ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২

দুই পাশ যেন মরণফাঁদ

প্রকাশিত: ২১:১৭, ২০ আগস্ট ২০২০

দুই পাশ যেন মরণফাঁদ

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ১৮ আগস্ট ॥ ধামইরহাট উপজেলা সদরের প্রধান সড়কের দুই পাশ যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে দুই ধারে কাদায় পরিপূর্ণ হওয়ায় জনগণকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিন কাদায় বিভিন্ন প্রকার যানবাহন আটকে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সঠিক সময়ে পদক্ষেপ না নেয়ার দিন দিন অবস্থার অবনতি ঘটছে। জানা গেছে, নওগাঁ-ধামইরহাট-জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কের ধামইরহাটের আমাইতাড়া মোড় থেকে মঙ্গলবাড়ী বাজার পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার ৬শ’ ৫ মিটার রাস্তার মজবুতিকরণসহ সার্ফেসিং কাজ শেষ হয় গত রমজান মাসের শেষে। রাস্তার সঙ্গে প্রায় ৯শ’ ৫ মিটার নতুন ড্রেনও নির্মাণ করা হয়। নওগাঁর সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এ নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করে নওগাঁর ঠিকাদার সংস্থা আমিনুল হক প্রাইভেট লিমিটেড। রাস্তা নির্মাণ করার সঙ্গে দুই পার্শে সোল্ডারে কাদা মাটি (চিটকা মাটি) ফেলা হয়। বিশেষ করে আমাইতাড়া বাজার থেকে ধামইরহাট পূর্ব বাজার পেট্রোল পাম্প পর্যন্ত রাস্তার দুই পার্শে সোল্ডারে একেবারে পুকুর থেকে গভীর কাদায় পরিপূর্ণ মাটি (চিটকা মাটি) ফেলা হয়। এলাকাবাসী এ সময় এই কাদা মাটির পরিবর্তে পলিমাটি (স্থানীয়ভাবে বালকা মাটি) দেয়ার দাবিতে ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করলেও বিষয়টি আমলে নেয়া হয়নি। বর্তমানে বৃষ্টিতে ওই কাদামাটি নরম হয়ে আরও কাদায় পরিণত হয়েছে। প্রায় এক ফুট গভীরতা এ মাটি এখন রাস্তার দুই পার্শের মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূল সড়ক থেকে কোন কারণে যানবাহন ওই কাদামাটিতে পড়ে গেলে তাকে তোলা খুবই কষ্ট হয়ে পড়ছে। প্রায় প্রতিদিন এ রকম ঘটনা ঘটছে। ভ্যান, রিক্সা থেকে শুরু করে সকল যানবাহন রাস্তায় ওপর দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করতে হচ্ছে। তাছাড়া মালবাহী ট্রাকগুলো মূল রাস্তায় দাঁড়িয়ে মালামাল ওঠানামার কাজ করছে। এতে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা লেগে থাকছে। অনেক সময় মালবোঝাই ট্রাক বিপরীত দিক থেকে আসা যানবাহনকে সাইট দিতে গিয়ে কোনক্রমে পাকা থেকে মাটিতে পড়লে ওই যানবাহন ফেঁসে যায়। তার আর পাকা রাস্তায় ওঠানো যায় না। এসময় রাস্তার দুই পার্শে যানজট লেগে থাকে। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় দিকে টিএন্ডটি মোড়ের আবুল ট্রেডার্সের সামনে রড বোঝাই ট্রাক কাদামাটিতে ফেসে গেলে রাস্তার দুই পার্শে দীর্ঘ সময় ধরে যানজট লেগে থাকে। ওই গাড়ি না উঠানো পর্যন্ত এ পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকে। উপজেলার টিএন্ডটি বাজারের মাছের খাদ্য ব্যবসায়ী মোঃ ফয়সাল বলেন, প্রথমে কাদা মাটি তারপর জনগণের দাবির মুখে কাদা মাটি না সরিয়ে তার ওপর ইটের রাবিশ ফেলা হয়েছে। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। ইটের রাবিশ ফেলায় যানবাহনের চালকরা গাড়ি ওই মাটিতে নেমে দেয়া মাত্র কাদায় ফেসে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশীলী মোহাম্মদ হামিদুল হক বলেন, মূল সড়ক নির্মাণের পর দুই সোল্ডার মাটি দিয়ে ভরাট করতে হবে এটিই নিয়ম। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে মাটি কাঁদায় পরিণত হয়েছে। তাছাড়া রাস্তার পাশ দিয়ে লোহার চাকার পাওয়ার ট্রিলার যাওয়ার পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। যেহেতু ঘটনাস্থল পৌরসভায় অন্তর্গত। সুতরাং জনগণের সুবিধার্থে পৌর কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ গ্রহণ করলে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তারপরও কিছু জায়গায় ইটের খোয়া ও বালু ফেলে পরিস্থিতি উন্নতি করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
×