
ছবিঃ সংগৃহীত
আপনার জীবনের সবচেয়ে ছোট দিনটি হয়তো আসছে আগামী জুলাই বা আগস্টে! পৃথিবী শিগগিরই তার ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুততম ঘূর্ণন সম্পন্ন করতে যাচ্ছে—এমনটাই আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, পৃথিবীর এই হঠাৎ গতি বৃদ্ধির কারণ এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট নয়।
বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্রাহাম জোনস Time and Date নামক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট দিনটি হতে পারে ৯ জুলাই, ২২ জুলাই অথবা ৫ আগস্ট। যদি তা ঘটে, তাহলে ২০২৪ সালের রেকর্ডকেও ভেঙে ফেলবে এই বছর। উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ জুলাই পৃথিবী রেকর্ড ১.৬৬ মিলিসেকেন্ড কম সময় নিয়ে নিজের অক্ষরেখা ঘুরে শেষ করেছিল—যেটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ছোট দিনের রেকর্ড।
ঘূর্ণনের গতি কেন বাড়ছে?
গবেষণায় দেখা গেছে, চাঁদের কক্ষপথ যখন নিরক্ষরেখা থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ উত্তর বা দক্ষিণে সরে যায়, তখন পৃথিবীর ঘূর্ণন কিছুটা বাড়ে। যদিও এই পার্থক্য এতটাই সূক্ষ্ম যে তা মিলিসেকেন্ডে মাপা হয় এবং এজন্য প্রয়োজন হয় অত্যন্ত নিখুঁত পারমাণবিক ঘড়ি।
বিজ্ঞানীরা জানান, ১৯৭৩ সালে ঘূর্ণনের দৈর্ঘ্য পরিমাপ শুরুর পর থেকে ২০২০ সাল থেকে প্রতিটি বছরেই সর্বনিম্ন দৈর্ঘ্যের দিন রেকর্ড করা হচ্ছে।
তবে, এই দ্রুত ঘূর্ণনের সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা এখনো পাওয়া যায়নি। সমুদ্র এবং বায়ুমণ্ডলভিত্তিক মডেলগুলো এই বিপুল পরিবর্তন ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ হচ্ছে।
চাঁদের প্রভাব কি দায়ী?
বিজ্ঞানীরা বলেন, সাধারণত চাঁদ পৃথিবীর গতি ধীর করে দেয়। প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে একদিন ছিল মাত্র ৩ থেকে ৬ ঘণ্টার। চাঁদের জোয়ারভাটা বা ট্রাইডাল ফোর্স পৃথিবীর গতি কমিয়ে দেয় এবং সে নিজেও পৃথিবীর ঘূর্ণনশক্তির একটি অংশ শোষণ করে। তাই চাঁদ গতি কমাতে ভূমিকা রাখলেও, হঠাৎ করে এর বিপরীত আচরণের কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা।
এই ঘটনাটি পৃথিবীর ঘূর্ণন ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
বিশ্ববাসী তাই এখন অপেক্ষায় রয়েছে—এই ‘ক্ষুদ্রতম দিন’ সত্যিই আসে কি না, আর যদি আসে, তাহলে তার গভীরে লুকিয়ে থাকা বৈজ্ঞানিক রহস্য কী।
ইমরান