
ছবি: সংগৃহীত।
ইরানে ইসরায়েলি হামলার পর নতুন এক যুদ্ধ-রাজনীতির পথ রচনা করছে তেলআবিব। যুদ্ধকে বৈধতা দিতে একের পর এক ব্যাখ্যা ও ন্যারেটিভ দাঁড় করানো হচ্ছে—কখনো আত্মরক্ষার যুক্তি, কখনো ইরানের শাসনব্যবস্থা উৎখাতের হুমকি।
সর্বশেষ ইসরায়েলের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সরাসরি তেহরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতাকে হত্যার হুমকি দিয়ে পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করে তুলেছেন।
এই উত্তপ্ত প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে—ইসরায়েলের পরবর্তী টার্গেট কি পবিত্র আল আকসা মসজিদ?
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, ইসরায়েল হয়তো এমন একটি ‘ফলস ফ্ল্যাগ’ (কৃত্রিম হামলা) পরিকল্পনা করতে পারে, যাতে আল আকসায় হামলা চালিয়ে দায় চাপানো হয় ইরানের ওপর।
তুর্কি বিশ্লেষক জাহিদে তুবা কোর বলেন, “এ মুহূর্তটা ইসরায়েলের জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক। মোসাদের মাধ্যমে ইরান থেকে আল আকসায় ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হলে, দায় তারা সহজেই ইরানের ঘাড়ে চাপাতে পারবে।”
তিনি আরও বলেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি নেতাদের বক্তব্যে ধর্মীয় ও বাইবেল ভিত্তিক ভাষ্য যেভাবে প্রবল হয়েছে, তাতে গাজায় তাদের অভিযানকে আর শুধু কৌশলগত বলা যায় না—এটি ধর্মীয় মিশনেও পরিণত হয়েছে।
যদিও আল আকসা মসজিদ তেলআবিব থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে, তবুও সামরিক দিক থেকে তা ঝুঁকিপূর্ণ দূরত্বে অবস্থিত। যুদ্ধের ধোঁয়াশার মধ্যে এমন এক হামলা ইসরায়েলের জন্য কৌশলগতভাবে লাভজনক হতে পারে—একদিকে মুসলিম বিশ্বের ক্ষোভকে ঘুরিয়ে দেওয়া যাবে ইরানের দিকে, অন্যদিকে নিজেরা এগোতে পারবে ধর্মীয় উপাসনালয় নির্মাণের পথে।
এমনকি এক ভাইরাল ভিডিওতে কট্টর ইহুদি ধর্মীয় নেতা রাবাই ইউসেফ মিজরাচিকে বলতে শোনা যায়, “আমি হলে আল আকসায় বোমা ফেলতাম, আর দায় দিতাম ইরানের ওপর।”
আল আকসা ঘিরে ইসরায়েলের আগ্রহ নতুন কিছু নয়। দীর্ঘদিন ধরেই ‘টেম্পল মাউন্ট মুভমেন্ট’ নামে একটি চরমপন্থী উদ্যোগকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছে ইসরায়েলি প্রশাসন। এই আন্দোলনের লক্ষ্য—আল আকসা এবং ডোম অব দ্য রক ধ্বংস করে সেখানে একটি ইহুদি উপাসনালয় গড়ে তোলা।
এই প্রেক্ষাপটে আশঙ্কা বাড়ছে—ইসরায়েল কি সত্যিই এক ভয়ঙ্কর পরিকল্পনার দিকে এগোচ্ছে? আল আকসাকে কেন্দ্র করে এমন কোনো হামলা শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা মুসলিম বিশ্বেই এক বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে।
প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে—বিশ্ব কি সেই ঝড় সামাল দিতে প্রস্তুত?
সূত্র: TRT World
নুসরাত