রায় দেড় লাখ টাকা বিক্রি করা হবে। সারা বছর এ অঞ্চলের মানুষ এ ফসলের উপরই নির্ভরশীল থাকে।

রায়পুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ জানান, এ উপজেলার কৃষকরা সয়াবিন চাষ করে সচ্ছল হয়েছে। এসব পরিবারের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। এলাকায় দরিদ্র্যতা কমেছে। বদলে গেছে প্রত্যন্ত জনপদের চেহারা।

রায়পুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাহমিনা খাতুন বলেন, আবহাওয়া অনুকূল থাকায় রায়পুরে সয়াবিনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না এলে কৃষকদের প্রত্যাশা পূরণ হবে। কাঙ্ক্ষিত ফলন পেতে কৃষি অফিস ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের নিয়ে কাজ করছেন।
 

 এসআর

×