ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

টরন্টোর চিঠি

অসহনশীলতা-অস্থিরতার ডামাডোলে বিশ্ব

ড. শামীম আহমদে

প্রকাশিত: ২০:৫১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

অসহনশীলতা-অস্থিরতার ডামাডোলে বিশ্ব

দেশে সাম্প্রতিক সময়ে দেখলাম ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার

দেশে সাম্প্রতিক সময়ে দেখলাম ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ বিষয়ক বিতর্ক আবার জেগে উঠেছে। মূলত এক ব্যক্তি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মুসলমানদের সঙ্গে তাদের ধর্মীয় আচারে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, কেবল পুজো আর হোলিতে মুসলমানরা গেলেই সেটি সর্বজনীন হয় না, সনাতন ধর্মালম্বীদেরও মুসলমানদের আয়োজনে এসে যুক্ত হতে হবে। তার এই অদ্ভুত বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সনাতন ও ইসলাম ধর্মালম্বী অনেকেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, প্রতিবাদ করেছেন।

সম্ভবত এই প্রথমবার একসঙ্গে অনেক সনাতন ধর্মালম্বীদের বলতে দেখলাম যে, তারা তো মুসলমানদের তাদের পুজো ম-পে বা হোলি উৎসবে জোর করে নিয়ে আসেন না। মুসলমানদের কাছে যা উৎসব, সেটি সনাতন ধর্মালম্বীদের কাছে ধর্মীয় আচার। সংখ্যালঘু হিসেবে তাদের আচারে মুসলমানদের এই অংশগ্রহণ তারা প্রতিবাদ করেন না, কিন্তু সেটির জন্য আবার দায় নিতেও প্রস্তুত নন।

আমার কাছে তাদের এই বক্তব্য যৌক্তিক মনে হয়েছে। ধর্ম একটি প্রবল বিশ্বাসের বিষয়, এখানে বৈজ্ঞানিক কোনো ব্যাখ্যা নেই। যে জিনিসের ভিত্তি হচ্ছে বিশ্বাস, তা নিয়ে কেন প্রকাশ্যে এত বিভেদ, এত বিপ্লব। একটি সভ্য দেশের ধর্মের অনুশীলন হবে নিভৃতে আর রাজনীতির অনুশীলন হবে প্রকাশ্যে, এমনটিই কাম্য। কিন্তু আমাদের এমন এক দুর্ভাগা দেশ, যেখানে ধর্মের পালন হয় পাড়া-প্রতিবেশীকে জানিয়ে আর রাজনীতির চর্চা হয় আন্ডারগ্রাউন্ডে।

রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য প্রকাশ্যে আন্দোলন হয়, রাজনীতি না করাকে আমরা আভিজাত্যের অলংকার মনে করি, অন্যদিকে ধর্মীয় গোঁড়ামি, আগ্রাসনকে মনে করি ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক। জাতি হিসেবে কোথাও কোনো একটা বড় গলদ না থাকলে ধর্ম এবং রাজনৈতিক এই বৈপরীত্যময় অবস্থান তো অন্তত বাঙালি মধ্যবিত্তের জীবনে থাকার কথা ছিল না! 
পহেলা বৈশাখ নিয়ে আমার প্রায় সব স্মৃতিই প্রাক-বৈবাহিক। বিয়ের আগে আমি বেশ আয়েশি মানুষ ছিলাম। যমে-মানুষে টানাটানি ধরনের ঘটনা না হলে সকালে ঘুম থেকে ওঠা আমার জীবনের সবচেয়ে অপছন্দের কাজ। স্কুলে বাধ্য হয়ে উঠতে হয়েছে। তবুও মাঝে মাঝে সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারিনি, বা অসুস্থতার অজুহাতে ক্লাস ফাঁকি দিয়েছি। নটর ডেমে সে সুযোগ ছিল না। মতিঝিলে ক্লাসে যেতে হতো দুটো বাস পাল্টে, মিরপুর ৬ নাম্বার থেকে সকাল সাড়ে ৬টায়।

তাও মাঝে মাঝে হিসাব-নিকাশ হতো কয়টা ক্লাস মিস হলেও উপস্থিতির হার ৮০ শতাংশের ওপর থাকবে! সে অনুযায়ী যদি সকালের একটা দুটো ক্লাস মিস দেওয়া যায়!! ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে তাই বলতে গেলে বেহেশতের দরজা পেয়ে গেলাম। ক্লাস-টাস করা লাগে না। বছরে দুজন শিক্ষকের কাছ থেকে শুধু ৮০% ক্লাস করেছি- এই মর্মে সার্টিফিকেট আনলেই হয়। যেহেতু আবুল বারকাত স্যারের গুড লিস্টে ছিলাম, তাই একটা সার্টিফিকেট কনফার্ম।

