ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২

পাল্টা জবাব নাকি সমঝোতা—কোন পথ বেছে নেবে ইরান?

প্রকাশিত: ১০:২৭, ২২ জুন ২০২৫

পাল্টা জবাব নাকি সমঝোতা—কোন পথ বেছে নেবে ইরান?

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন বলেছিলেনইরানের ওপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে তার ‘দুই সপ্তাহ সময় লাগবে’, তখন অনেকেই ধারণা করেছিলেন যুদ্ধ হয়তো এখনই নয়। কিন্তু বাস্তবে মাত্র তিন দিনের মাথায় যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছেএই হামলার প্রস্তুতি কি আগে থেকেই নেওয়া ছিল?

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র অনেক আগেই মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল। অঞ্চলজুড়ে থাকা ১৯টি সামরিক ঘাঁটি ও রণতরী আগে থেকেই মোতায়েন ছিল। ইসরায়েলের হামলার পরপরই কাতার থেকে মার্কিন আকাশযান এবং বাহরাইন থেকে নিমিৎজ রণতরী সরিয়ে আনা হয় নিরাপদ স্থানে। সবই ছিল পূর্বপরিকল্পিত।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এই হামলা নিয়ে রাজনৈতিক বিভাজন স্পষ্ট। ডেমোক্র্যাটরা অভিযোগ তুলেছে, কংগ্রেসীয় কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই ট্রাম্প এককভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা ‘অসাংবিধানিক’ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। যদিও রিপাবলিকানরা ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে সমর্থন দিয়েছেন। আর মিত্র ইসরায়েল তো খুশি বলাই বাহুল্য।

অনেকেই ধারণা করছেন, এই হামলা হতে পারে ইসরায়েলকে খুশি রাখতে একটি সীমিত বা এককালীন অভিযান। তবে সেটিই যদি হয়, তবে হয়তো বড় ধরনের যুদ্ধ এড়ানো সম্ভব হবে।

ট্রাম্প এরই মধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেনইরান যদি পাল্টা আঘাত হানে, তবে যুক্তরাষ্ট্র হামলার পরিধি আরও বড় করবে। এ অবস্থায় বিশ্বজুড়ে প্রশ্নইরান কি প্রতিশোধের পথ নেবে, নাকি সমঝোতার সুরে ফিরে আসবে?

বিশ্লেষকদের মতে, বল এখন ইরানের কোর্টে। তারা কী সিদ্ধান্ত নেবে তা নির্ধারণ করে দেবে এই সংঘাত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে।

ইরান ইতোমধ্যেই স্বীকার করেছে, তাদের পরমাণু স্থাপনাগুলোর ওপর বিমান হামলা হয়েছে। তবে তারা বলছে, আগেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তেহরান দাবি করছে, গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি অনেক আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

ইরান জানিয়ে দিয়েছেএখন থেকে সামরিক-বেসামরিক নির্বিশেষে সকল মার্কিন উপস্থিতিই তাদের বৈধ টার্গেট। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের কমপক্ষে ৫০০ সেনা ইরানের রেঞ্জের মধ্যেই রয়েছে, বলে জানিয়েছে ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন।

ইরান কতটা প্রতিশোধ নিতে পারবে, তা এখন সময়ই বলে দেবে। তবে একে শুধু শুরু বলেই ধরে নিচ্ছেন বিশ্লেষকেরা। যদি ইরান আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখায়, তবে মার্কিন অভিযানের মাত্রা বাড়বেএটি ট্রাম্প নিজেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন।

বিশ্বের সামনে এখন একটি কঠিন বাস্তবতাএই সংঘাত যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তবে গোটা মধ্যপ্রাচ্য ভয়াবহ অস্থিতিশীলতায় পড়বে। ইতোমধ্যেই পরিস্থিতি যেভাবে উত্তপ্ত, তাতে আরও খারাপের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=khI9vIrfvY8

রাকিব

×