ছবি: সংগৃহীত
পৃথিবীর কেন্দ্র যেন লুকিয়ে রাখা এক মহামূল্য সম্পদের ভান্ডার! জার্মানির গোটিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, পৃথিবীর গভীর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বিপুল পরিমাণ সোনা। শুধু সোনাই নয়, রয়েছে রুথেনিয়ামের মতো দুষ্প্রাপ্য ও মূল্যবান ধাতুও।
বিজ্ঞানীরা জানান, পৃথিবীর কেন্দ্র প্রায় ৬ হাজার ৪০০ কিলোমিটার গভীরে। এই অঞ্চলটি গলিত লোহা ও নিকেলে পরিপূর্ণ এবং তাপমাত্রা প্রায় ৫ হাজার ৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই উত্তপ্ত কেন্দ্র থেকেই উৎপন্ন হয় পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্র। এতদিন এই জায়গাটিকে শুধু এক আগ্নেয় ‘অভ্যন্তরীণ কোর’ হিসেবেই বিবেচনা করা হতো। তবে এবার গবেষকরা বলছেন, এখানেই লুকিয়ে রয়েছে সোনাসহ অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর বিশাল মজুত।
গোটিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-রসায়নবিদ নিলস মেসলিং জানান, হাওয়াই দ্বীপের আগ্নেয়গিরি থেকে উঠে আসা লাভার নমুনা বিশ্লেষণ করে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। লাভার মধ্যে রুথেনিয়াম ১০০ আইসোটোপের অস্বাভাবিক মাত্রা পাওয়া গেছে, যা স্পষ্টতই পৃথিবীর গভীর কেন্দ্র থেকে উঠে এসেছে।
গবেষকদের ভাষ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২ হাজার ৯০০ কিলোমিটার নিচে রয়েছে একটি ধাতব স্তর, যেখানে পৃথিবীর মোট সোনার ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশের বেশি আটকে রয়েছে। কোটি কোটি বছর ধরে এই সোনা ও অন্যান্য ধাতু ভূকম্পন ও গলনের ফলে আস্তে আস্তে পৃষ্ঠের দিকে উঠে আসছে।
বিজ্ঞানীরা বলেন, প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে পৃথিবীর গঠনের সময় এই ধাতুগুলো কেন্দ্রে আটকে গিয়েছিল। এখন সেই কেন্দ্র থেকে গভীর ভূস্তরের ছিদ্র বা চ্যানেলের মাধ্যমে ধীরে ধীরে ওপরে উঠে আসছে। এই গবেষণা শুধু সোনার উৎস নয়, বরং পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠন এবং ভূপ্রক্রিয়া নিয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
সূত্র: ডেইলি মেইল।
রাকিব
