
ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধ সংক্রান্ত মন্তব্যে নতুন করে বিতর্ক ছড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। কখনো বলছেন, "শান্তি আসছে খুব শিগগিরই", আবার পরক্ষণেই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনিকে হত্যার ইঙ্গিত দিচ্ছেন। ফলে প্রশ্ন উঠছে—এই যুদ্ধের সিদ্ধান্ত একাই কি নিতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট?
মার্কিন সংবিধানের প্রথম ধারা অনুযায়ী, যুদ্ধ ঘোষণার ক্ষমতা রয়েছে কংগ্রেসের হাতে। কিন্তু বাস্তবে দ্বিতীয় ধারা অনুযায়ী প্রেসিডেন্টই যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক।
তবে ১৯৭৩ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধের পরে কংগ্রেস পাশ করে "War Powers Resolution"—একটি আইন যা প্রেসিডেন্টের যুদ্ধ ক্ষমতায় সীমা টানতে চায়।
ওয়্যার পাওয়ার্স অ্যাক্ট কী বলে?
এই আইনের আওতায়—
* প্রেসিডেন্টকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কংগ্রেসকে জানাতে হবে কোনো সামরিক অভিযান চালালে।
* যুদ্ধের অনুমোদন ছাড়া ৬০ দিনের বেশি সেনা মোতায়েন রাখা যাবে না।
* প্রয়োজনে কংগ্রেস যুদ্ধ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তবে তার জন্য দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোট দরকার।
কেন এই আইন আজ আবার আলোচনায়?
ইসরায়েলের বোমা বর্ষণের পর ট্রাম্প বলেছেন, “আমরা এখন ইরানের আকাশ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি।” এতে ধারণা করা হচ্ছে—যুক্তরাষ্ট্র হয়ত সরাসরি যুদ্ধে জড়াতে যাচ্ছে।
এ অবস্থায় ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান কয়েকজন আইনপ্রণেতা নতুন বিল পেশ করেছেন—যেখানে বলা হয়েছে, ইরানে হামলা চালাতে কংগ্রেসের অনুমতি লাগবে।
ইতিহাস কী বলে?
যুক্তরাষ্ট্র শেষবার আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল ১৯৪২ সালে। এরপর কোরিয়া, ভিয়েতনাম, ইরাক, আফগানিস্তান—সব যুদ্ধেই প্রেসিডেন্ট একক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন "AUMF" নামে বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করে।
২০০১ ও ২০০২ সালের দুটি AUMF আইন এখনো চালু আছে, যার ভিত্তিতে ট্রাম্প ২০২০ সালে ইরানি জেনারেল সোলাইমানিকে হত্যার নির্দেশ দেন।
বর্তমানে কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের আধিপত্য থাকায় যুদ্ধবিরোধী প্রস্তাবগুলো পাস হওয়ার সম্ভাবনা কম। আবার প্রেসিডেন্টের ভেটো ঠেকাতে দরকার দুই-তৃতীয়াংশ ভোট, যা পাওয়া কঠিন।
এই আইন কি সত্যিই ট্রাম্পকে থামাতে পারবে?
আইনি কাঠামো থাকলেও বাস্তবে প্রেসিডেন্টরা আইন এড়িয়ে গেছেন অনেকবার। তাই ওয়্যার পাওয়ার্স অ্যাক্ট কার্যকরভাবে ট্রাম্পকে যুদ্ধ থেকে বিরত রাখতে পারবে কিনা—তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
মুমু ২