ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধের বিরুদ্ধে বার্তা

প্রকাশিত: ২৩:৩৯, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

যুদ্ধের বিরুদ্ধে বার্তা

.

বিশ্বমঞ্চে আরও একবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বনেতাসুলভ ভূমিকা রাখলেন। বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ককে জাতিসংঘ সম্মেলন কেন্দ্রে (ইউএনসিসি) এসকাপ হলে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য বিশ্ববিবেককে নাড়া দেবে বলে আমাদের বিশ্বাস। সকল প্রকার আগ্রাসন নৃশংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং যুদ্ধকেনাবলার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি তিনি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত স্থায়ী শান্তি নিরাপত্তা।

মহামারি করোনাভাইরাসে বিশ্ব বিপর্যস্ত হয়েছে নিদারুণভাবে। ওই দুঃসময়ে বিশ্বভ্রাতৃত্ব আরও সুদৃঢ় হওয়াটাই ছিল বাঞ্ছনীয়। বিবাদ-সংঘাত সর্বোপরি নির্বিচার যুদ্ধ পরিচালনা দূরীভূত হবে এমনটাই ছিল প্রত্যাশা। কিন্তু অচিরেই আমরা দেখলাম রুশ-ইউক্রেন সর্বাত্মক যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। বিশ্ব এখন এমন একটা পর্যায়ে উপনীত হয়েছে যে, যুদ্ধবিগ্রহ বিবদমান দুটি রাষ্ট্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। সেটি ছড়িয়ে পড়ছে যুদ্ধরত দেশগুলোর আশপাশে, এমনকি অন্য প্রান্তেও। বাস্তবতা হচ্ছে, পণ্য সরবরাহ অর্থনৈতিক লেনদেনের কারণে বিশ্বে একেকটি রাষ্ট্র বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তাই পূর্ববর্তী রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অধুনা উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের জন্যও সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুদ্ধের পক্ষে একটি যুক্তিও দাঁড় করানো যাবে না। কিন্তু যুদ্ধের বিপক্ষে বিদ্যমান হাজারো যুক্তি। যুদ্ধ কেবল ধ্বংসই বয়ে আনে। বিষয়টি একজন বিশ^নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুধাবন করেছেন বলেই যুদ্ধের বিরুদ্ধে তিনি বিশ্ববাসীকে বার্তা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধরনের যুদ্ধ, আগ্রাসন নৃশংসতা বন্ধ করার জন্য বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, গাজায় ইসরাইলের হামলা বিশেষ করে নারী শিশুদের হতাহতের সংখ্যা বাড়াচ্ছে, কিন্তু আলোচনা শান্তি আনতে পারে। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনে যুদ্ধ গণহত্যা চলছে। এটা বন্ধ করতে হবে। যুদ্ধ কোনো সমাধান আনতে পারে না।

এক দেশের সঙ্গে কেবল অন্য দেশের বৈরিতাই নয়, নিজ দেশের ভেতরেও অশান্তি থাকতে পারে। সেটিরও সমাধান চাই সংঘাতবিরোধী মনোভাব তথা শান্তি থেকে। প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা তাঁর উদ্যোগ শাসনামলে ১৯৯৭ সালের ডিসেম্বর বাংলাদেশেপার্বত্য শান্তি চুক্তি কথা উল্লেখ করেন, যা জনগণের মধ্যে শান্তি ফিরিয়ে এনেছে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আঞ্চলিক বিরোধ উত্তেজনা নিষ্পত্তি করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখন্ডতার প্রতি আমাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধা সম্মান দেখাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিশেষ করে আসিয়ানকে মিয়ানমারের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। উল্লেখ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ২৪ এপ্রিল ছয় দিনের সরকারি দ্বিপক্ষীয় এবং বহুপক্ষীয় সফরে যান। আমাদের প্রত্যাশা, প্রধানমন্ত্রীর এই সফর ফলপ্রসূ হবে।

×