ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

খেলা নেই, তবুও অনুশীলনে ফিটনেস ধরে রাখার প্রচেষ্টা তাদের ...

প্রকাশিত: ০৮:৫০, ১ এপ্রিল ২০২০

খেলা নেই, তবুও অনুশীলনে ফিটনেস ধরে রাখার প্রচেষ্টা তাদের ...

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বজুড়ে চলছে কোভিড-১৯-এর ত্রাসের রাজত্ব। এর থেকে বাইরে নয় বাংলাদেশও। প্রাণঘাতী ছোঁয়াচে এই ভাইরাস থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করতে সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, যার একটি হচ্ছে দেশের ভেতরে সব ধরনের খেলাধুলা বন্ধ করে দেয়া। দেশের ফুটবলও তাই। বন্ধ হয়ে গেছে মহিলা ও পুরুষ ফুটবল লিগ। যদিও কয়েকটি পুরুষ ফুটবল ক্লাব লিগ বন্ধের পরেও তাদের খেলোয়াড়দের অনুশলিন কার্যক্রম চালু রেখেছিল। এখন সেটিও বন্ধ হয়ে গেছে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব উপলক্ষ্যে বন্ধ জাতীয় দলের ক্যাম্পও। ক্লাবের বিদেশী ফুটবলারা অনেকেই চেষ্টা করছেন নিজ নিজ দেশে চলে যেতে, যারা যেতে পারেননি, তারা ঢাকায় আটকা পড়েছেন। আর স্থানীয় ফুটবলাররা চলে গেছেন যে যার বাড়িতে। খেলা নেই। ঘরে বসে থাকলে দ্রুতই বেড়ে যাবে ওজন। এটা যাতে না হয়, সেজন্য দরকার ব্যায়াম বা অনুশীলন। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, তাতে করে ঘরের বাইরে গিয়ে মাঠে অনুশীলন করার সুযোগই নেই। তাহলে উপায়? তাই বলে কি হাত-পা গুটিয়ে চুপচাপ ঘরে বসে কাটাতে হবে অখণ্ড অবসর? এত প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও এটা মেনে নিতে চান না অনেকেই। এর মাঝেই ফিটনেস ধরে রাখতে বিকল্প পদ্ধতিতে পদক্ষেপ নিয়ে অনুশীলন জালিয়ে যাচ্ছেন কয়েক ফুটবলার। গৃহবন্দী ফুটবলারদের মূল কাজটাই এখন ফিটনেস ধরে রাখা। ক্লাবে যেমন অনুশীলনের সুযোগ-সুবিধা থাকে, স্বভাবতই বাড়িতে সেগুলো নেই। তাই শরীর মেদহীন ফিট থাকতে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টাই ভরসা তাদের। আবাহনীর স্ট্রাইকার নাবীব নেওয়াজ জীবন ঘরেই ফিটনেস নিয়ে কাজ করছেন, করোনার কারণে এখন সবকিছু বন্ধ। কখন কী হয়ে যায়। তবে আমরা সতর্ক হয়ে চলাফেরা করছি। ফিটনেস নিয়ে কাজও হচ্ছে। সীমাবদ্ধতার মধ্যে যতটুকু সম্ভব নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টা করছি, যেন লিগ শুরু হলে ফিট হয়েই খেলতে পারি। ক্যাম্প বন্ধ। তবু ক্লাব টেন্ট ছাড়েননি জাতীয় দলের মিডফিল্ডার সোহেল রানা। দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি থাকায় বাইরের সব জিম বন্ধ। নিজেকে ফিট রাখতে পরিবার থেকে দূরে নিঃসঙ্গ সময় পার হচ্ছে সোহেল রানার। নারায়ণগঞ্জে বাড়ি বসুন্ধরা কিংসের ডিফেন্ডার তপু বর্মণের। বাসার মধ্যে ও আশপাশের জায়গায় অনুশীলন করে ফিটনেস ধরে রাখার অভিযানে এই ডিফেন্ডার, ক্লাবে আমরা যেভবে অনুশীলন করি, তা বাসায় সম্ভব নয়। তবে নিজেকে ফিট রাখার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। ট্রেনিংয়ের মধ্যে আছি। সাইক্লিং, জগিং, বালির মধ্যে রানিং করে ফিটনেস ধরে রাখার চেষ্টা করছি। করোনার কারণে ঘরের বাইরে প্রয়োজন ছাড়া যাওয়া নিষেধ। তপুও যাচ্ছেন না, তবে কিছু সময়ের জন্য সতর্কতার সঙ্গে বাসার পাশে দৌড়ের কাজটা সারছেন, ‘করোনার কারণে ঘরের বাইরে সেভাবে যাচ্ছি না। তবে যখন লোকজন থাকে না তখন শুধু রানিং করে আসি। মাস্ক পরা থাকে। সব রকমের সতর্কতা অবলম্বন করেই অনুশীলন করছি। মাঠের খেলা নেই করোনায় অনিশ্চিত ভবিষ্যত যেখানে সঙ্গী। টাঙ্গাইলে ব্যক্তিগত ভাবে তাইতো ফিটনেস নিয়ে কাজ করছেন জাতীয় দলের আরেক ডিফেন্ডার রায়হান হাসান। মেনে চলছেন পরিমিত খাদ্যাভাসের রুটিনও। সুশান্ত ত্রিপুরা ইনজুরির কারণে মিস করেছেন লিগের ম্যাচ। তাইতো এই অপ্রত্যাশিত ছুটিটাকে রিকভারি সেশন করেই কাজে লাগাচ্ছেন কক্সবাজারের এই ফুটবলার। শেখ রাসেল গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা ফিটনেস নিয়ে সবসময় সচেতন। ঘরে বসে তিনিও ফিটনেস নিয়ে কাজ করছেন। যদিও কাজটা সহজ হচ্ছে না তার জন্য, ঘরে বসে থেকে ফিটনেস ধরে রাখা কঠিনই বলব আমি। তারপরও ফিটনেস ধরে রাখতে যতটা পারি চেষ্টা করছি। হালকা অনুশীলন, রানিং এগুলো করছি নিয়মিত। লিগ ফের শুরু হলে ফিট হয়েই পোস্টের নিচে দাঁড়াতে চাই। অন্য খেলোয়াড়েরাও যে যার বাড়িতে কিংবা বাড়ির আশপাশে গিয়ে নিজেকে ফিট রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আর না করে উপায়ও বা কী। ফিটনেস কমলে যে জরিমানা দিতে হবে! শুধু ক্লাব নয়, জাতীয় দলের কোচ জেমি ডেরও সজাগ দৃষ্টি তাদের ওপরে।
×