.
সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বদলির নীতিমালা অনুযায়ী পাহাড়ি অঞ্চল, দুর্গম চর ও হাওড় অঞ্চলে অন্তত এক বছর চাকরি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে সরকারি মাধ্যমিকের সমতলের শিক্ষকদের জন্য। মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকরণ ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার লক্ষ্যে সরকারি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা না থাকা এবং বদলি ও পদায়নের ক্ষেত্রে বিদ্যমান পরিপত্র ও অফিস আদেশ যুগোপযোগী করার উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে এ নীতিমালা। শিক্ষার মাধ্যমিক স্তরের সরকারি শিক্ষকদের বদলি ও পদায়নের ক্ষেত্রে এ নীতিমালা প্রযোজ্য হবে। এখন থেকে এসব শিক্ষকের বদলিও হবে অনলাইনে। চলতি বছরের অক্টোবর মাস থেকে এসব বদলির আবেদন গ্রহণ করা হবে। সরকার জনস্বার্থে যে কোনো সময় যে কোনো শিক্ষককে বদলি ও পদায়ন করতে পারে। উল্লেখ্য, চিকিৎসাক্ষেত্রেও সরকারি চিকিৎসকদের গ্রামাঞ্চলে চাকরিতে যোগদানের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, যেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগীরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত না হয়।
নীতিমালা অনুযায়ী সমতলের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষককে পার্বত্য (রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি) অঞ্চল এবং দুর্গম চর ও হাওড় অঞ্চলে বদলি করা হলে তাকে ১ বছর সেখানে চাকরি করতে হবে। এরপর তিনি অন্য জেলায় বদলির আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে বিষয়ভিত্তিক সহকারী শিক্ষকের শূন্যপদের বিপরীতে অন্য বিষয়ের শিক্ষক বদলি বা পদায়ন করা যাবে না। তাছাড়া প্রতি শিক্ষাবর্ষে অক্টোবর মাসে শিক্ষকরা যুক্তিযুক্ত কারণে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে শর্তসাপেক্ষে সরাসরি (অনলাইনে) আবেদন করতে পারবেন। এ সময়সীমা ব্যতীত অন্য কোনো সময়ে বদলির জন্য আবেদন করা যাবে না। তবে অনিবার্য পরিস্থিতিতে শুধু সিনিয়র সচিব বা সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ বরাবর আবেদন করা যাবে।
উন্নত জাতি গঠন ও মানবসম্পদ উন্নয়নে গুণগতমানসম্পন্ন শিক্ষার গুরুত্ব সর্বাধিক। কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি, মুক্তচিন্তার অধিকারী, সততা, নীতি-নৈতিকতা, দেশপ্রেম, পরোপকার এবং আদর্শ চরিত্রবান মানুষ হওয়ার মূল ভিত্তি শিক্ষা। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে জাতির শিক্ষার মানোন্নয়ন ও প্রসারে সরকার সর্বদা সচেষ্ট। প্রাথমিক শিক্ষা শতভাগ অবৈতনিক করা, মেয়েদের দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত উপবৃত্তি প্রদানসহ নানা সুবিধা ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে প্রদান করা হচ্ছে। সাধারণত শহর পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অধিকাংশ শিক্ষক চাকরি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলে অনেক শিক্ষক চাকরি করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। যেতেও চান না। সেক্ষেত্রে সেসব অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা ভালো শিক্ষক তুলনামূলক কম পেয়ে থাকে। তারা প্রত্যাশানুযায়ী মানসম্মত শিক্ষা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়। এখন থেকে পাহাড়, দুর্গম চর ও হাওড় অঞ্চলে শিক্ষকদের অন্তত এক বছর চাকরি বাধ্যতামূলক করার ফলে এ ঘাটতি অনেকটাই দূর হবে বলে প্রত্যাশা।