ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ময়মনসিংহ-৯

আওয়ামী লীগ চায় জয়, বিএনপির মিশন ঘুরে দাঁড়ানো

বাবুল হোসেন, ময়মনসিংহ / মজিবুর রহমান ফয়সাল, নান্দাইল

প্রকাশিত: ০০:৪১, ১৫ মার্চ ২০২৩

আওয়ামী লীগ চায় জয়, বিএনপির মিশন ঘুরে দাঁড়ানো

জমে উঠেছে ময়মনসিংহ-৭ (নান্দাইল) আসনের নির্বাচনী রাজনীতি

জমে উঠেছে ময়মনসিংহ-৭ (নান্দাইল) আসনের নির্বাচনী রাজনীতি। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে প্রধান তিন দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রায় দেড় ডজন মনোনয়নপ্রত্যাশী নির্বাচনী মাঠে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় থাকায় এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নকে পুঁজি করে আওয়ামী লীগ চাইছে আসনটিতে তাদের বিজয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে। অন্যদিকে ত্রিধারায় বিভক্ত বিএনপি চাইছে ঘুরে দাঁড়াতে। 
আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার কারণে নান্দাইলে সড়ক যোগাযোগ, ব্রিজ কালভার্ট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভৌত অবকাঠামোসহ বিদ্যুতায়নের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়নকেই পুঁজি করে ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তবে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা দুটি ধারায় বিভক্ত হয়ে দলীয় কার্যক্রম চালাচ্ছে। বর্তমান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহীন ও সাবেক এমপি অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আব্দুস সালামের নেতৃত্বে দুই ধারায় বিভক্তিতে জড়িয়ে পড়েছেন দলের নেতাকর্মীরা।

অপরদিকে দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকার কারণে বিএনপি এখন চার ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নান্দাইলে কঠিন রাজনৈতিক মেরুকরণ হবে। জয় ঘরে তুলতে চাইলে দলীয় কোন্দল মেটাতে হবে বড় দুই দলকেই। মূলত প্রার্থী বাছাইয়ের ওপরই নির্ভর করছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জয়-পরাজয়।
ময়মনসিংহ-৯ নান্দাইল আসনে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে সারাদেশে নৌকার প্রার্থীদের জয়-জয়াকার অবস্থার মধ্যেও সারাদেশে মাত্র দুটি আসনে নৌকার প্রার্থীরা পরাজিত হন। এর একটি ছিল ময়মনসিংহের নান্দাইল ও ঈশ্বরগঞ্জ নিয়ে গঠিত আসন। এই আসনে এমপি নির্বাচিত হয়েছিল মুসলীম লীগের নূরুল আমিন। তবে এখন আর আগের অবস্থা নেই। নতুন প্রজন্মের তরুণ ভোটাররা সেই ধারণা পাল্টে দিয়েছে। এখন বলা যায়, নান্দাইলের মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এই দুই ধারায় বিভক্ত। 
উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে ময়মনসিংহ-৯ নান্দাইল আসন গঠিত। আসনটিতে মোট ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৮৮ হাজার ১২৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ দুই হাজার ৯৩২ জন এবং নারী ভোটার এক লাখ ৮৫ হাজার ১৮৯ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর ভোটার সংখ্যা মাত্র সাতজন। 
গত ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে এই আসনে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী রফিক উদ্দিন ভুঁইয়া। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে এই আসনে বিজয়ী হন বিএনপির প্রার্থী খুররম খান চৌধুরী। গত ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে ফের এই আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় ও জাঁদরেল প্রার্থী রফিক উদ্দিন ভুঁইয়া। গত ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে দল বদল করে জাতীয় পার্টির প্রার্থী খুররম খান চৌধুরী এই আসনে এমপি নির্বাচিত হন। গত ১৯৯১ সালের নির্বাচনে সাবেক এমপি খুররম খান চৌধুরীর সহোদর ভাই আনওয়ারুল হোসেন খান চৌধুরী এই আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়ে এমপি নির্বাচিত হন।

