ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২

চাটমোহরে মাঘের শীতে দলেবলে মাছ ধরা

জাল, পলো যার শিকার তার- চলনবিলে বাউৎ উৎসব

প্রকাশিত: ২২:২৫, ২৪ জানুয়ারি ২০২২

জাল, পলো যার শিকার তার- চলনবিলে বাউৎ উৎসব

জনকণ্ঠ ফিচার ॥ এখন মাঘ মাস। কনকনে শীত আর হালকা কুয়াশা চারদিকে। কুয়াশা ভেদ করে সূর্যের আলো ফুটছে। কুয়াশা কাটতে না কাটতেই জীবন-জীবিকার তাগিদে বিলের দিকে ছুটছেন মানুষ। কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য সবার কাঁধে মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে ছুটছে বাউৎ (মাছ ধরা) উৎসবে। এ যেন প্রকৃতির এক অপরূপ সৌন্দর্য। রবিবার সকালে চলনবিল অধ্যুষিত পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়ালকাটা নদীতে চলে মাছ ধরার উৎসব। পলো ও বিভিন্ন প্রকার জাল নিয়ে অসংখ্য সৌখিন মৎস্য শিকারি মেতেছেন এই উৎসবে। মাছ ধরার এই উৎসবের নাম বাউৎ উৎসব। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে চলনবিলে এই বাউৎ উৎসবের রেওয়াজ। বিলের পানি কমে গেলে এই পদ্ধতিতে মাছ ধরা হয়ে থাকে। আগে বিলে প্রচুর মাছ ছিল। তাই, এই মৌসুমে প্রায় প্রতিদিনই পলো দিয়ে অসংখ্য মৎস্য শিকারি মাছ ধরত। কিন্তু এখন আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। বাউৎ উৎসবে ধনী, গরিবের ভেদাভেদ নেই এখন। যার পলো আছে সেই নামতে পারে শিকারে। মাছ ধরতে বিলে নেমেছে অসংখ্য মানুষ। হৈচৈ আর চেঁচামেচিতে মুখোর চারপাশ। বাউৎ উৎসবে পাবনার আটঘরিয়া, ঈশ্বরদী ও চাটমোহরের শতাধিক মানুষ অংশ নিয়েছে। চাটমোহর মূলগ্রাম থেকে বিলে মাছ ধরতে আসা রফিকুল ইসলাম (৭০) সঙ্গে কথা হয়। সে বলেন, প্রতিবছর এই মৌসুমে আমরা বিভিন্ন বিলে মাছ ধরতে আসি, আজ এসেছি হান্ডিয়ালকাটা নদীতে মাছ ধরতে। পলো দিয়ে মাছ ধরা আমার দীর্ঘদিনের পেশা। তবে আগেকার তুলনায় দেশীয় প্রজাতির মাছ কমে যাচ্ছে বলে জানান তিনি। বিলে মাছ ধরতে আসা আবু বক্করের (৫১) সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আমি ১৩ বছর বয়স থেকে মাছ ধরি। আগে বিভিন্ন বিলে প্রচুর মাছ পাওয়া গেলেও এখন আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে চায়না জালসহ বিভিন্ন অবৈধ জাল দিয়ে মাছ নিধন করায় খালেবিলে এখন মাছ কমে গেছে। তাই, এখন আর তেমন মাছ নেই এই বিলে। ঈশ্বরদীর মূলাডুলি থেকে আসা মশিউর রহমান নামে এক সৌখিন মাছ শিকারির সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, শখ করে মাছ ধরতে এসেছি আমি, মাছ পাই আর না পাই বাউৎ উৎসবে মাছ ধরা আমার অন্যতম শখ।

আরো পড়ুন  

×