ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২

ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সব রেড লাইন অতিক্রম করেছে, যেকোনো উপায়ে লড়াই করব

প্রকাশিত: ২০:২৪, ২২ জুন ২০২৫

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সব রেড লাইন অতিক্রম করেছে, যেকোনো উপায়ে লড়াই করব

ছবিঃ সংগৃহীত

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ হামলাকে "চরম, ভয়াবহ ও নজিরবিহীনভাবে আন্তর্জাতিক আইনের মৌলিক নীতিমালার লঙ্ঘন" বলে উল্লেখ করেছেন।

রোববার (২২ জুন) তুরস্কের ইস্তাম্বুলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

আরাগচি বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালিয়ে সমস্ত রেড লাইন অতিক্রম করেছে। এ ধরনের বর্বরোচিত সামরিক আগ্রাসনের ফলে কূটনৈতিক পথ আর সম্ভব নয়।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করছিলাম, তখনই ইসরায়েল সবকিছু উড়িয়ে দেয়। এবং এবার যখন আমরা ইউরোপীয়দের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলাম—মাত্র দু’দিন আগেই জেনেভায় আলোচনা হয়—এই সময় মার্কিনিরা বোমা ফেলল। এটা ন্যক্কারজনক।”

আরাগচি উল্লেখ করেন, ইসরায়েল যা করছে, সেটি জার্মান চ্যান্সেলরের ভাষায় ‘ঘৃণ্য কাজ’। তার মতে, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই ঘৃণ্য কাজকে সমর্থন দিয়েছে, এটা লজ্জাজনক।”

ইরান এই হামলার বিরুদ্ধে জোরালো নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এটি জাতিসংঘের সনদ ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের এক নজিরবিহীন ঘটনা।

তিনি বলেন, “আমরা আমাদের ভূখণ্ড এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যেকোনো উপায়ে লড়াই করব—শুধু মার্কিন আগ্রাসনের বিরুদ্ধেই নয়, ইসরায়েলের বেআইনি কার্যকলাপের বিরুদ্ধেও।”

এনপিটি (পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি) নিয়ে প্রশ্ন তুলে আরাগচি বলেন, “ইরান সম্পূর্ণভাবে চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার পরও যদি রক্ষা না পায়, তাহলে শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি চাওয়া দেশগুলো কেন এই চুক্তির উপর নির্ভর করবে?”

আরাগচি জানিয়েছেন, তিনি রোববার বিকেলে মস্কো যাচ্ছেন এবং সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এ সময় তিনি সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন।

তেহরানের পক্ষ থেকে পাল্টা হামলা কিংবা হরমুজ প্রণালী বন্ধের সম্ভাবনা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমাদের সামনে বিভিন্ন ধরনের বিকল্প রয়েছে, এটাই যথেষ্ট।”

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রোববার ঘোষণা করেছেন, ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় ‘অত্যন্ত সফল’ বিমান হামলা চালানো হয়েছে। এতে মধ্যপ্রাচ্যে আরও বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা জোরালো হয়েছে।

এই হামলার পর ইরান জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কাছে জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, এই উত্তেজনার সূচনা ঘটে ১৩ জুন, যখন ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। এর জবাবে তেহরান পাল্টা হামলা চালায়।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের মিসাইল হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২৫ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছে। অপরদিকে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, ইসরায়েলি হামলায় দেশটিতে অন্তত ৪৩০ জন নিহত এবং ৩,৫০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।

সূত্রঃ আনাদলু

ইমরান

×