
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানী ঢাকায় চিকুনগুনিয়া জ্বর ফের উচ্চ সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি করেছে বলে সতর্ক করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও গবেষকরা। প্রাথমিকভাবে ‘হালকা জ্বর’ হিসেবে বিবেচিত হলেও, সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, ভাইরাসটি এখন মারাত্মক হারে ছড়িয়ে পড়ছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর,বি জানায়, চলতি জুন মাসের প্রথম তিন সপ্তাহে রাজধানীতে জ্বর নিয়ে আসা ১৭১ জন রোগীর মধ্যে ১৪০ জনের শরীরে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। অর্থাৎ, শনাক্তের হার প্রায় ৮২ শতাংশ, যা স্পষ্টতই উচ্চ সংক্রমণের ইঙ্গিত বহন করে। সংস্থাটি এ অবস্থাকে উদ্বেগজনক আখ্যা দিয়ে জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
২০১৭ সালে ঢাকায় প্রথমবারের মতো বড় আকারে চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। তখন আইসিডিডিআর,বি-এর হিসাব অনুযায়ী ১৩ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হলেও বাস্তবে লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল বলে মনে করেন গবেষকরা।
পরবর্তীতে রোগটিকে ‘কম গুরুত্বের’ বিবেচনায় নিয়ে সরকারি হাসপাতালগুলোতে এর পরীক্ষার কিট সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে বর্তমানে সরকারি পর্যায়ে রোগটি শনাক্তের সুযোগ প্রায় নেই। আক্রান্তদের বাধ্য হয়ে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে, যা রোগ নির্ণয়ে বিলম্ব, অতিরিক্ত খরচ এবং ভুল চিকিৎসার ঝুঁকি তৈরি করছে।
জ্বর, গাঁটব্যথা, তীব্র মাথাব্যথা ও গায়ে র্যাশ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত পরীক্ষা করানো উচিত। মশা নিধন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।চিকুনগুনিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারি নজরদারি, বিনামূল্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রম জরুরি বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সময় থাকতে ব্যবস্থা না নিলে শহরের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ফের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে।
ফারুক