অন্যটা যে কোনো একজন শিক্ষককে পটিয়ে নেওয়াই যেত। যেহেতু স্ট্যাটিসটিকসে দুর্বল ছিলাম, তাই ফরিদ স্যারের স্ট্যাটিসটিকসের সকাল ৮টার ক্লাসে গিয়েছিলাম দুই-একদিন। গিয়ে বুঝলাম তার পড়ানো বোঝা সম্ভব না, তখন সেই ক্লাসও বাদ দিলাম। তাই ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ঘুমটা খুব আনন্দের ছিল। দুপুর পর্যন্ত ঘুমিয়ে ক্যাম্পাসে যেয়ে আবুল বারকাত স্যার বা আকাশ স্যারের ক্লাসগুলো করতে বা হারুন স্যারের সঙ্গে আড্ডা দিতে ভালো লাগত। তারপর সন্ধ্যা বেলা রাজীব ভাইয়ের ঈঈউচঝ এ ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রজেক্ট করা।
বিয়ের পর অবশ্য সেই আনন্দ আর থাকল না। ব্র্যাকে চাকরি করা শুরু করেছি। আফগানিস্তান প্রজেক্টে বেশিদিন থাকা হলো না, কারণ বউ কনসিভ করেছে। রিসার্চ ডিভিসন অর্থাৎ জঊউতে জয়েন করলাম। বাসা নিকেতন, মহাখালীতে অফিস। সেই অফিসেও সকালে ঠিক সময়ে আসা আমার জন্য কঠিন ছিল। মাঝে মাঝেই আধঘণ্টা, একঘণ্টা দেরি হতো, অফিস ম্যানেজার মান্নান ভাই ঝাড়ি দিয়ে কারিগরি ত্রুটি দেখিয়ে ফর্মে স্বাক্ষর নিয়ে উপস্থিতি দিয়ে দিতেন, বেতন কাটা থেকে বেঁচে যেতাম। ওয়াটারএইডে দুর্ভাগ্যবশত দেশপ্রধান খায়রুল ইসলাম স্যারের মুখোমুখি ঘরে আমার অফিস। মাঝে মাঝে দেরি হয়ে যায়। সকাল বেলা খায়রুল স্যারের মেজাজ থাকে ভীষণ খারাপ। আফ্রিকান কফি পান করে দুপুরের খাবারের সময় আসলে স্যারের মুড আস্তে আস্তে ভাল হতো। তাই সকাল সকাল দেরি করে উনার সামনে দিয়ে যাওয়া ছিল বিপজ্জনক। সেই বিপদ থেকে বাঁচাতেন প্রতিষ্ঠানের বর্তমান দেশপ্রধান হাসিন আপা।

উনি অফিসে আসলে উনার রুমে ডেকে নিতেন। ব্যাগ-ট্যাগ উনার রুমে রেখে, কোনো একটা প্রকল্পের কাগজপত্র নিয়ে হন হন করে উনার রুম থেকে আমার রুমে যেতাম, যাতে খায়রুল স্যার মনে করেন সকালেই এসেছি, অন্য কাজ শেষে রুমে ঢুকছি! তবে সব জায়গায় জানপ্রাণ দিয়ে কাজ করতাম। রাত ২-৩টায় লেখালেখি ইমেইল ছিল আমার নিত্যসঙ্গী, তাই হয়তো ঘুমজনিত দেরি সবাই স্নেহের চোখে দেখতেন।

বিয়ের পর বিষয়টা পাল্টে গেল। বউ পহেলা বৈশাখ ব্যাপক পছন্দ করে। আমিও পছন্দ করি, তবে সেটা ঘুম ভেঙে, ভিড় ঠেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাওয়ার মতো না। আর যেহেতু সারারাত কাজ করতাম, ভোর ৫টায় সেজেগুজে নিকেতন থেকে রমনায় যাওয়ার ঝোঁক থাকত না। তাও বিবাহিত মানুষের দায়িত্ব পালনের স্বার্থে বিয়ের বছর আমি জীবনে প্রথম পহেলা বৈশাখে গেলাম স্ত্রী ও শ্যালিকা সান্নিধ্যে।

তারপর থেকে ঢাকায় যতদিন থেকেছি প্রতিবছর রমনায় গিয়েছি, মঙ্গল শোভাযাত্রা দেখেছি, চারুকলায় ঢুঁ মেরেছি। ঘামতে ঘামতে ঘুরে বেড়িয়েছি মেয়ের হাত ধরে। মেয়ের জন্মের প্রথম বছর কেবল ও আমাদের সঙ্গে যায়নি। কারণ, বয়স মাত্র ৫ মাস। কিন্তু তার ১ বছর ৫ মাস বয়স থেকে পরবর্তী ৭-৮ বছর আমরা নিয়মিত পহেলা বৈশাখের উৎসবে গিয়েছি। গরম, রোদ, ঘামে কষ্ট পেয়েছি, কিন্তু লাখো মানুষের মিলনমেলা, হৈচৈ, গান-বাজনা আমাদের আনন্দ দিয়েছে।

