
উদ্ধারকৃত মাদ্রাসা ছাত্রী
ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে মৃত্যূ যন্ত্রণায় ছটফট করছে বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধারকৃত মাহফুজা খাতুন (১৪) নামে এক মাদরাসা শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন জানান, স্থানীয় লোকজন বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ২০মিনিটে পৌরশহরের টাঙ্গন নদী থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন এবং বর্তমানে সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
উদ্ধারকৃত মাহফুজা খাতুন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার বিজয়পুর গ্রামের মৃত ক্বারী মোস্তফা কামালের মেয়ে।
মাহফুজা খাতুন ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের খাতুনে জান্নাত কামরুন্মেছা কাওমী মহিলা মাদরাসায় কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করতো।
শহরের খালপাড়ার বাসিন্দা জয় মহন্ত অলক জানান, সকালে টাঙ্গন নদীর ব্রীজের নীচে একটি বোঝাই বস্তা পরে থাকতে দেখে স্থানীয়রা আমাকে ফোন দেয়। আমি সেখানে গিয়ে বস্তা খুলে দেখি একটি নারীর দেহ। আমরা প্রথমে ধারণা করেছিলাম মৃত লাশ। এসময় আমি বস্তা বন্দি লাশ ভেবে ছবি তোলার জন্য একটু কাছে গিয়ে দেখি বস্তাটি নড়ে উঠলো। তাৎক্ষণিক ভাবে আমি স্থানীয়দের পরীক্ষা করতে বললে তারা জানায় বেঁচে আছে। এসময় আমরা দ্রুত তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে দেই।
তিনি আরো জানান, প্রায় দুই ঘন্টা পর ওই নারীর কিছুটা জ্ঞান ফিরে এলে জানা যায় সে মাদ্রাসা ছাত্রী নাম মাহফুজা খাতুন।
পরে মাহফুজা খাতুনের বড় বোনের মুঠোফোন নাম্বার পেয়ে তাঁর যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার বোন টাঙ্গন নদীর পাশে খাতুনে জান্নাত কামরুনেছা কাওমী মহিলা মাদরাসায় পড়াশোনা করে। সেখানে কি ঘটনা ঘটেছে আমরা জানিনা। আমরা ঠাকুরগাঁওয়ে যাচ্ছি।
পরে খাতুনে জান্নাত কামরুনেছা কাওমী মহিলা মাদরাসার মুহতামিম হযরত আলীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রতিরাতের নিয়মে আমরা বুধবার রাত ১১ টায় সবাই ঘুমিয়ে পরেছিলাম।
বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের সময় মাহফুজা খাতুনকে তার রুমে দেখতে না পেয়ে তার সহপাঠিরা তাকে খোঁজাখুজি করে এবং তার অভিভাবকদের খবর দেওয়া হয়। পরে খবর পাই, সূর্য্যদয়ের পর মাদরাসার পাশেই টাঙ্গন নদীর তীরে ব্রীজের নীচে বস্তা বন্দি অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, মাহফুজা খাতুনের বিয়ে হয়েছিল এবং স্বামীর সাথে বনিবনা নেই।
তার সেই স্বামী দলবল নিয়ে বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২-৩ টার দিকে মেয়েটিকে কৌশলে মাদরাসা থেকে বের করে নিয়ে আসে এবং পরে নির্যাতন করে তাকে মৃত ভেবে বস্তা বন্দি করে টাঙ্গন নদীর তীরে ব্রীজের নীচে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে সকালে খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন পুরো সুস্থ্য হতে সময় লাগবে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।