ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পৃথিবীর অভ্যন্তরে জ্বালানির বিশাল ভাণ্ডার, ১ লক্ষ ৭০ হাজার বছরের চাহিদা মেটাতে সক্ষম!

প্রকাশিত: ২৩:১৪, ১০ জুন ২০২৫; আপডেট: ২৩:১৪, ১০ জুন ২০২৫

পৃথিবীর অভ্যন্তরে জ্বালানির বিশাল ভাণ্ডার, ১ লক্ষ ৭০ হাজার বছরের চাহিদা মেটাতে সক্ষম!

ছ‌বি: সংগৃহীত

বিজ্ঞানীরা এক নতুন আবিষ্কারে জানিয়েছেন, পৃথিবীর গভীরে লুকিয়ে থাকা প্রাকৃতিক হাইড্রোজেন গ্যাস পৃথিবীকে প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার বছর ধরে শক্তি দিতে সক্ষম।

অক্সফোর্ড, ডারহাম ও টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সম্প্রতি জানিয়েছেন, পৃথিবীর ভূগর্ভে কোথায় এবং কীভাবে এই প্রাকৃতিক হাইড্রোজেন গ্যাস খুঁজে পাওয়া যায়, তার একটি স্পষ্ট গাইডলাইন বা "রেসিপি" তারা তৈরি করেছেন।

এই গ্যাস তৈরি হয় তখন, যখন কিছু নির্দিষ্ট ধরনের শিলা দীর্ঘ সময় ধরে পানির সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশ নেয়। যদি এই গ্যাস সঠিক ধরনের ভূস্তরের নিচে আটকে থাকে, তাহলে এটি একটি ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভারে পরিণত হতে পারে।

এর আগে বিজ্ঞানীরা জানতেন না কোথায় এই গ্যাসের মজুদ থাকতে পারে। কিন্তু নতুন গবেষণায় বোঝা গেছে— কোন ধরনের শিলা, কীভাবে গ্যাস চলাচল করে এবং কী ধরনের ভূগঠন এই গ্যাস আটকে রাখতে পারে— এই সব বিষয়ে নির্দিষ্ট ধারণা পাওয়া গেছে।

প্রাকৃতিক হাইড্রোজেন একটি পরিষ্কার ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি। বর্তমানে হাইড্রোজেন উৎপাদনের জন্য মূলত জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভর করতে হয়, যার ফলে বিপুল পরিমাণে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়। কিন্তু এই ভূগর্ভস্থ হাইড্রোজেন ব্যবহার করলে সেই নির্গমন এড়ানো যাবে।

গবেষণা বলছে, এই ধরনের হাইড্রোজেন রিজার্ভার বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায়, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও রয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু কোম্পানি এই খনি আবিষ্কারের জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছে।

এই হাইড্রোজেন গ্যাস যানবাহন, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও শিল্পপ্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা যাবে। এটি অ্যামোনিয়া ও মিথানলের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক তৈরিতেও ব্যবহৃত হবে, যা সার ও অন্যান্য শিল্পজাত পণ্যে ব্যবহৃত হয়।

যদি বড় মাপের রিজার্ভ খুঁজে পাওয়া যায় এবং তা নিরাপদে ও সাশ্রয়ীভাবে উত্তোলন করা যায়, তাহলে এটি জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে এবং বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।

সূত্র: নেচার জার্নাল

এম.কে.

×