ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২

ইসরায়েল ও ইরান ‘সম্পূর্ণ ও চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছে: ট্রাম্প

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২৪ জুন ২০২৫

ইসরায়েল ও ইরান ‘সম্পূর্ণ ও চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছে: ট্রাম্প

ছ‌বি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, ইসরায়েল ও ইরান “সম্পূর্ণ ও চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতিতে” সম্মত হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির প্রক্রিয়া ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধাপে ধাপে কার্যকর হবে এবং এই যুদ্ধ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হবে।

ট্রাম্প এক বিবৃতিতে জানান, “ইসরায়েল ও ইরান পরস্পরের চলমান সামরিক অভিযান শেষ করে আগামী ৬ ঘণ্টার মধ্যে একটি প্রাথমিক যুদ্ধবিরতিতে যাবে। এই যুদ্ধবিরতি প্রথমে ১২ ঘণ্টার জন্য কার্যকর হবে। এরপর ২৪ ঘণ্টা পূর্ণ হলে যুদ্ধ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ বলে বিবেচিত হবে।”

তিনি আরও বলেন, “ইরান প্রথমে যুদ্ধবিরতি শুরু করবে এবং ১২ ঘণ্টা পরে ইসরায়েলও তাদের অভিযান বন্ধ করবে। একে একে দুই দেশই শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনক আচরণ করবে।”

ট্রাম্প এই সমঝোতাকে একটি বড় সাফল্য হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “এই ১২ দিনের যুদ্ধ কয়েক বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘাতে রূপ নিতে পারত, কিন্তু তা হয়নি এবং আর কখনোই হবে না।”

ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী, এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং অবশেষে দুই পক্ষকে একটি সমঝোতায় আনতে পেরেছে।

এর আগে, ইরান রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানায়, তারা কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। খবরটি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস স্থানীয় সূত্রের বরাতে নিশ্চিত করে।

অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলাকে “অযৌক্তিক ও উসকানিমূলক আগ্রাসন” বলে উল্লেখ করেন এবং ইরানি জনগণের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি মস্কোতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গে এক বৈঠকে এই বক্তব্য দেন।

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (OIC) সম্মেলনে আরাগচি যুক্তরাষ্ট্রের হামলার কঠোর নিন্দা জানান এবং বলেন, “এই হামলা আমাদের জন্য একটি লাল দাগ অতিক্রম করার নামান্তর। ভবিষ্যতে এর জবাব আমরা কঠিনভাবে দেব।”

তিনি জানান, রাশিয়ার সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার প্রস্তুতি চলছে, যা এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরি বলে তিনি মনে করেন।

এদিকে ট্রাম্প দাবি করেন, মার্কিন বিমান হামলায় ইরানে ব্যাপকভাবে ভূগর্ভস্থ কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও মার্কিন কর্মকর্তারা এখনো ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণ পরিমাণ মূল্যায়ন করছেন। স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ইরান হয়তো হামলার আগেই ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনায় টানেলের মুখ বন্ধ করে রেখেছিল।

অস্ট্রেলিয়া এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অবস্থান নিলেও কূটনৈতিক সমাধানকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানায়। তবে আরাগচি নতুন করে আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে দেন এবং বলেন, “ওয়াশিংটন কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ছেড়ে জবরদস্তির পথ বেছে নিয়েছে।”

ট্রাম্প তাঁর বক্তব্য শেষ করেন এই বার্তায়: “ইসরায়েল ও ইরানকে অভিনন্দন জানাই। এই যুদ্ধ শেষ হচ্ছে। সৃষ্টিকর্তা ইসরায়েলকে, ইরানকে, মধ্যপ্রাচ্যকে, আমেরিকাকে এবং গোটা বিশ্বকে আশীর্বাদ করুন!”

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

এম.কে.

×