ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েল সরাসরি ও পরিকল্পিতভাবে ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীদের হত্যার মাধ্যমে দেশটির পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংসের চেষ্টা চালাচ্ছে। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে এই সামরিক অভিযানে কমপক্ষে ১৪ জন শীর্ষ বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন।
এই বিজ্ঞানীদের মধ্যে রয়েছেন—ইরানের ইসলামী আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ও তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী মোহাম্মদ মাহদি তেহরানচি এবং ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার সাবেক প্রধান ও নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ার ফেরেইদুন আব্বাসি-দাভানি।
এই হত্যা অভিযান অতীতের থেকে কিছু দিক দিয়ে আলাদা। সাধারণত এমন হত্যাকাণ্ড গোপনে হয়, কিন্তু এবার ইসরায়েল সরাসরি দায় স্বীকার করেছে। একইসাথে বিজ্ঞানীদের হত্যার পাশাপাশি সামরিক স্থাপনা, এয়ার ডিফেন্স ও শক্তি অবকাঠামোতেও হামলা চালানো হয়েছে।
বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকেই পরমাণু বিজ্ঞানীদের টার্গেট করা হয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য এমনকি ইসরায়েল—সবাই এই কৌশল প্রয়োগ করেছে। ২০০৭ সাল থেকে ২০২৫ সালের আগ পর্যন্ত ইরানি নিউক্লিয়ার প্রোগ্রামে যুক্ত ১০ বিজ্ঞানী হত্যা করা হয়েছিল।
মোসাদ এর আগেও এক ইতালীয় প্রকৌশলী মারিও ফিওরেল্লির বাড়িতে বোমা হামলা চালিয়েছিল, কারণ তিনি ইরাকের পরমাণু প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন।
কেন বিজ্ঞানীদের হত্যা করছে ইসরায়েল?
ইসরায়েল বিশ্বাস করে, বিজ্ঞানীদের হত্যা করলে পরমাণু জ্ঞান এবং প্রযুক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর ফলে ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরি কঠিন হবে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে—এই হামলা ছিল ইরানের গণবিধ্বংসী অস্ত্র তৈরির সক্ষমতায় "একটি বড় ধাক্কা"।
কিন্তু গবেষকরা বলছেন, এই কৌশল সবসময় কার্যকর হয় না। একজন বিজ্ঞানীকে হত্যা করলেও হাজারো বিজ্ঞানী থেকে যায়। বরং এই হত্যাকাণ্ড ইরানে জাতীয় ঐক্য বাড়াতে পারে এবং পরমাণু কর্মসূচি আরও জোরালো হতে পারে।
ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রকে পরমাণু চুক্তি থেকে সরিয়ে নেন। দ্বিতীয় মেয়াদে আলোচনার চেষ্টা করলেও কোনো চুক্তি হয়নি। এই অবস্থায় ইরান ৬০% ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণে এগিয়েছে—যা অস্ত্র তৈরি থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে।
পরিস্থিতি যখন এতটাই উত্তপ্ত, তখন বিজ্ঞানীদের সরাসরি হত্যা একটি বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত তৈরি করছে।
মুমু ২