গত ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত ভোটে বিজয়ী হন বিএনপির জহুরুল ইসলাম খান। পরবর্তীতে গত ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনের ভোটে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম। বিগত ২০০১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হন বিএনপির প্রার্থী খুররম খান চৌধুরী। গত ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই আসনে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহীন। এই পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, স্বাধীনতার পর অনুষ্ঠিত ১০টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছয়বার, বিএনপি তিনবার ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী একবার এই আসনে বিজয়ী হয়েছেন। 
ময়মনসিংহ-৯ নান্দাইল আসনে আওয়ামী লীগের কোন্দল গ্রুপিংয়ে এখন আর কোনো লুকোছাপা নেই। ওপেন সিক্রেট এই কোন্দল গ্রুপিংয়ে জর্জরিত নান্দাইল আওয়ামী লীগ। মূলত এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করেই এই কোন্দলের সূত্রপাত। প্রকাশ্যে দুই ধারায় বিভক্ত নান্দাইল আওয়ামী লীগের এক গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক এমপি অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আব্দুস সালাম। আরেক পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহীন এমপি। এই দুই নেতার সঙ্গেই আছেন দলের তৃণমূল নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। 
উপজেলা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে এই বিভক্তি দৃশ্যমান। আলাদা বলয় ও কোন্দলের কারণে কর্মসূচিও পালিত হয় আলাদাভাবে। এ নিয়ে বিব্রত দলের মূল ধারার নেতৃবৃন্দ। প্রকাশ্যে মুখে কিছু বলতে না পারলেও তলে তলে দুই নেতার প্রতি ক্ষুব্ধ বেশির ভাগ নেতাকর্মী। আওয়ামী লীগের তৃনমূল ও মূল ধারার নেতাকর্মীদের দাবি, আগামী নির্বাচনের আগে এই বিরোধ মেটাতে না পারলে নান্দাইল আসন হাতছাড়া হতে পারে। তবে দলকে ঐক্যবদ্ধ করা গেলে এই আসনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত। 
২০২২ সালের পহেলা ডিসেম্বর জেলা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে মেজর জেনারেল আব্দুস সালামকে সভাপতি ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম শাহানকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। নবগঠিত এই কমিটিকে মেনে নিতে পারছেন না আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহীন এমপির অনুসারী নেতাকর্মীরা। ফলে পুরনো বিরোধ ও বিভক্তি আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে নান্দাইল আওয়ামী লীগে।
অপরদিকে বিগত ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির বিভক্তি প্রথমবারের মতো দৃশ্যমান হয়। ওই সময়ে সাবেক এমপি খুররম খান চৌধুরী ও সৌদি আরব বিএনপির নেতা এ কে এম রফিকুল ইসলাম দলীয় মনোনয়ন চান। খুররম খান চৌধুরী এ সময় মনোনয়ন পাওয়ার পর রফিকুল ইসলাম ও তার অনুগত নেতাকর্মীরা আলাদা বলয় তৈরি করেন। এরপর থেকে খুররম খান চৌধুরী ও রফিকুল ইসলাম এই দুই নেতার কর্মী-সমর্থকরা পৃথক বলয়ে দলীয় কার্যক্রম চালাতে থাকেন। সাবেক এমপি খুররম খান চৌধুরী মৃত্যুবরণ করলে তার পুত্র নাসের খান চৌধুরী দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে পিতার বলয় ধরে রেখে আলাদা দলীয় কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন।

পরবর্তীতে গত ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে নতুন করে রাজনীতিতে আসেন বিএনপির সাবেক এমপি আনওয়ারুল হোসেন খান চৌধুরীর পুত্র তথ্য প্রযুক্তিবিদ ইয়াসের খান চৌধুরী। তরুণ এই নেতাকে বিএনপি বৈদেশিক সম্পর্ক উন্নয়ন কমিটির সদস্য ও ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য করেছে। বর্তমানে নাসের খান চৌধুরী উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য। 
বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম বছরের বেশির ভাগ সময় সৌদি আরবে থাকায় তার ছোট ভাই পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য এ এফ এম আজিজুল ইসলাম পিকুল দলীয় কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

বিএনপির এই গ্রুপিং-কোন্দলের সুবাদে আলাদা বলয় তৈরির চেষ্টা করছেন উত্তর জেলা বিএনপির আরেক সদস্য মামুন বিন আবদুল মান্নান। ইয়াসের খান চৌধুরী, নাসের খান চৌধুরী, এ এফ এম আজিজুল ইসলাম পিকুল ও মামুন বিন আবদুল মান্নানের মধ্যে দলীয় বিরোধ প্রকাশ্য। প্রত্যেকেই দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করেন আলাদাভাবে। বিভক্তির এই ঢেউ আছড়ে পড়ছে তৃণমূলেও। ফলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও বিভ্রান্ত। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির এই চার নেতাই দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। বিএনপির তৃণমূলের কর্মীরা মনে করেন, এ অবস্থা চলমান থাকলে তার প্রভাব পড়বে আগামী নির্বাচনে। বিরোধ না মিটলে আসনটি পুনরুদ্ধার করা বিএনপির জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়বে।
নান্দাইলের এই আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হচ্ছেন- বর্তমান এমপি আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন, সাবেক এমপি ও নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আব্দুস সালাম, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক চৌধুরী স্বপন, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পাবলিক প্রসিকউিটর-পিপি অ্যাডভোকেট কবির উদ্দিন ভূঁইয়া, হাইকোর্টের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আব্দুল হাই, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোস্তাফিজুর রহমান খান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা সালাউদ্দিন হুমায়ূন, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা জালাল উদ্দিন মাস্টার ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক নেতা শাহাজাহান কবির সুমন।
মনোনয়নপ্রত্যাশী বর্তমান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহীন এমপি জনকণ্ঠকে জানান, আমার মেয়াদে এলাকার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার রেকর্ড উন্নয়ন করেছি। নান্দাইল উপজেলায় এখন আর কোনো সড়ক পাকাকরণের বাকি নেই বললেই চলে। ১৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার ১৭৬ কিলোমিটার সড়ক পাকা করা হয়েছে। এর বাইরে ১৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে এলজিইডির গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার ১০৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করা হয়েছে। এলাকার ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ করে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে পূর্ণতা দিয়েছি। এর মধ্যে ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার নরসুন্দা নদীর ওপরসহ এলাকায় একাধিক ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত শতভাগ বিদ্যুতায়ন করতে সক্ষম হয়েছি। 
মনোনয়নপ্রত্যাশী নান্দাইল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক চৌধুরী স্বপন গতবারের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন চেয়েছিলেন, কিন্তু পাননি। তারপরও দমে যাননি তিনি। মনোনয়ন লাভের আশায় এলাকায় দলের নেতাকর্মী ও সমর্থদের সারা বছর পাশে থেকেছেন। তাদের জন্য কাজ করেছেন। করোনা মহামারির সময় এলাকাবাসী ও দলের নেতাকর্মীদের জন্য সাধ্যমতো সহায়তা করেছেন। আগামী নির্বাচনেও মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন এই পরিশ্রমী নেতা।

