ছবি: সংগৃহীত।
ইউরোপ কিংবা আমেরিকা নয়—হাজার হাজার ভারতীয় এখন গন্তব্য হিসেবে বেছে নিচ্ছেন ইসরাইলকে। কেউ যাচ্ছেন কাজের জন্য, কেউবা পড়াশোনার উদ্দেশ্যে। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরেই দেশটিতে ভারতীয়দের বসবাস চলছে। অনেকেই সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে আনুমানিক ১৮ হাজার থেকে ২০ হাজার ভারতীয় কর্মী ইসরাইলে রয়েছেন। তবে প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়েও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হয়। কারণ, ২০২৩ সালে ভারত ও ইসরাইলের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক শ্রমচুক্তি স্বাক্ষর হয়, যার আওতায় বিপুলসংখ্যক ভারতীয় কর্মী দেশটিতে পাড়ি জমিয়েছেন।
এই চুক্তির আওতায় ২০২৫ সালের ১০ মার্চ পর্যন্ত ইসরাইলে পৌঁছেছেন ৬ হাজার ৬৯৪ জন ভারতীয় কর্মী। তাদের নিয়োগ দিয়েছে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ১৯৫টি ইসরাইলি কোম্পানিও নিয়োগ দিয়েছে ভারতীয় কর্মীদের। নির্মাণ খাতে নিযুক্ত এসব কর্মীরা কাঠামো নির্মাণ, লোহার রড বাঁকানো ও প্লাস্টারিংয়ের মতো কাজ করে থাকেন।
২০২৪ সালে ইসরাইল ভারত সরকারকে অনুরোধ জানায় নির্মাণ ও কেয়ারগিভিং—এই দুই খাতে মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার কর্মী পাঠাতে। যদিও এদের মধ্যে কতজন ইতোমধ্যে কাজে যোগ দিয়েছেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যে আরও জানা যায়, বর্তমানে ইসরাইলে প্রায় ৮৫ হাজার ভারতীয় বংশোদ্ভূত ইহুদি বাস করছেন। ১৯৫০ ও ৬০-এর দশকে মহারাষ্ট্র, কেরালা ও কলকাতা থেকে ইহুদিদের একটি বড় অংশ ইসরাইলে অভিবাসন শুরু করে। সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুর ও মিজোরাম থেকেও ইহুদি সম্প্রদায়ের অভিবাসন দেখা গেছে।
ইন্ডিয়ান ইকোনোমিক ট্রেড অর্গানাইজেশনের প্রেসিডেন্ট ড. আসিফ ইকবাল জানিয়েছেন, ভারত থেকে যাওয়া কর্মীদের মধ্যে অধিকাংশই কেয়ারগিভারের কাজ করেন। বিশেষ করে পুরুষ নার্স ও নার্সিং অ্যাসোসিয়েটদের চাহিদা রয়েছে ইসরাইলে। দেশটিতে প্রবীণ নাগরিকদের দেখভালের জন্য দক্ষ লোকবলের ঘাটতি থাকায় দক্ষিণ ভারত থেকে অনেকেই এই পেশায় যুক্ত হচ্ছেন।
এছাড়া, নির্মাণ খাতে ভবন নির্মাণ ও সংস্কারের কাজেও ক্রমেই বাড়ছে ভারতীয় শ্রমিকদের উপস্থিতি। ইসরাইলের বিভিন্ন অঞ্চলে এই কাজে নিয়োজিত রয়েছেন হাজারো ভারতীয়।
এই তথ্যগুলো উঠে এসেছে বিবিসি বাংলার একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে।
নুসরাত
