
ছবিঃ সংগৃহীত
জাতিসংঘের পারমাণবিক সংস্থা আইএইএ-র প্রধান রাফায়েল গ্রোসি জানিয়েছেন, ইরান কয়েক মাসের মধ্যেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে পারমাণবিক বোমা তৈরির পথে অগ্রসর হতে পারে।
শনিবার সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গ্রোসি বলেন, সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালালেও তাতে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়নি। এ মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘পুরোপুরি ধ্বংস’ দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেন।
গ্রোসি বলেন, “খোলাখুলি বললে, বলা যাবে না যে সবকিছু নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ইরান এখনো প্রযুক্তিগত ও শিল্প সক্ষমতা ধরে রেখেছে। যদি তারা চায়, তাহলে অল্প কিছু মাসের মধ্যেই আবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে পারবে।”
গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়। পরে যুক্তরাষ্ট্র ফোর্দো, নাতাঞ্জ এবং ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা ফেলে অভিযানে যোগ দেয়।
তবে বাস্তবে কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়ে বিভ্রান্তি আছে। পেন্টাগনের এক ফাঁস হওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে হয়তো কয়েক মাসের জন্যই পিছিয়ে দিতে পেরেছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, আঘাত “অত্যধিক ও গুরুতর” হলেও জাতীয় সংসদ আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অন্যদিকে, দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি দাবি করেছেন, এই হামলায় তেমন কিছুই অর্জিত হয়নি।
যদিও ইরান এখনো বলে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে শান্তিপূর্ণ এবং বেসামরিক উদ্দেশ্যে।
গ্রোসি বলেন, “সামরিক হামলার পর এখন এই সংকটের একটি দীর্ঘস্থায়ী সমাধান দরকার, আর সেটি কূটনৈতিকভাবেই আসা উচিত। আমি এখনো ইরানের সঙ্গে আলোচনার আশায় আছি।”
২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি অনুযায়ী, ইরান ১৫ বছরের জন্য ৩.৬৭ শতাংশের বেশি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না এবং ফোর্দো প্লান্টে কোনও সমৃদ্ধকরণ চালানো নিষিদ্ধ ছিল। তবে ২০১৮ সালে ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে বের হয়ে গেলে ইরান ধীরে ধীরে নিয়ম ভাঙতে শুরু করে এবং ২০২১ সালে ফোর্দোতে সমৃদ্ধকরণ আবার শুরু করে। বর্তমানে তারা ৬০% পর্যন্ত ইউরেনিয়াম মজুদ করেছে, যা অস্ত্র তৈরির পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
সূত্র: বিবিসি
মুমু