
ছবি: সংগৃহীত
প্রথমবারের মতো দক্ষিণ মেরুর অন্ধকার গভীর সমুদ্রে জীবিত অবস্থায় ধরা পড়েছে বিরল প্রজাতির এক লাল রঙের স্কুইড। ‘অ্যান্টার্কটিক গোনেট স্কুইড’ (Gonatus antarcticus) নামের এই গভীর সমুদ্রের প্রাণীকে প্রায় ৭,০৬০ ফুট গভীরে ক্যামেরাবন্দি করেছেন গবেষকরা। জাতীয় ভূগোল সংস্থা ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
২০২৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর, অর্থাৎ বড়দিনের দিন, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক শ্মিড ওশান ইনস্টিটিউটের গবেষণা জাহাজ আরভি ফালকর (টু) থেকে চালিত একটি রিমোট অপারেটেড সাবমেরিন বা আরওভি’র মাধ্যমে এই বিরল মুহূর্ত ধারণ করা হয়।
গবেষণা দলের সদস্য আর্জেন্টিনার ইনস্টিটিউটো দে ডাইভারসিদাদ ওয়ি একোলজিয়া অ্যানিমালের পোস্টডক্টরাল গবেষক মানুয়েল নভিয়ো বলেন, ‘এটাই ছিল আমাদের মিশনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।’
বরফের বাধা, তারপর ইতিহাস
প্রথমে গবেষকরা সমুদ্রের গভীর ও অজানা অঞ্চল পাওয়েল বেসিন-এ অভিযান চালাতে চেয়েছিলেন, যেটি প্রায় ৯,৮০০ ফুট গভীর এক বিশালতল সমুদ্রভূমি। তবে দ্রুত গতিতে ভেসে আসা বরফের কারণে তারা অভিযানে বিলম্ব ঘটান।
নভিয়ো জানান, ‘বরফের ব্লকগুলো এত দ্রুত সরে যাচ্ছিল যে সব জাহাজের জন্যই বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল পরিস্থিতি। তাই আমাদের পুরো পরিকল্পনাই বদলাতে হয়।’
পরদিন, তারা বেছে নেন পাওয়েল বেসিনের এক প্রান্তিক এলাকা। সেখানেই জীবন্ত অবস্থায় প্রথমবারের মতো দেখা মেলে এই রক্তলাল স্কুইডটির।
তিন ফুট লম্বা, এতোদিন দেখা গিয়েছিল শুধু মৃত অবস্থায়
এই স্কুইডটির দৈর্ঘ্য প্রায় তিন ফুট। এটি শুধু অ্যান্টার্কটিকার হিমশীতল পানিতেই পাওয়া যায়। তবে এতদিন শুধু মৃত স্কুইডের নমুনা বা জালে আটকে পড়া দেহের মাধ্যমে এর অস্তিত্ব জানা গিয়েছিল। কখনোই জীবন্ত অবস্থায় দেখা যায়নি প্রাণীটিকে।
ভিডিওটি পাঠানো হয় নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির ল্যাব ফর সেফালোপড ইকোলজি অ্যান্ড সিস্টেমেটিকস-এর প্রধান ড. ক্যাট বোলস্টাড-এর কাছে। তিনি নিশ্চিত করেন যে এটি Gonatus antarcticus প্রজাতির স্কুইড।
ড. বোলস্টাড বলেন, ‘আমার জানা মতে, এই প্রজাতির জীবন্ত স্কুইডের এটিই প্রথম ভিডিও প্রমাণ। সারা বিশ্বেই এটাই প্রথম।’
এই আবিষ্কার শুধু বিজ্ঞানীদের জন্য নয়, মহাসাগর সম্পর্কিত গবেষণায়ও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভিডিও দেখুন: https://twitter.com/i/status/1932487171706908848
সূত্র: এনডিটিভি।
রাকিব