
ছবিঃ সংগৃহীত
প্রতিদিন হঠাৎ মাথাব্যথা শুরু হলে প্রথমেই আমরা পানি কম খাওয়ার কথা ভাবি। কিন্তু পানি খাওয়ার পরও যদি মাথা ধরে থাকে, তাহলে কী অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে? চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের মতে, মাথাব্যথার পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে আমাদের দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস।
আমেরিকার ফ্যামিলি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. লরা পারডি এবং ওয়াশিংটনভিত্তিক ডায়েটিশিয়ান ক্যারোলিন থমাসনের সঙ্গে কথা বলে এবং সাম্প্রতিক গবেষণার আলোকে উঠে এসেছে এমন ৫টি কারণ, যেগুলোর সঙ্গে আপনার পানি পান বা ডিহাইড্রেশন-এর কোনও যোগ নেই।
পানির অভাবে নয়, অন্য যে ৫ কারণে মাথাব্যথা হতে পারে:
১. স্ক্রিনে অতিরিক্ত সময় কাটানো
ডা. পারডির মতে, স্ক্রিনের উজ্জ্বল আলো বা ব্লু লাইট, এলইডি বা ফ্লোরোসেন্ট আলো এবং গাড়ির হেডলাইটের মতো তীব্র আলো চোখে চাপ ফেলে, যা মাথাব্যথার অন্যতম কারণ হতে পারে। এ ছাড়াও অতিরিক্ত স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকার ফলে চোখের চাপও তৈরি হয়, যা মাথাব্যথা ডেকে আনে।
২. মানসিক চাপ বা স্ট্রেস
চাপের কারণে ঘাড়-কাঁধ শক্ত হয়ে যায় এবং পেশিতে টান ধরে, যা মাথাব্যথার জন্ম দিতে পারে। অনেক সময় অতিরিক্ত শব্দ বা অনিদ্রার কারণেও মাথা ধরতে পারে।
৩. শরীরের অতিরিক্ত চাপ ও খারাপ ভঙ্গি
গবেষণায় দেখা গেছে, অনিয়মিত ভঙ্গিমায় বসে বা কাজ করলে ঘাড়, কাঁধ ও পিঠে চাপ পড়ে, যা টেনশন টাইপ মাথাব্যথার সৃষ্টি করতে পারে।
৪. খালি পেট বা পর্যাপ্ত খাবার না খাওয়া
খালি পেটে বা কম ক্যালোরি ও কার্ব খাওয়ার কারণে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যেতে পারে, যার ফলেও মাথা ধরতে পারে।
৫. কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
ডা. থমাসনের মতে, ব্যথানাশক, অ্যান্টিহিস্টামিন কিংবা উচ্চ রক্তচাপের কিছু ওষুধ মাথাব্যথার কারণ হতে পারে।
মাথাব্যথা কমাতে কিছু প্রাকৃতিক পরামর্শ:
শান্ত পরিবেশে বিশ্রাম নিন: আলো-আওয়াজ বন্ধ করে অন্ধকার ঘরে বিশ্রাম নিন, ঘুমানোও উপকারী হতে পারে।
খাবারের ওপর নজর রাখুন: কিছু খাবার মাথাব্যথা বাড়াতে পারে। একটি ফুড-লগ রাখতে পারেন ট্রিগার চিহ্নিত করতে।
ঠান্ডা বা গরম সেঁক: কপালে ঠান্ডা এবং ঘাড়-কাঁধে গরম সেঁক উপকারী হতে পারে। হালকা গরম পানিতে গোসলও আরাম দিতে পারে।
হালকা ব্যায়াম করুন: প্রতিদিন কিছুটা হাঁটাহাঁটি, ধ্যান বা যোগব্যায়াম মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
প্রয়োজনে ওষুধ সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করলে মাথাব্যথা থেকে মুক্তি মিলতে পারে।
মাথাব্যথার পেছনে সবসময় পানিশূন্যতা দায়ী নয়। পর্যাপ্ত পানি ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের পাশাপাশি ঘুম, স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট ও স্ক্রিন ব্যবহারে ভারসাম্য বজায় রাখলেই এ ধরনের মাথাব্যথা অনেকটাই এড়ানো সম্ভব। আর মাথাব্যথা যদি ঘনঘন হয় বা তীব্র হয়, চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।
সূত্রঃ eatingwell.com
নোভা