এখন কানাডায় এসেও আমার মেয়ে যে দেশের প্রতি, সংস্কৃতির প্রতি চমৎকার শ্রদ্ধাশীল, তার একটা বড় কারণ, মেয়েকে নিয়ে প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন করা বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশীদের নিজস্ব উৎসব মূলত তিনটি। স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ, বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর আর পহেলা বৈশাখ ১৪ এপ্রিল। আর বাকি যা যা উৎসব তা ধর্মীয় বা পশ্চিমা। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে একটা গোষ্ঠীর যে কোনো কিছুতেই আপত্তি। যে কোনো আনন্দে, যে কোনো উৎসবে, যে কোনো উদ্যাপনে।

বিশেষ করে গোঁড়া মুসলিমদের দেখলে মনে হয়, ইসলাম মানেই শোক, ইসলাম মানেই বুক চাপড়ে আহাজারি করা; যে কারণে অন্য ধর্মের মানুষ ধর্মীয় আচারের মধ্যেও আনন্দ খুঁজে পায়, সেখানে মুসলমানদের সব আয়োজনেই কোথায় যেন একটা চাপা শোক, হতাশা, সবই পরকালকেন্দ্রিক, এই জগতে কেবলই বিরহগাথা।আমি ধর্মীয় বিশেষজ্ঞ নই, কিন্তু আমার মনে হয় ধর্মের ব্যাখ্যায় অনেক লিবারেল হওয়ার সুযোগ আছে। ইসলাম প্রতিষ্ঠার সময় অনেক কিছুরই সুযোগ ছিল না, বিজ্ঞান ছিল অনেক পশ্চাৎপদ।

এখন কি আমরা মসজিদে মসজিদে লাখ লাখ এসি লাগানোর জন্য মানুষের কাছে চাঁদা তুলতে দেখি না? এই চাঁদা তোলার সময় কি কেউ বলে নবী (সাঃ) এর সময় মসজিদে ফ্যান ছিল না, এসি ছিল না, তাই আমাদেরও এসব লাগবে না? অথচ ইসলামের ওই সময়েও মেলার উদাহরণ পাওয়া যায়। পহেলা বৈশাখ কিংবা মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্যে আমি বাঙালির নিজস্ব উদ্যাপনটাকেই দেখি। সেই শোভাযাত্রায় প্যাঁচা বা হাতির মাথা থাকলেই কি আমি সেটার পূজারি হয়ে যাই? এতই সোজা?

২০২৪ সালে এসে একটা শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করলেই সেটা পুজো হয় না; হাতি যে হাতি, এবং প্যাঁচা যে প্যাঁচা - দেবতা নয়, সেটি কাউকে বোঝানোর জন্য বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রাই যথেষ্ট। পহেলা বৈশাখে দেশে থাকা আমি মিস করি। দিনের বেলার রোদকে নয়, কিন্তু মঙ্গল শোভাযাত্রার ওই আধঘণ্টা কিংবা সন্ধ্যার দিকে রাস্তার ধারে খাবার, শিশুদের হাতে দেশীয় খেলনা, শাড়ি-পাঞ্জাবির বাহার, চারিদিকে রঙ আর রঙকে।

এই সেমিস্টারে আমি যখন ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসা, অর্থনীতি ও লোকালয় পড়িয়েছি, তখন অন্তত ৩টা ক্লাস আমি তাদের পড়িয়েছি বাংলাদেশ নিয়ে। গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক, আড়ং আর বিকাশ ছিল আমার পড়ানোর মূল বস্তু। পড়ানোর সময় আমি শিক্ষার্থীদের বলেছি, তোমরা হয়তো এত এত বাংলাদেশ দেখে বিরক্ত হচ্ছো, কিন্তু আমি যখন সামাজিক ব্যবসা নিয়ে পড়াব, তখন আমাকে বাংলাদেশ নিয়ে পড়াতেই হবে।

গ্রামীণ ব্যাংক, বিকাশ, ব্র্যাক, আড়ং, গার্মেন্টস শিল্প- যে কেনো অর্থেই বিশ্বের জন্য সামাজিক অর্থনীতির উন্নয়ন মডেল। তাদেরকে আমি এ-ও বলি, বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ, কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সোমালিয়া, সৌদি আরবের কোনো মিল নেই। তোমাদের উচিৎ সুযোগ পেলে ঢাকার রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো, তাহলে তোমরা বুঝতে পারবে মডারেট মুসলিম দেশ মানে কী! তাহলে তোমরা বুঝতে পারবে আমরা কেন পাকিস্তানকে যুদ্ধে হারিয়েছি।

