ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২

মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলা শুরু হতেই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেন ট্রাম্প!

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২৪ জুন ২০২৫

মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলা শুরু হতেই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেন ট্রাম্প!

ছ‌বি: সংগৃহীত

মার্কিন সামরিক ঘাঁটি আল উদেইদে ইরানের হামলার কয়েক ঘণ্টা পরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হচ্ছে। তিনি বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রক্রিয়া শুরু হবে।

তবে ইসরায়েল ও ইরান এই ঘোষণায় এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।

এর আগে সোমবার কাতারে অবস্থিত আল উদেইদ মার্কিন ঘাঁটিতে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ইরান বলে, এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার জবাব। কাতার জানিয়েছে, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রতিহত করতে পেরেছে।

এই হামলায় কেউ আহত হয়নি বা মারা যায়নি। মার্কিন সেনাবাহিনীও বলেছে, ঘাঁটিতে বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। ইরান মোট ১৯টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে, এর মধ্যে মাত্র একটি ঘাঁটির কাছে পড়েছে।

ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, “কেউ আহত হয়নি, বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। ইরান আগেই আমাদের জানিয়ে দিয়েছিল, তাই আমরা প্রস্তুত ছিলাম।”

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, “আমরা কারও ওপর হামলা করিনি, তবে কেউ যদি আমাদের ওপর হামলা করে, আমরা চুপ করে থাকব না।” ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি আবার হামলা করে, তাহলে ইরানও আবার জবাব দেবে।

হামলার সময় কাতারের রাজধানী দোহায় আকাশে আগুনের আলো দেখা যায় ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। সাধারণ মানুষ খুব আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তবে কারও কোনো ক্ষতি হয়নি।

কাতার জানিয়েছে, হামলাটি তাদের নাগরিকদের ওপর নয়, বরং মার্কিন সেনাদের জন্য ছিল। তবুও তারা এ ঘটনাকে তাদের দেশের উপর হামলা বলেই মনে করছে।

ইরান বলেছে, হামলার স্থান জনবসতি থেকে দূরে ছিল এবং তারা কাতারকে বন্ধু দেশ হিসেবে দেখে।

আল জাজিরার প্রতিবেদক দোহার পরিস্থিতি বর্ণনা করে বলেন, “এমন ঘটনা এখানকার মানুষ আগে কখনো দেখেনি। কিন্তু ইরান চাইছিল আমেরিকাকে সরাসরি বার্তা দিতে যে, তারা সরাসরি হামলা করতে পারে।”

তেহরান থেকে এক সাংবাদিক বলেন, “এই হামলা শেষ প্রতিশোধ কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ইরান মনে করে, এটা তাদের বিরুদ্ধে চলমান একটি বড় লড়াইয়ের অংশ।”

ওয়াশিংটন থেকে জানা যায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে সিচুয়েশন রুমে বসে এই ঘটনার উপর নজর রাখছিলেন। হামলার আগে ঘাঁটির কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

এছাড়াও কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের দূতাবাস তাদের নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে থাকার পরামর্শ দেয়। কিছু সময়ের জন্য কাতার ও আশপাশের দেশগুলোর আকাশসীমাও বন্ধ রাখা হয়েছিল।

কাতারের আল উদেইদ ঘাঁটি হলো যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি, যেখানে প্রায় ১০ হাজার মার্কিন সেনা এবং শতাধিক বিমান ও ড্রোন আছে। এখান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইরাক, সিরিয়া ও আফগানিস্তানে অভিযান চালিয়ে থাকে।

সূত্র: আল জাজিরা

এম.কে.

×