তিনি বলেন, নান্দাইল আওয়ামী লীগ জেনারেল সালাম ও এমপি তুহীন এই দুই ধারায় বিভক্ত থাকলেও আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে তার জন্য কাজ করে বিজয় নিশ্চিত করবে। এমপি তুহীনের মেয়াদে বর্তমান সরকারের বরাদ্দে চোখের পড়ার মতো যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে নান্দাইলে। এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না। আগামী নির্বাচনে উন্নয়নের এই প্রভাব ভোটে পড়বে বলে জানান তিনি।
এদিকে, বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হচ্ছেনÑ সাবেক এমপি আনওয়ারুল হোসেন খান চৌধুরীর পুত্র ও বিএনপির বৈদেশিক সম্পর্ক উন্নয়ন কমিটির সদস্য ইয়াসের খান চৌধুরী, সাবেক এমপি খুররম খান চৌধুরীর পুত্র নান্দাইল উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাসের খান চৌধুরী, সৌদি আরব বিএনপি নেতা শিল্পপতি একেএম রফিকুল ইসলাম ও মালয়েশিয়ায় বিএনপির প্রকাশনা সম্পাদক মামুন বিন আবদুল মান্নান।
বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ইয়াসের খান চৌধুরী জনকণ্ঠকে জানান, আমার বাবা আনোয়ারুল হোসেন খান চৌধুরী এমপি ছিলেন। জিয়াউর রহমানের উপদেষ্টা ছিলেন। স্বাধীনতার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। ময়মনসিংহ জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। জিয়াউর রহমানের ঘনিষ্ঠভাজন হিসেবে আমার বাবা বিএনপির দুঃসময়ে দলের হাল ধরে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছিলেন। ক্লিন ইমেজ ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক প্রয়াত বাবার পথ ধরেই আমি দলের স্থানীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকসহ এলাকাবাসীর আপদে-বিপদে, সুখে-দুঃখে পাশে দাঁড়িয়েছি।

গত ১৪ বছর ধরে এলাকায় দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে কাজ করছি। এ সময় দলকে ঐক্যবদ্ধ করে গুছিয়েছি।  মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়া বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সাধ্যমতো সহায়তা দিচ্ছি। গতবার মনোনয়ন পেয়েছিলাম। কিন্তু নির্বাচন করেন আমার চাচা। আগামীতে মনোনয়ন চাইব বলে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে আমার। 
একই পরিবারের সদস্য চাচাত ভাই নাসের খান চৌধুরী মনোনয়ন চাইলে বিব্রত হবেন কি নাÑ এমন প্রশ্নে জানান, এ নিয়ে বিব্রত হওয়ার কিছুই নেই। দলের যে কেউ মনোনয়ন চাইতে পারেন। দল যাকে মনোনয়ন দেবে বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে বিজয়ী করতেই কাজ করবে। চাচাত ভাই নাসের খান চৌধুরী তো দেশের বাইরে থাকেন দীর্ঘদিন ধরে। এলাকাবাসীর সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগও নেই। মনোনয়ন চাইতে পারেন এমন কথা তিনি এখনো শোনেননি বলে জানান।
জাতীয় পার্টি থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম ভূঁইয়ার পুত্র হাসনাত মাহমুদ তালহা। জাসদ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা জাসদের সভাপতি অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন।

×