এই সেই বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশকে আমি পশ্চিমা বিশ্বে পড়াই, সেখানে পহেলা বৈশাখ উদ্যাপনের পথে কোনো অন্তরায় থাকতে পারে না। একটা ভদ্র সমাজের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ভিন্নমতকে শ্রদ্ধা করা, সহাবস্থান করা। যারা নিজের মত প্রতিষ্ঠার জন্য অন্যের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, তারা হোক ধর্মীয় মৌলবাদ কিংবা প্রগতিশীল মৌলবাদ- তাদের ঠেকিয়ে দেওয়ার জন্যই বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল।

আজকের লেখা শেষ করার আগে মধ্যপ্রাচ্যের একটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার উল্লেখ না করলেই নয়, যা কিনা মধ্যপ্রাচ্য ছাড়িয়ে পুরো বিশ্বকেই প্রভাবিত করতে পারে। গতকাল কানাডা সময় ১৩ এপ্রিল শনিবার ইরান ড্রোন আক্রমণ করেছে ইসরাইলে। উল্লেখ করা দরকার, এটি একটি প্রতিআক্রমণ মাত্র। ১ এপ্রিল ইসরাইল সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাসে বর্বরোচিত আক্রমণ করে। ইরান আজ তারই জবাব দিল। এই আক্রমণ করা ছাড়া ইরানের আর কোনো উপায় ছিল না, সে বিতর্ক হতে পারে।

ইসরাইল যেভাবে ফিলিস্তিনে নিরীহ জনগণের ওপর হামলা চালাচ্ছিল গত কয়েক মাস, তা মাঝে মাঝে ফিলিস্তিনের সীমানা ছাড়িয়ে আশপাশের জর্দান, লিবিয়া, মিসরেও ছড়িয়ে যাচ্ছিল। তারা হাসপাতাল, জাতিসংঘের সাহায্যকারী সংস্থার গাড়ি, ডাক্তার, সাংবাদিক সবাইকে নির্বিচারে হত্যা করছিল। এমতাবস্থায় ইরানের দূতাবাসে আক্রমণের জবাব না দিলে সেটি ইরানের জন্যই কেবল নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামিক রাষ্ট্রগুলোর জন্য একটা মানসিক পরাজয়ের কারণ হতো।

এই আক্রমণ ইরান কেবল প্রতিউত্তর হিসেবে দিয়েছে বলেই মনে হয়েছে। কেননা, আক্রমণের অনেক আগেই তারা ইসরাইলসহ আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোকে জানিয়েছে। তারা কোনো জনবসতিতে হামলা চালায়নি, কেবল মাত্র ইসরাইলের সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে এই আক্রমণ চালিয়েছে। তাদের পূর্ব ঘোষণার কারণে ইসরাইলের এন্টি-মিসাইল সিস্টেম, ইসরাইল এবং যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান ইসরাইলের সীমান্তের বাইরে থাকা অবস্থাতেই ইরানের প্রায় সব মিসাইল এবং ড্রোন ধ্বংস করে দিতে সক্ষম হয়।

ইরান জানিয়েছে, এই আক্রমণ কেবল ১ এপ্রিলের ইসরাইলি আক্রমণের প্রতিশোধ; তারা এর পরে আর কোনো আক্রমণ চালাবে না। তবে ইরানের এই অবস্থান বজায় থাকবে কেবল ইসরাইল নিজেদের আবার পাল্টা আক্রমণ থেকে বিরত রাখলে। কিন্তু ইসরাইলও যদি আবার আক্রমণ চালায়, তবে এই ঘাত-প্রতিঘাত ইসরাইল-ইরান ছাড়িয়ে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর এ তো বলার অপেক্ষা রাখে না, দুনিয়ার যে কোনো যুদ্ধ মানেই সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের উস্কানি থাকবেই। উল্লেখ্য, ইরানকে এই আক্রমণ না করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। কিন্তু ইরান তাতে পাত্তাই দেয়নি। 
এই লেখা যখন লিখছি তখন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি অধিবেশনের অনুরোধ জানিয়েছে ইসরাইল। গতকাল দুপুরে এই খবর জানানোর সময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বন্ধু আসিফ লিখেছিল, “তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লেগে গেছে!”
আসলেই কী? সময়ই তা বলে দেবে। 

১৪ এপ্রিল ২০২৪

[email protected]

×