
চুল পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা যেন এখন নিত্যদিনের ব্যাপার। বাজারে নানা ধরণের শ্যাম্পু, তেল বা সিরামের আশায় ছুটে চললেও, চুলের প্রকৃত স্বাস্থ্য নির্ভর করে আপনার প্রতিদিনের খাবারের উপর। চুলের মূল উপাদান প্রোটিন, আর তা শক্তিশালী রাখতে প্রয়োজন আয়রন, ভিটামিন এবং পর্যাপ্ত পানি।
ভাগ্যক্রমে, আমাদের রান্নাঘরেই রয়েছে এমন অনেক উপাদান, যা চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে এবং অতিরিক্ত চুল পড়া রোধে সহায়তা করে। বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশের প্রচলিত কিছু খাবার,যেমন আমলকি বা তিলবীজ আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সহজেই যোগ করা যায়, এবং এগুলোর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা উচ্চমূল্য নেই।
নিচে রইল এমন ছয়টি প্রাকৃতিক খাবারের তালিকা, যা নিয়মিত খেলে চুল পড়া কমবে এবং চুলের গঠন হবে আরও ঘন ও উজ্জ্বল।
মেথি বীজ: স্ক্যাল্পকে করে মজবুত
রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে স্মুদি বা ভেজানো মেথি দিয়ে রান্না করা তরকারি চুলের জন্য দারুণ উপকারী। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও আয়রন, যা চুল ভাঙা রোধ করে এবং নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে। মূল থেকে চুলকে শক্তিশালী করে তোলে মেথি বীজ।
কুমড়ার বীজ: চুলে আনে ঘনত্ব ও পুষ্টি
কুমড়ার বীজে থাকে জিঙ্ক, যা স্ক্যাল্পকে সুস্থ রাখার জন্য অপরিহার্য। সালাদে, ওটমিলে বা ট্রেইল মিক্সে ব্যবহার করা যায় এই বীজ। এটি চুল পড়া কমাতে ও সময়ের সঙ্গে চুল ঘন করতে সাহায্য করে।
আমলকি: ভিটামিন সি-তে ভরপুর, চুলে আনে প্রাণ
কাঁচা, শুকনো বা রস হিসেবে—যেভাবেই গ্রহণ করুন না কেন, আমলকি চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়, চুলের গোড়া মজবুত করে এবং দূষণ বা মানসিক চাপে ক্ষতিগ্রস্ত চুল পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে। প্রতিদিন খেলে এটি চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখার সহজ উপায়।
পালং শাক: আয়রনের ঘাটতি পূরণে সহায়ক
আয়রনের অভাব চুল পাতলা হওয়ার অন্যতম কারণ। রান্না করা পালং শাক বা স্মুদিতে ব্যবহার করে আপনি ফোলেট, আয়রন, ভিটামিন এ ও সি সহজেই পেতে পারেন। এগুলো মাথার ত্বক সজীব রাখে এবং চুলের ধারাবাহিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
তিল বীজ: মাথার ত্বকে রক্তসঞ্চালন বাড়ায়
ভারতীয় হালুয়া, পরোটা কিংবা মুখরোচক খাবারে ব্যবহৃত তিল বীজ চুলের জন্যও দারুণ উপকারী। এটি মাথার ত্বকে রক্তসঞ্চালন বাড়িয়ে প্রদাহ কমায়। প্রাকৃতিক শীতল প্রভাব থাকার কারণে খুশকি বা চুলকানির মতো ত্বকজনিত সমস্যা কমায়।
বাদাম ও শুকনো ফল: প্রোটিন ও বায়োটিনে সমৃদ্ধ
বাদাম, আখরোট, খেজুর এই সাধারণ খাবারগুলো চুলের সৌন্দর্য রক্ষায় অসাধারণ ভূমিকা রাখতে পারে। এতে রয়েছে বায়োটিন ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা চুল ভাঙা কমায়, শক্তি বাড়ায় এবং চুলকে নরম ও মসৃণ রাখে। প্রতিদিন অল্প করে খাওয়াও দীর্ঘমেয়াদে সুফল দিতে পারে।
চুল পড়া কমানো বা নতুন চুল গজানো কোনো যাদু নয়, এটি দীর্ঘমেয়াদি যত্ন ও অভ্যন্তরীণ পুষ্টির ওপর নির্ভর করে। দামি পণ্যের পেছনে না ছুটে বরং আপনার প্লেটেই খুঁজে নিন চুলের সঠিক যত্ন। আজ থেকেই খাবারের তালিকায় যুক্ত করুন এই প্রাকৃতিক উপাদানগুলো, চুলও বলবে ধন্যবাদ!
সূত্র:https://tinyurl.com/6cb36nxb
আফরোজা