ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেবে লিবিয়া

প্রকাশিত: ১৮:৫৬, ৩০ অক্টোবর ২০২৩

বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেবে লিবিয়া

বাংলাদেশ ও লিবিয়ার পতাকা

লিবিয়ায় বৈধভাবে অবস্থান করা বাংলাদেশিদের নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, বাংলাদেশি নাগরিকদের অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা, প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লিবিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে শ্রমবাজার সংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে।

কোন কোন কাজে এবং কি পদ্ধতিতে ও কবে থেকে ক‍‍র্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে, সেজন্য দেশটির একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা এসে সব চুড়ান্ত করবেন।

বুধবার (২৫ অক্টোবর) লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপলিতে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ এবং লিবিয়ার শ্রম ও পুনর্বাসন মন্ত্রী প্রকৌশলী আলী আবেদ রেজা এই স্মারক স্বাক্ষর করেন। 

এই সময় বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ও লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার,  জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো- বিএমইটি’র মহাপরিচালক সালেহ আহমেদ মোজাফফর, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মীর খায়রুল আলম, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর একান্ত সচিব (যুগ্ম সচিব) আহমদ কবির ও লিবিয়ার শ্রম মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া লিবিয়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বিশেষ করে বেতন-ভাতা, কর্মকাল, আবাসন, খাদ্য, ছুটি ও সার্ভিস বেনিফিট ইত্যাদি উল্লেখ করে নিয়োগকর্তার সাথে একটি প্রাথমিক চুক্তি বাংলাদেশে স্বাক্ষরিত হবে। যার মাধ্যমে লিবিয়ায় আগত কর্মীরা দেশে থাকতেই তাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে জানতে পারবে। তাছাড়া নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সর্বোত্তম তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে ভিসা প্রক্রিয়া সহজিকরণ করা এবং নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীদের লিবিয়া আসা ও মেয়াদ শেষে দেশে ফেরার খরচ নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি বহন করবে।

সমঝোতা চুক্তির আগে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী লিবিয়ার শ্রম মন্ত্রীর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠকে লিবিয়ার শ্রম মন্ত্রী বলেন, “এতোদিন বাংলাদেশ থেকে লিবিয়ায় কর্মী নিয়োগের কোন সমঝোতা স্মারক কার্যকর না থাকায় বিভিন্ন মহল সুযোগ গ্রহণ করে আসছিল। ফলে বাংলাদেশি কর্মীরা বিভিন্ন প্রতারণার শিকার এবং জটিলতার সম্মুখীন হয়েছে। সমঝোতা স্মারক সইয়ের ফলে একটি আইনি কাঠামো তৈরি হয়েছে।

যার মাধ্যমে বাংলাদেশি কর্মীদের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। একই সাথে লিবিয়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীরা সোশ্যাল সিকিউরিটি ও মেডিক্যাল ইন্সুরেন্সের আওতায় আসবে” ।

এছাড়া তিনি আরো জানান, “লিবিয়ায় অবৈধভাবে বসবাসরত বিদেশি কর্মীদের নিয়মিত করণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশিদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে”।বৈঠকে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ লিবিয়ার শ্রম মন্ত্রী কর্তৃক বিভিন্ন বিষয়ে উত্থাপিত প্রস্তাবনাকে স্বাগত জানান।

প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ লিবিয়ায় আগত কর্মীদের ভিসা সংগ্রহ থেকে শুরু করে যাবতীয় ব্যয় নিয়োগকর্তা বহন করার মাধ্যমে অভিবাসন খরচ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার জন্য লিবিয়ার শ্রম মন্ত্রীকে অনুরোধ জানান। একইসাথে তিনি কর্মীদের সোশ্যাল সিকিউরিটি নিশ্চিতকরণ এবং মেডিক্যাল ইন্সুরেন্সের ব্যয় নিয়োগকর্তার কর্তৃক পরিশোধেরও অনুরোধ করেন। এছাড়া বাংলাদেশের জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত পূর্ব অভিজ্ঞতার সনদ লিবিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্বীকৃতি প্রদানের অনুরোধ জানান প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ।

এদিকে, সফরকাল মন্ত্রী ইমরান আহমদ লিবিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের বৈধতা অর্জনের প্রক্রিয়া সহজ করা এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে জটিলতা কমাতে শ্রম মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এরই প্রেক্ষিতে দেশটির শ্রম মন্ত্রী জানান, লিবিয়ায় আনডকুমেন্টেট হয়ে আগত বাংলাদেশিসহ অন্যান্য বিদেশি কর্মীদের বৈধকরণের প্রক্রিয়া নির্ধারণ করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একইসঙ্গে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণের জটিলতা নিরসনে এই কমিটি কাজ করবে বলে জানান দেশটির শ্রম মন্ত্রীআলী আবেদ রেজা।

এর আগে গেল মঙ্গলবার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের একটি ডেলিগেশন দল দুইদিনের জন্য লিবিয়া সফর করছেন। সফরকালে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ত্রিপলিতে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় তিনি লিবিয়ায় কর্মরত প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।

 

এবি

সম্পর্কিত বিষয়:

×